সাম্প্রতিক কালে কলেজ রাজনীতিতে বারবার রক্ত ঝরতে দেখেছে রাজ্য। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠার দিনটিও তার ব্যতিক্রম হল না। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় আসার সময়েও একটি কলেজের টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর কত জন বাসে উঠবেন, তা নিয়ে মারামারি হয়। পরে সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমার কাজই তোমার পরিচয়। মানুষের মতো মানুষ হও। ভাল কাজের কোনও বিকল্প হয় না।’’ এর পরেও অবশ্য থামেনি লড়াই। সভা থেকে ফেরার পথে ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয় টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠী।
এ দিন সভায় আসার সময়ে আশুতোষ কলেজের টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর কত জন বাসে উঠবেন তা নিয়ে শুরু হয় মারামারি। অন্য এক ঘটনায় এ দিন ফের গোলমালে জড়িয়ে পড়েন মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের টিএমসিপি সমর্থকেরা। বাজনা বাজিয়ে মিছিল করে সভায় যাওয়ার পথে ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে একদফা সংঘর্ষ হয়। সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার পরেও মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে ফিরে ফের মারপিট হয় বলে অভিযোগ।
এ বছর কলেজে ছাত্র ভর্তিকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। পরে ধরাও পড়েন কয়েক জন। টিএমসিপি-র একাংশের অভিযোগ, এ দিন সাড়ে ১২টা নাগাদ সভায় যাওয়ার সময়ে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অভিযুক্তদের কয়েক জনকে মিছিলে দেখতে পেয়েই পথ আটকান টিএমসিপি-র অন্য গোষ্ঠী। এর থেকেই গোলমালের সূত্রপাত।
ওই পরিস্থিতিতে দু’দিকে পরপর গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। তখন উত্তর থেকে আসা বিভিন্ন মিছিলের সদস্যেরাও যোগ দেন গোলমালে। অভিযুক্তদের ঘিরে ধরে মারধরের অভিযোগও ওঠে। মারপিট করতে গিয়ে অনেকে রাস্তায় পড়ে যান। কোনও মতে সেই সময়ে গোলমাল থামানো হয়। পরে সভা থেকে ফিরে মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সামনে মারামারি হয়।
টিএমসিপি-র এক নেতা জানান, অভিযুক্তদের মিছিলে দেখা গেলে বিতর্ক উঠতে পারে, তাই তাঁদের মিছিলে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা শোনেননি। ওই ঘটনার সময়ে উপস্থিত উত্তর কলকাতার টিএমসিপি-র সভাপতি বিশ্বজিৎ দে বলেন, ‘‘উত্তর কলকাতা থেকে অনেক বড় মিছিল গিয়েছে। কে কোথায় ছিল জানি না। দুর্নীতির কোনও জায়গা দলে নেই।’’ কিন্তু দুর্নীতিতে জড়িতদের মারধর করে আইন হাতে নেওয়ার অধিকার কি রয়েছে? এর উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি বিশ্বজিতের কাছ থেকে।
তৃণমূলের অন্দরের বক্তব্য, প্রতিটি কলেজই নিয়ন্ত্রিত হয় স্থানীয় নেতাদের দ্বারা। উপর তলা থেকে কী বলা হচ্ছে, সেটা মেনে চলার দায় রয়েছে বলে এঁরা মনে করেন না। এ দিন টিএমসিপি-র নেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘দল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। কারও স্বার্থসিদ্ধি করার জায়গাও নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মেনে চলা আমাদের কর্তব্য। যারা তা করবেন না, তাঁরা ভুল করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy