Advertisement
E-Paper

পড়া করেই আসতে হবে ক্লাসে, উদ্যোগী শিক্ষকেরা   

এ বার থেকে প্রতিদিন পড়াশোনা করে ক্লাসে আসতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এমনই নিয়ম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ।

মধুমিতা দত্ত ও সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৪

এ বার থেকে প্রতিদিন পড়াশোনা করে ক্লাসে আসতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এমনই নিয়ম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ।

বিদেশে এমনকি, দেশেরও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের আগে পড়ুয়াদের পাঠ্যসূচি দেওয়ার চল আছে। এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগেও সেই নিয়ম চালুর ভাবনা শুরু হয়েছে। পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট ক্লাসের আগে বিশেষ ওয়েবসাইটে প্রতিদিনের পাঠ্য দিয়ে দেওয়া হবে।

তার ভিত্তিতেই পড়াশোনা করে আসতে হবে পড়ুয়াদের।

পুরনো পদ্ধতিতে ক্লাসে এসে পড়ুয়ারা জানতে পারতেন, কী পড়ানো হচ্ছে। শিক্ষকদের যুক্তি, বিষয়টি সম্পর্কে একটুও জানা না থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্লাসের সংক্ষিপ্ত সময়ে পড়া বুঝতে অসুবিধে হয় পড়ুয়াদের। যার জেরে ধীরে ধীরে হারাতে পারে আগ্রহ। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাঠ্যসূচি দেখে যদি পড়ুয়ারা আগে থেকে একটু প্রস্তুত হয়ে নেন ক্লাসের আগে, তা হলে তাঁরা ক্লাসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ পান। এর ফলে পঠনপাঠন অনেকটা আকর্ষণীয় হয়ে ওঠার সুযোগ থাকে। ক্লাসে শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেন পড়ুয়ারা। পড়া বোঝার জন্য গৃহশিক্ষকের প্রয়োজনও কমতে পারে এই পদ্ধতিতে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক শৌভিক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিবিসিএস চালু হওয়ার পরে এই পদ্ধতি খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। অল্প সময়ে পড়ুয়াদের কাছে পঠনপাঠন যেন আকর্ষণীয় হয় এবং তাঁরা যেন বিষয়টি দ্রুত বুঝতে পারেন, তাই জন্যই এই ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।’’ তিনি জানান, ওয়েবসাইটে স্টাডি মেটেরিয়াল পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র ওই বিভাগের পড়ুয়ারা লগ ইন করতে পারবেন। অন্য কেউ সেই সব স্টাডি মেটেরিয়াল দেখতে পারবেন না। নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দিয়েই সাইটে ঢুকে দেখতে হবে। প্রতিদিন ক্লাসে আসার আগে সেটা পড়ে নেবেন পড়ুয়ারা। ক্লাসে আলোচনার মাধ্যমে সেই বিষয়ে মত বিনিময় করবেন শিক্ষক ও পড়ুয়ারা।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের শিক্ষক অভিজিৎ কুন্ডু জানালেন, তিনি এবং বেশ কয়েক জন শিক্ষক ক্লাসের আগেই ‘স্টাডি মেটেরিয়াল’ পড়ুয়াদের ই-মেল করে দেন। যাতে পড়ুয়ারা ক্লাসে সে দিনের পাঠ্য বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে আসেন। অভিজিৎবাবুর মতে, ‘‘এতে পড়ুয়াদের বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হয়। শিক্ষকের সঙ্গে পড়ুয়াদের মধ্যে ভাবনার আদানপ্রদান হয়।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষিকা নীলাঞ্জনা গুপ্ত বলেন, ‘‘সিমেস্টার শুরুর প্রথমেই আমরা সমস্ত পাঠ্যসূচি দিয়ে দিই।’’ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের শিক্ষক শৌভিক মণ্ডল বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে কোনও নিয়ম ঠিক করে দেয়নি। কিন্তু তিনি-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষক ওই পদ্ধতিতেই পড়ান। অর্থাৎ, আগে থেকে পড়ুয়াদের স্টাডি মেটেরিয়াল দিয়ে দেওয়া হয়।

বারাসতের পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরী জানান, তাঁরা বেশ কিছু বিষয়ে আগে থেকেই পাঠ্যক্রম এবং মডেল প্রশ্নপত্র পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্টাডি মেটেরিয়ালও বেশ কিছু শিক্ষক আগে থেকে দিয়ে দিচ্ছেন। তবে এটাকে বাধ্যতামূলক করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’’

Student Calcutta University Initiative Teacher History Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy