Advertisement
E-Paper

সল্টলেকে গাছ লাগাতে উদ্যোগী হচ্ছে পুর নিগম

বাসিন্দাদের মতে, একদা সল্টলেকের মূল সৌন্দর্যই ছিল তার প্রাকৃতিক শোভা। রকমারি গাছগাছালিতে ভরা ছিল সল্টলেক।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৪
নগরোন্নয়নকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে অসংখ্য গাছ কাটা পড়েছে সল্টলেকে। ছবি: সংগৃহীত।

নগরোন্নয়নকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে অসংখ্য গাছ কাটা পড়েছে সল্টলেকে। ছবি: সংগৃহীত।

জন্মের শংসাপত্র নিতে গেলে বিনামূল্যে মিলবে মেহগনি গাছের চারা। বনসৃজনে এমনই একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিচ্ছে বিধাননগর পুর নিগম। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, নগরোন্নয়নকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে অসংখ্য গাছ কাটা পড়েছে সল্টলেকে। অথচ তার বদলে গাছ লাগানোর পরিমাণ তুলনায় কম। এমনকি, পুরনো গাছের রক্ষণাবেক্ষণ অথবা সেই সব গাছ রক্ষার দিকেও হুঁশ নেই
পুর নিগমের। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। পুর নিগমের দাবি, বনসৃজনের দিকে লক্ষ্য রেখে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বাসিন্দাদের মতে, একদা সল্টলেকের মূল সৌন্দর্যই ছিল তার প্রাকৃতিক শোভা। রকমারি গাছগাছালিতে ভরা ছিল সল্টলেক। বিশেষত খালপাড় এলাকা, ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল পাড় এলাকা থেকে শুরু করে সল্টলেকের প্রাণকেন্দ্র সেন্ট্রাল পার্ক এলাকা— সবুজায়ন ছিল সর্বত্রই। ১ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা পরিমল মজুমদারের আক্ষেপ, ‘‘লালকুঠি আইল্যান্ড বলতেই মনে পড়ে জাল দিয়ে ঘেরা গোলাকার জায়গায় গাছগাছালি আর পাখির রকমারি স্বরের গুঞ্জন। বিকেল হলেই আইল্যান্ডের চার দিকে ভিড় করতেন বাসিন্দারা। আজ সেখানে হাতে গোনা কয়েকটি গাছ মাত্র।’’
চিংড়িঘাটা-বাইপাস মোড় থেকে সল্টলেকের ২ এবং ৩ নম্বর সেক্টরের পাশ ধরে বয়ে চলা ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল পাড়ে ছিল পরপর নারকেল গাছ। সৌন্দর্যায়ন থেকে শুরু করে একাধিক প্রকল্পের
‘সৌজন্যে’ যা বর্তমানে অবাধে কাটা পড়েছে বলে অভিযোগ।

সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে সল্টলেকে অসংখ্য গাছ লাগানো হয়েছে— বিধাননগর পুর নিগমের এই দাবি নস্যাৎ করে বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে, সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তার বুলেভার্ডে ছোট এবং মাঝারি উচ্চতার গাছ লাগানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেটুকু ছাড়া অন্যত্র গাছ লাগানোর কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি। যত গাছ কাটা হয়েছে, তার তুলনায় বৃক্ষরোপণের সংখ্যা
অনেকটাই কম বলে দাবি সল্টলেকবাসীর একাংশের। পুরনো গাছগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও সে ভাবে নজর দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যার ফলে গত কয়েক বছরে ঝড়ে অনেক গাছ পড়ে গিয়েছে। এমনকি, ঘটা করে পরিবেশ দিবস পালন করা হলেও সল্টলেকের পরিবেশ রক্ষায় স্থায়ী কোনও পদক্ষেপ প্রশাসনের তরফে দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা।

বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি (মণ্ডল) অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, পুর নিগম পরিবেশকে রক্ষা করতে সদা তৎপর রয়েছে। তবে পরিকাঠামোর আরও উন্নতির প্রয়োজন। তাই নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। প্রশাসনের একাংশের মতে, সল্টলেক তৈরির সময় পরিকল্পনার অভাব ছিল। ফলে যত্রতত্র গাছ লাগানো হয়েছিল। সেই সব গাছের শিকড়ের নীচ দিয়েই গিয়েছে পয়ঃপ্রণালী নালা এবং নিকাশি নালা। ফলে অনেক জায়গায় ওই গাছ জল সরবরাহের পাইপলাইনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

নগরোন্নয়ন থেমে থাকে না। থেমে যাকে না উন্নয়নও। তা-ও পরিবেশের স্বার্থে পরিকল্পনা করেই গাছ লাগানো হচ্ছে বলে পুরসভার দাবি। কিন্তু তার পরিমাপ কি? তার কোনও হিসেব রয়েছে কোনও স্তরে? বিধাননগর পুর নিগমের পরিবেশ দফতরের তরফে অবশ্য এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।

Salt Lake Bidhannagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy