Advertisement
E-Paper

বইমেলার সূচনা করলেন সৌমিত্র-মমতা

মঙ্গলবার ৪২তম কলকাতা বইমেলার আসরে এসে সেই পরম্পরা একটু পাল্টাল। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায় ‘বাংলার আপন জন’ বা ‘নিজস্ব মানুষ’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতেই এ বার বইমেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আচার সম্পন্ন হতে দেখা গেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৭
Share
Save

আমবাঙালির বচ্ছরকার বইপার্বণে এই কাজটা সাধারণত তিনি নিজেই করে থাকেন। বইমেলার বয়স মিলিয়ে ঠিক তত বার স্বহস্তে হাতুড়ির ঘা মেরে মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনার দায়টা বরাবর নিজেই বহন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার ৪২তম কলকাতা বইমেলার আসরে এসে সেই পরম্পরা একটু পাল্টাল। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায় ‘বাংলার আপন জন’ বা ‘নিজস্ব মানুষ’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতেই এ বার বইমেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আচার সম্পন্ন হতে দেখা গেল। ৪২ বার হাতুড়ি পিটিয়ে মেলার উদ্বোধন করলেন বর্ষীয়ান ওই অভিনেতা। মমতার পূর্বসূরী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সৌমিত্রের সঙ্গে এক সময়ে কিছুটা দূরত্ব ছিল তাঁর। সে সব এখন সুদূর অতীত। বিশ্বের দরবারে বাংলা ছবির অন্যতম মুখ সৌমিত্রই যেন আন্তর্জাতিক বইমেলার আসরে মমতার সাধের বিশ্ববাংলা ভাবনার মুখ হয়ে উঠেছিলেন। বইমেলা তাঁর মনের অনেকটা দখল করে আছে, এ কথা বলে কলকাতার এক জন নাগরিক হিসেবেই খানিকটা গৃহকর্তাসুলভ ভঙ্গিতে সৌমিত্র জনতাকে বইমেলার মাঠে আসতে নেমন্তন্ন সেরে রাখলেন।

এই উদ্বোধনী আসরের কিছু ক্ষণের মধ্যেই নিউ টাউনের একটি হোটেলে সত্যজিৎ রায়ের ‘অপু’র হাতে ফরাসি দেশের সর্বোচ্চ সম্মান লেজিয়ঁ দ্য’নর তুলে দেবেন দিল্লিতে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দর জিগলার। সৌমিত্র, মমতা, ফরাসি রাষ্ট্রদূত, ফ্রান্সের তিন জন সাহিত্যিকের উপস্থিতি মিশে সৌহার্দ্যের অধ্যায়টি সুচারু হয়ে উঠল। ফরাসি রাষ্ট্রদূত বললেন, বাংলাকে একদা ভারতের ফ্রান্স বলা হত মুক্তচিন্তার চর্চার জন্য। ফরাসি থেকে ভারতীয় ভাষায় সেরা অনুবাদের জন্য এ বারই রোমাঁ রোল্যা পুরস্কার চালু করেছে ফ্রান্স। এ বার সেই পুরস্কার জুটেছে হিন্দি ভাষার বরাতে। ‘‘আশা করব, বাংলার কোনও অনুবাদক পরের বারই এই পুরস্কার পাবেন।’’ — বললেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত। ফ্রান্স ও ভারতের সম্পর্ক, বর্তমান ও ভবিষ্যতের পথ চলায় এই আসরের গুরুত্বও তিনি মনে করিয়ে দিলেন।

আরও পড়ুন: জীবনকে লেন্সবন্দি করেই বদল জীবনের ছবি

মমতাও বইমেলার থিম দেশ তথা কলকাতার অতিথিদের প্রতি সাদর বার্তায় কার্পণ্য করেননি। ‘‘ফ্রান্স বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানী আর কলকাতা ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী।’’— বললেন তিনিও।

মুখ্যমন্ত্রী এক জন লেখকও বটে। সে কথা মনে করিয়ে দিলেন উদ্যোক্তা বুকসেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ড-এর কর্তা ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়, সুধাংশুশেখর দে-রা। মমতার বইয়ের সংখ্যা এখন ৮০-৮৫টি। এ বার বইমেলায় হিন্দি ও সাঁওতালিতে তাঁর কবিতার বইয়ের অনুবাদের কথা শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী।

বইমেলার নতুন জায়গা সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে সব কিছু সুষ্ঠু ভাবে আয়োজনের জন্যও উদ্যোক্তাদের কৃতজ্ঞতাভাজন হলেন মমতাই। মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতাতেই যে সব প্রকাশককে ঠাঁই দেওয়া গিয়েছে, বারবার বললেন তাঁরা। ৩০টি অতিথি দেশের স্টল, বইমেলায় ফ্রান্সের সর্বকালের সুবৃহৎ প্যাভিলিয়ন ছাড়াও ৬০৫টি স্টলের সমাবেশে কলকাতার বই-পার্বণের গরিমায় একটুও ভাটা পড়েনি এ দিন। তবে এখনও কিছু স্টলের কাজ বাকি। উদ্যোক্তারা মেলার মাঠের ভার পেয়েছিলেন দেরিতে। পরের বার ১৫ দিন আগে মাঠ পাওয়ার আর্জি জানালেন তাঁরা। ২০১৯-এর ১৯ জানুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনী দিনটিও মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঠিক করে দিলেন। তাঁর বক্তৃতার শেষে ইতিহাস, বিজ্ঞানকে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষার দায়টাও সাহিত্যিকদের— এ কথাও মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

Bookfair Mamata Banerjee Kolkata কলকাতা মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় Soumitra Chatterjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}