Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর পা পড়েনি, তাই কি এত জঞ্জাল

শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে মঙ্গলবার পরিদর্শনে এসে তাঁর চোখে পড়েছিল, ডাঁই করা জঞ্জাল। তা দেখে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে অবিলম্বে হাসপাতাল চত্বর সাফ করার নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু শুধু কি শম্ভুনাথ? অন্য সরকারি হাসপাতালগুলির হাল কী রকম? বুধবার ঘুরে দেখলেন জয়তী রাহা।কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ: এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে ইট, বালি। নতুন তৈরি নিকাশি নালায় বর্জ্য জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গ্রিন বিল্ডিংয়ের উল্টো দিকে স্তূপ হয়ে আছে বাড়ি ভাঙার আবর্জনা। জমে রয়েছে জল। ছাত্রীদের আবাস থেকে মূল ভবনে আসার পথে একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে মদের বোতল, বিয়ারের ক্যান।

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৭ ০৪:১৮
দখলদার: পুকুরের ধারে জমে জঞ্জাল, বিশ্রামাগারের পাশে পাথরকুচির স্তূপ। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বুধবার।— নিজস্ব চিত্র

দখলদার: পুকুরের ধারে জমে জঞ্জাল, বিশ্রামাগারের পাশে পাথরকুচির স্তূপ। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বুধবার।— নিজস্ব চিত্র

আর জি কর: হাসপাতালে ঢোকার মুখেই রাস্তার উপরে খোলা ভ্যাটে রাখা রয়েছে কন্টেনার। নোংরা কাপড় দিয়ে সেটি আড়াল করা। দুর্গন্ধে নাক চেপে যাতায়াত করছেন পথচারীরা। এগিয়ে গেলে ইমার্জেন্সি, রেডিওথেরাপি ভবন, বহির্বিভাগ, কার্ডিওলজি, সার্জারি বিভাগ। সেগুলির আশপাশ মোটামুটি পরিষ্কার। মাঝেমধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে প্লাস্টিকের খালি বোতল, চিপ্‌স-বিস্কুট-কেকের প্যাকেট। পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিল্ডিংয়ের বাইরে দু’ধারে স্তূপাকৃতি বাতিল টিউবলাইট ও বাল্ব। এক কর্মী জানালেন, সেগুলি দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে। কেন সরানো হয় না? হাসপাতালের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যাল বলেন, ‘‘এগুলো পূর্ত দফতরের। সরানোর দায়িত্বও তাদের। হাসপাতাল সাফাইয়ের জন্য আছেন প্রায় ৪০০ কর্মী। এঁদের বেশির ভাগই চুক্তিভিত্তিক। দরকারে স্থানীয় কাউন্সিলর ১০০ দিনের কর্মী পাঠিয়ে সাহায্য করেন।’’

এন আর এস: ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের পাশেই মানুষ সমান গর্ত। নাম-কা-ওয়াস্তে বাঁশ দিয়ে ঘেরা। পাশেই দীর্ঘ লাইন রোগীর আত্মীয়দের। ডিজিট্যাল এক্স-রে বিল্ডিং, বহির্বিভাগ, ইমার্জেন্সি— প্রায় সব ভবনের সামনে রাস্তায় পাঁচ-ছ’ইঞ্চি গভীর গর্ত। সেই রাস্তায় আবার ফেলা হয়েছে বালি। পরিস্থিতি এমনই, রোগী নিয়ে বেরোতে সমস্যায় পড়ছেন পরিজনেরা। এই হাসপাতালে ভর্তি বরাহনগরের বাসিন্দা কুমকুম মিত্রের শাশুড়ি। কুমকুমদেবী জানালেন, দিন দশেক ধরে এই অবস্থা। স্ট্রেচারে রোগী নিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। ঝাঁকুনিতে কষ্ট হচ্ছে রোগীরও। হাসপাতাল জুড়ে ছড়িয়ে ইট, বালি, পাথরকুচি, ডাবের খোলা। পুকুরের চারদিকেও আবর্জনা। সুপার হাসি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হাসপাতালে কাজ চলছে। নিকাশির লাইন হচ্ছে। এর জন্যই এমন অবস্থা। কিছু করার নেই।’’

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ: এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে ইট, বালি। নতুন তৈরি নিকাশি নালায় বর্জ্য জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গ্রিন বিল্ডিংয়ের উল্টো দিকে স্তূপ হয়ে আছে বাড়ি ভাঙার আবর্জনা। জমে রয়েছে জল। ছাত্রীদের আবাস থেকে মূল ভবনে আসার পথে একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে মদের বোতল, বিয়ারের ক্যান। সাজানো পার্কটির সামনেও পড়ে শুকনো পাতা। সুপার শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে কাজ চলছে। পূর্ত দফতরকে বারবার বলা হয়েছে আবর্জনা ফেলে না রাখতে। তারা না শুনলে আমরা কী করতে পারি?’’

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ: হাসপাতালের ভিতরে সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে খাবারের প্যাকেট, জলের বোতল, আবর্জনা। এমনকী চিকিৎসা বর্জ্যও। নোংরা হয়ে রয়েছে রোগীর আত্মীয়েরা বসার জায়গা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য মেলেনি।

তিনি বলেন: পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন ‘‘কোনও হাসপাতালে পূর্ত দফতরের কাজের জন্য আবর্জনা জমলে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাফ হয়ে যায়।’’ তা হলে হাসপাতালগুলিতে যা পড়ে রয়েছে সেগুলি কী? কর্তৃপক্ষই
বা এমন অভিযোগ কেন করছেন? মন্ত্রীর জবাব, ‘‘ওঁরা ভুল দেখেছেন। ভুল বলছেন।’’

Container Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় chief minister
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy