Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Howrah

পরিষেবা বেহাল, নরকের পরিবেশ হাওড়ার ধাড়সায়

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় সারা বছরই জল জমে থাকে। তার জন্য তৈরি হয় বড় বড় গর্ত। জলে ভরা গর্ত মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে ওঠে মাঝেমধ্যেই।

গড়িমসি: আমপানে হেলে পড়া বিদ্যুৎস্তম্ভ সারানোর বদলে ধরে রাখা হয়েছে বাঁশের ঠেকনা দিয়ে। হাওড়ার ধাড়সায়। নিজস্ব চিত্র

গড়িমসি: আমপানে হেলে পড়া বিদ্যুৎস্তম্ভ সারানোর বদলে ধরে রাখা হয়েছে বাঁশের ঠেকনা দিয়ে। হাওড়ার ধাড়সায়। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৩
Share: Save:

আবর্জনায় দূষিত হয়ে ওঠা পুকুরে মাছ মরে ভেসে উঠেছে। দুর্গন্ধে টেকা দায়। এলাকার গুরুত্বর্পূণ রাস্তায় গত ১৫ দিন ধরে পাঁকজল জমে রয়েছে। দীর্ঘদিন ওই রাস্তার কোনও সংস্কার না হওয়ায় জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্ত। তারই পাশের একটি রাস্তায় আমপানের পরে বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইনের একটি স্তম্ভ বিপজ্জনক ভাবে রাস্তার দিকে হেলে থাকলেও তা আজ পর্যন্ত মেরামত হয়নি। ওই স্তম্ভটিকে কোনও রকমে বাঁশ দিয়ে ঠেকনা দিয়ে রেখেছেন বাসিন্দারা। যে কোনও মুহূর্তে বিপদের আশঙ্কায় বাসিন্দারাই বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন রাস্তাটি।

এটাই হল হাওড়া পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধাড়সা এলাকার বর্তমান ছবি। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে ২০১৫ সালে। তার পর থেকে ওই ওয়ার্ডের নির্বাচন তো হয়ইনি উপরন্তু গত দু’বছর ধরে খাস হাওড়া পুরসভারই কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই। ফলে ২০১৫ সালের পরে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে সার্বিক ভাবে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় জঞ্জাল ফেলার ভ্যাট না থাকায় ধাড়সা চৌধুরীপাড়ার ওই পুকুরেই এলাকার সমস্ত আর্বজনা ফেলে চলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার সব নর্দমার জলও এসে পুকুরে মিশছে। জঞ্জাল, প্লাস্টিক, কচুরিপানায় কার্যত বুঝে গিয়েছে পুকুটির পাড় সংলগ্ন অংশ।

এলাকার বাসিন্দা শ্রীজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দূষণের জেরে প্রতিদিন প্রচুর রুই-কাতলা মরে গিয়ে পচে ভেসে উঠেছে। দুর্গন্ধে টেকা দায়। অন্যান্য ওয়ার্ডে পুকুর সংস্কার হলেও এত বড় জলাশয়টির সংস্কারে কোনও নজর দেয়নি প্রশাসন।’’

ওই পুকুরের পাশ দিয়ে কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং অ্যাকাডেমি হয়ে যে রাস্তাটি গিয়েছে সেটি রামরাজাতলা স্টেশন, মহিয়াড়ি রোড হয়ে হাওড়া-আমতা রোডে যাওয়ার সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় সারা বছরই জল জমে থাকে। তার জন্য তৈরি হয় বড় বড় গর্ত। জলে ভরা গর্ত মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে ওঠে মাঝেমধ্যেই। নিত্যদিন টোটো, মোটরবাইক, সাইকেল উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। জমা জলে মশারও বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে।

এলাকার বাসিন্দা পরমব্রত হাজরার অভিযোগ, ‘‘পুরসভা, পুলিশ প্রশাসনকে বহু বার জানানো সত্ত্বেও কেউ কর্ণপাত করেননি। এমনকি, আমপানের পরে হেলে যাওয়া একটি বিদ্যুৎস্তম্ভ না সারানোয় বহু দিন ধরে সংলগ্ন রাস্তাটি যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে রয়েছে। বার বার বলেও হুঁশ ফেরেনি পুরসভা বা প্রশাসনের।’’

হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এলাকার দুরবস্থার কথা জানার পরেই পুরসভার নিকাশি দফতরের লোকজনকে এলাকায় যেতে বলা হয়েছে। রাস্তা মেরামতির ব্যাপারে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। বিদ্যুৎস্তম্ভ মেরামতির জন্য স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডকে খবর দেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE