E-Paper

পুজো ঘিরে বেলেঘাটায় দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর

কলকাতা পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বেলেঘাটা মেন রোডের ৯৫ নম্বর বস্তিতে মঙ্গলবার রাতে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। স্থানীয় একটি মন্দিরে একসঙ্গে পাঁচ দেবতার পুজো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫৯
An image of clashes and vandalism in Beleghata for performing a  Pujo

ধুন্ধুমার: গোলমালের পরে বেলেঘাটার ৯৫ নম্বর বস্তিতে ইতিউতি পড়ে ভাঙা চেয়ার। বসেছে পুলিশি পাহারাও। বুধবার।  ছবি: রণজিৎ নন্দী।

একটি পুজোকে কেন্দ্র করে দু’টি বস্তির মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ধুন্ধুমার বেধে গেল বেলেঘাটা মেন রোডের একাংশে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে। এলাকার মহিলা, বয়স্ক-সহ অন্তত আট জন ওই গোলমালে আহত হয়েছেন বলে খবর। আহতদের মধ্যে দুই পুলিশকর্মীও রয়েছেন। প্রত্যেককেই এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বেলেঘাটা এবং ফুলবাগান থানার পুলিশ। ছ’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও বুধবার সকালে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে এ দিন ওই বস্তির সামনে পথ অবরোধও হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বেলেঘাটা মেন রোডের ৯৫ নম্বর বস্তিতে মঙ্গলবার রাতে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। স্থানীয় একটি মন্দিরে একসঙ্গে পাঁচ দেবতার পুজো হয়। সেই উপলক্ষে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল এলাকা। গলির মুখে লাগানো হয়েছিল ফুলের গেট। সাউন্ড বক্স বাজিয়ে রাত পর্যন্ত চলে উৎসব-যাপন। অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ সেখানে হাজির হন পাশের ৯১ নম্বর বস্তির একদল যুবক। বনশ্রী দাস নামে ৯৫ নম্বর বস্তির এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘অনেকেই মত্ত অবস্থায় ছিল। ঝামেলা হতে পারে, সেই আশঙ্কায় সাউন্ড বক্স বন্ধ করে দেওয়া হয়। তা নিয়ে দু’পক্ষে একপ্রস্ত বচসা হয়। তার পরে ৯১ নম্বর বস্তির ছেলেরা চলে যায়। এর পরে আমাদের পাড়ার এক মহিলা তাঁর পোষ্য কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে বেরোলে ৯১ নম্বর বস্তির ছেলেরা অশালীন মন্তব্য করে। মহিলাকে চটি ছুড়ে মারে। সেটি লাগে কুকুরের গায়ে। মহিলা পাড়ায় এসে সব জানালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।’’

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই মহিলার পক্ষ নিয়ে কয়েক জন ৯১ নম্বর বস্তিতে গিয়ে চেঁচামেচি করেন। এর পরেই পাল্টা ওই বস্তির কয়েক জন এসে পুজো প্রাঙ্গণে ভাঙচুর চালায়। ফুলের গেটও ভেঙে দেওয়া হয়। পুজো উপলক্ষে ওই এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন আঙুরবালা কয়াল নামে বছর ৬৫-র এক প্রৌঢ়া। গোলমালের মধ্যে পড়ে তিনি জখম হন। তাঁকে এন আর এসহাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চারটি সেলাই পড়ে। আহত হন পিন্টু সিংহ, বাবু দাস নামে আরও কয়েক জন। খবর পেয়ে পৌঁছয় বেলেঘাটা এবং ফুলবাগান থানার পুলিশ। তারা গোলমাল থামাতে গেলে বেলেঘাটা থানার এক পুলিশকর্মীর গায়ে ইট এসে লাগে। বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পায়ে আঘাত লাগে আর এক পুলিশকর্মীরও।

বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগের রাতের গন্ডগোলের চিহ্ন স্পষ্ট। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভাঙা জিনিসপত্র। দুই বস্তির মোড়েই বসেছে পুলিশ পিকেট। এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘প্রায়ই এখানে এমন ঝামেলা হয়। কড়া পদক্ষেপ না করলে এ জিনিস বন্ধ করা যাবে না।’’ যে পুজো ঘিরে এত কাণ্ড, সেখানকার পুরোহিত বলেন, ‘‘পাঁচটা প্রতিমার মধ্যে একটি বিসর্জন যায় আমাদের। এ বছর পুলিশি পাহারায় বিসর্জন দিতে হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Vandalism beleghata pujo Clash

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy