প্রতীকী ছবি।
একই সময়ের জন্য কর দিতে হবে দু-দু’বার!
এমনটাই ঘটতে চলেছে বিধাননগর পুর এলাকায়। সম্প্রতি বিধাননগর পুর নিগম রাজারহাট-গোপালপুর অংশে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বকেয়া সম্পত্তিকর মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠিয়েছে করদাতাদের। কিন্তু ওই করদাতাদের অভিযোগ, যে সময়ের কর বকেয়া রয়েছে বলে বলা হচ্ছে, তা তাঁরা মিটিয়ে দিয়েছেন। আর এখানেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
রাজারহাট-গোপালপুরের করদাতাদের একাংশের দাবি, সাবেক ওই পুরসভা আবাসিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে করের কিছু অংশ মকুব করেছিল। মকুবের পরিমাণ বাদ দিয়ে তাঁরা বাকি কর মিটিয়েছেন। কিন্তু বিধাননগর পুর নিগমের অভিযোগ, কর মকুব করা হয়েছিল নিয়ম বহির্ভূত ভাবে। ফলে যে পরিমাণ কর দেওয়া বাকি, তা মিটিয়ে দেওয়ারই নোটিস পাঠানো হচ্ছে। যদিও করদাতাদের পাল্টা প্রশ্ন, কর মকুব করেছিল রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা। তা নিয়ম মেনে করা হয়েছিল না হয়নি, সেই দায় তাঁরা নেবেন কেন? কেনই বা তাঁরা একই সময়ের জন্য দু’বার
কর দেবেন?
পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সম্পত্তিকরের ক্ষেত্রে বঙ্গীয় পুর আইন মোতাবেক কর মকুবের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। মকুব করতে হলে প্রতিটি নিয়মের যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা থাকা দরকার। কিন্তু সাবেক রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মকুব করা করের পরিমাণ কিছু ক্ষেত্রে ‘অস্বাভাবিক’ বেশি।
রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার এখন অস্তিত্ব নেই। সেই এলাকা এখন বিধাননগর পুর নিগমের আওতায়। বর্তমান পুর বোর্ডের অভিযোগ, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সম্পত্তিকর মকুব করায় বহু কোটি টাকা রাজস্ব জমা পড়েনি। সে জন্য যাঁদের কর মকুব করা হয়েছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করে নোটিস পাঠাচ্ছে পুরসভা। সূত্রের খবর, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ২৬৮টি ক্ষেত্রে ‘অস্বাভাবিক’ কর মকুব করা হয়েছে।
মেয়র সব্যসাচী দত্ত জানান, ২০০৫ সালে মূল্যায়ন পর্ষদ রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকায় সম্পত্তিকরের মূল্যায়ন করেছিল। সেই অনুযায়ী কর আদায় হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ থেকে বহু ক্ষেত্রে যত টাকা কর মকুব করা হয়েছে, তার পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। পুরকর্তারাই ইঙ্গিত দিয়েছেন, আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিলিয়ে বকেয়া করের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা হতে পারে।
যদিও এ ব্যাপারে সাবেক রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধাননগর পুর নিগমের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তিনি আগেই বলেছিলেন, ‘‘কতটা কর কেন মকুব করা হয়েছিল, নথি না দেখে বলা সম্ভব নয়। সাবেক ওই পুরসভায় রিভিউ কমিটিও ছিল। বর্তমান পুরবোর্ড বিষয়টি দেখছেন। আইন আইনের পথেই চলবে।’’
করদাতাদের একাংশের কথায়, করের মূল্যায়ন ঠিক হয়েছিল না হয়নি, সেই দায় প্রশাসনের। এখন তিন বছরের টাকা দিতে হিমশিম খেতে হবে তাঁদের। যদিও পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আইন মোতাবেক কর আদায়ের কাজ চলবে। তবে বাসিন্দাদের যাতে দুর্ভোগ না হয়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হবে।
নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কর মকুব করার যে অভিযোগ তুলছে বিধাননগর পুর নিগম, তার কি আদৌ তদন্ত হবে? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy