Advertisement
১৮ মে ২০২৪

পুজো-হোর্ডিংয়ে নেই পুর বিধি, দায় নেবে কে

পুজোর আগে শহরের মুখ ঢেকেছে হোর্ডিং, ব্যানারে।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০১:০২
Share: Save:

পুজোর আগে শহরের মুখ ঢেকেছে হোর্ডিং, ব্যানারে।

শহরের বড় রাস্তার ধার, বিভিন্ন মোড়, সেতুর রেলিং, গলি সবর্ত্র ভরে গিয়েছে অস্থায়ী হোর্ডিং, ফ্লেক্সে। প্রশ্ন উঠেছে, এই সব অস্থায়ী হোর্ডিং-ব্যানার কতটা শক্তপোক্ত? কার অনুমতিতেই বা শহরের যেখানে-সেখানে লাগানো হয়েছে এই হোর্ডিং বা বড় বড় বাঁশের গেট? শুক্রবার পুণেতে একটি বড়সড় হোর্ডিংয়ের লোহার কাঠামো ভেঙে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতায় পুজোর সময়ে অবশ্য লোহার কাঠামোর হোর্ডিং লাগানো হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাঁশের কাঠামো ব্যবহার হয়। প্রশ্ন উঠেছে, কোনও কারণে সেগুলি ভেঙে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটবে না তো? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শহরে হোর্ডিং লাগানো নিয়ে কোনও বিধি নেই। তাই কারা কী ভাবে হোর্ডিং লাগাচ্ছেন, সেগুলি বিপজ্জনক কি না, সেই উত্তর নেই কারও কাছেই।

এক হোর্ডিং সংস্থার কর্ণধার যাদব সেন বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে পাঁচ ফুটের রেলিংয়ের উপরে বাঁশ পুঁতে ফ্লেক্সের যে ছোট হোর্ডিং লাগানো হয়, সেগুলি ভেঙে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কম। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটো ছোটো বাঁশের কাঠামোর উপরে অনেক বেশি উচ্চতার হোর্ডিং বা ফ্লেক্সও লাগানো হচ্ছে। পুজোর ভিড়ে সেগুলি ভেঙে পড়লে কিন্তু বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ যাদববাবুর মতে, পুজোর আগে লাগানো এই সব অস্থায়ী হোর্ডিং এবং ফ্লেক্স দিন দিন উচ্চতা ও চওড়ায় বাড়ছে। যাদববাবু বলেন, ‘‘আগে দেখা যেত, বেশির ভাগ হোর্ডিং চওড়ায় ১৫ ফুট এবং উচ্চতায় ৬ ফুট। এখন তো ৩০ ফুট চওড়া ও ১৫ ফুট উচ্চতারও হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। এগুলির ওজন যথেষ্ট। হোর্ডিংয়ের মাপ কী হবে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।’’ শহরের আর এক হোর্ডিং সংস্থার কর্ণধার জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘হোর্ডিংগুলি যে বাঁশের কাঠামোর উপর তৈরি হচ্ছে, সেই কাঠামোর বাটাম কতটা মজবুত, তা দেখা দরকার। বাটাম যদি মজবুত না হয়, তা হলে কিন্তু ভেঙে পড়তেই পারে। তাই এ বিষয়ে নজরদারি জরুরি।’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, নজরদারি করবে কে? কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে এই সব হোর্ডিং লাগানোর জন্য কোনও অনুমতি লাগে না। কারণ এগুলি থেকে পুরসভা কোনও কর নেয় না।’’ তা হলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নেবে? দেবাশিসবাবুর উত্তর, ‘‘যাদের হোর্ডিং, সেই সংস্থা দায়ী হবে।’’ কলকাতা পুলিশের এক কর্তা পুরসভার উপরে দায় চাপিয়ে বলেছেন, ‘‘হোর্ডিং, ব্যানার বা বাঁশের বড় গেট বানানোর অনুমতি দেওয়ার কথা পুরসভার। পুলিশ শুধু পুজোর অনুমতি দেয়।’’

কলকাতার কয়েকটি বড় পুজোর কর্মকর্তারা জানালেন, হোর্ডিং লাগানোর জন্য থানা থেকে আলাদা অনুমতি নিতে হয় না। তবে হোর্ডিং বা ব্যানার তাঁরা যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গেই লাগান। দমদম পার্ক এলাকার এক পুজো কর্তা বিশ্বজিৎ প্রসাদ অবশ্য স্বীকার করছেন, ‘‘আগে পুজো মণ্ডপের সামনে বাঁশের গেট তৈরি করার সময়ে যে সাবধানতা অবলম্বন করা হত, তা এখন অনেক সময়েই করা হয় না। গেট বা হোর্ডিংয়ের কাঠামোর উচ্চতা ক্রমশই বাড়ছে। এ নিয়ে আরও সাবধান হওয়া জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Durgotsav 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE