Advertisement
E-Paper

ভোটের ফাঁদে রোগীর গাড়ি

রায়না থেকে কলকাতার বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারে স্ক্যান করাতে এসেছিলেন লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত সাধনা দাঁ। কিন্তু তা করাতে এসে যে এমন পুলিশি ফাঁদে পড়তে হবে, তা ভাবতেও পারেননি তিনি ও তাঁর পরিজনেরা! সোমবার যে ভাড়া করা গাড়িটিতে তাঁরা কলকাতায় আসেন, ভোটের ডিউটিতে সেটিকেই আটকে দেয় পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫৩
অ্যাম্বুল্যান্সে বর্ধমান ফিরছেন ক্যানসার আক্রান্ত সাধনা দাঁ। সোমবার রাতে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

অ্যাম্বুল্যান্সে বর্ধমান ফিরছেন ক্যানসার আক্রান্ত সাধনা দাঁ। সোমবার রাতে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

রায়না থেকে কলকাতার বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারে স্ক্যান করাতে এসেছিলেন লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত সাধনা দাঁ। কিন্তু তা করাতে এসে যে এমন পুলিশি ফাঁদে পড়তে হবে, তা ভাবতেও পারেননি তিনি ও তাঁর পরিজনেরা! সোমবার যে ভাড়া করা গাড়িটিতে তাঁরা কলকাতায় আসেন, ভোটের ডিউটিতে সেটিকেই আটকে দেয় পুলিশ। দিনভর হয়রানি চলাকালীন হাজরা রো়ডের উপর ফুটপাথেই বসে থাকতে হয়েছে গুরুতর অসুস্থ সাধনাদেবীকে। শেষমেশ আট ঘণ্টার চেষ্টায় কোনও ভাবে একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায় পরিবার।

কিন্তু রোগী আছে দেখেও কেন গাড়িটিকে ভোটের কাজে আটকে দিল পুলিশ? রাত পর্যন্ত তার সদুত্তর মেলেনি।

সাধনাদেবীর পরিবার জানায়, রায়নার বেরুল গ্রামের বাসিন্দা সাধনাদেবীকে কলকাতায় নিয়ে আসতে একটি মারুতি ভ্যান ভাড়া করেছিলেন তাঁর স্বামী রামপ্রসাদ দাঁ। সকাল ৯টা নাগাদ বিদ্যাসাগর সেতু পেরিয়ে কলকাতায় ঢুকতেই পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের সামনে গাড়িটিকে দাঁড় করায় পুলিশ। চালক অরূপ মালিককে বলা হয়, ভোটের ডিউটির জন্য গাড়ি নেওয়া হবে। থাকতে হবে চালককেও। অরূপবাবু পুলিশকর্মীদের বলেন, রোগী নিয়ে কলকাতায় এসেছেন। রোগীকে ফিরিয়েও নিয়ে যেতে হবে।

অরূপবাবুর দাবি, এর পরে পুলিশকর্মীরা তাঁর গাড়ির নথি নিয়ে নেন। বলেন, রোগীকে নামিয়ে আসুন। নথি দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, দক্ষিণ কলকাতার প্যাথলজি সেন্টারে রোগীকে পৌঁছে দিয়ে তিনি নথি ফেরত নিতে গেলে গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত হয়। বহু অনুরোধেও সুরাহা হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় তাঁকে।

এ দিকে স্ক্যানের পরে দুপুর থেকে ভাড়া গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন সাধনাদেবী ও তাঁর পরিবার। গাড়ি আসেনি। শেষে চালকের কাছে সব শুনে অ্যাম্বুল্যান্স খোঁজা শুরু করেন তাঁরা। রায়না যেতে অ্যাম্বুল্যান্সও মেলেনি। ঘণ্টা আটেক পরে কলকাতার এক পরিচিতের সূত্রে একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা।

ভোটের জন্য গাড়ি নেওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু রোগীকে নিয়ে যাওয়া গাড়িকে কেন আটকানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘মানবিক কারণে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল। কেন তা হল না খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বিষয়টি জেনেই গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গাড়ি ফেরত নিতে ওই চালককে বিদ্যাসাগর ট্রাফিক গার্ডে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু চালক সেখানে যাননি। গাড়িচালক অরূপবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমার কাছে কলকাতায় থাকার টাকা ছিল না। তার উপরে সারা দিন যে ভাবে হেনস্থা হয়েছি, তাতে আর যেতে ভরসাও পাইনি।’’

voting duty cancer patient suffering suffered car captured police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy