সন্ধ্যা নেমেছে। আলো নেই। অন্ধকারে ডুবে রয়েছে পাড়ার গলি। এমন অবস্থার সঙ্গে পরিচিত শহরের মানুষ। এই পরিস্থিতির এ বার আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে বিধাননগরে। যেখানে পাড়ার রাস্তা তো বটেই, অলি-গলিতেও আলো খারাপ হলে তার খবর নিমেষে পৌঁছে যাবে পুরনিগমে। আর সঙ্গে সঙ্গেই নেওয়া হবে ব্যবস্থাও। ফলে বিধাননগর পুর-এলাকাকে আর আঁধারের গ্রাসে পড়তে হবে না বলেই দাবি পুর নিগম কর্তৃপক্ষের।
নতুন ওই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলো আমার আলো’। যে প্রকল্পের মূল বিশেষত্ব হল ‘স্মার্ট লাইটিং’। যার পরিচালন ব্যবস্থা অনলাইনে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হবে সল্টলেকে পুর নিগমের সদর দফতর থেকেই। আলোর সঙ্গে যুক্ত থাকবে বিশেষ ধরনের ‘চিপ’। যেটির ব্যবহারে আলো খারাপ হলেই তা পুর নিগমের নজরে পড়বে। ফলে রাস্তায় দিনের পর দিন আলো খারাপ হয়ে পড়ে থাকার মতো পরিস্থিতি আর হবে না বলেই আশ্বাস পুর-কর্তৃপক্ষের।
বিধাননগর পুরসভা ও রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা সংযোজিত হয়ে গত অক্টোবরে তৈরি হয় বিধাননগর পুরনিগম। এর মধ্যে সল্টলেক পরিকল্পিত শহর। তুলনায় অনেকটাই পরিকল্পনা বর্হিভূত ভাবে তৈরি রাজারহাট। সেখানকার সাধারণ আবাসিক এলাকার রাস্তায় ঠিকঠাক আলো জ্বললেও, প্রান্তিক এলাকার রাস্তা মাঝেমধ্যেই অন্ধকারে ডুবে থাকে বলে অভিযোগ। এ বার সেই সব জায়গাও সারা বছর আলোয় ঝলমল করবে বলেই দাবি পুরকর্তাদের। রাজ্যে তৃণমূলের সরকার আসার পরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঝলমলে আলোকসজ্জা রাস্তায় দেখা যায়। তবে সেই সব আলো মূলত সৌন্দর্যায়নের জন্য।
বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত জানান, সিএফএলের বদলে পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করা হবে এলইডি আলোর সাহায্যে। যার জেরে পুরনিগমের কিছুটা অর্থ সাশ্রয় হবে।
উল্লেখ্য, গ্রাহকের বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর নিমেষের মধ্যে পাওয়ার ব্যবস্থা বছরখানেক আগেই চালু করেছে সিইএসসি। তবে তা এখনও শহর জুড়ে সকলের বাড়িতে বসেনি।
পুর নিগমের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, এলাকায় আলোর ব্যবস্থার প্রায় খোলনলচে বদলে ফেলা হবে। এখন ওই পুর নিগম এলাকায় ২৫ হাজার বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। তাও বদলে ফেলা হবে। যে সব আলো বসানো হবে, সেগুলিতে টাইমার দেওয়া থাকবে। ফলে সন্ধ্যা থেকে শেষ রাত পর্যন্ত আলোর ঔজ্জ্বল্যেরও তারতম্য থাকবে।
আধিকারিকেরা জানান, এই ব্যবস্থায় রাস্তায় আলোর উজ্জ্বলতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিগমের বিদ্যুতের বিলের খরচও এক ধাক্কায় প্রায় অর্ধেক কমে যাবে। এক আধিকারিক জানান, এই মুহূর্তে নিগমকে বছরে ১৮ কোটি টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে হয়। সেই খরচ ৯ থেকে ১০ কোটিতে নেমে আসবে। একই সঙ্গে এই ব্যবস্থা চালু করতে নিগম এলাকায় ১৩০ কোটি টাকা লগ্নি আসবে বলেই দাবি পুরকর্তাদের।
কেন্দ্রের স্মার্ট সিটি প্রকল্পে এ পর্যন্ত ঠাঁই হয়নি বিধাননগরের। দ্বিতীয় দফায় পার্শ্ববর্তী উপনগরী নিউ টাউন স্মার্ট সিটি প্রকল্পে জায়গা করে নিয়েছে। যদিও বিধাননগরের পুর-কর্তৃপক্ষ তাতে দমে যেতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, স্মার্ট সিটি প্রকল্পের টাকা পেলে ভাল। না হলেও পিপিপি মডেলে ‘স্মার্ট লাইটিং’ প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে এই এলাকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy