পুর-নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। চালু হয়েছে নির্বাচনী আচরণ বিধিও। তবু সল্টলেকে দলীয় কর্মীসভায় এসে সেখানকার নাগরিকদের বাড়ির একটি তল বৃদ্ধি এবং পানীয় জলের সরবরাহ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিলেন শাসক দলের নেতারা। ফলে দেখা দিয়েছে নতুন বিতর্ক। ঘটনায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দল সিপিএম। তৃণমূলের দাবি, কোনও প্রকল্প ঘোষণা করা হয়নি। স্রেফ প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। ফলে তা আচরণ বিধি ভঙ্গের মধ্যে পড়ে না। রিটার্নিং অফিসার পবন কাডিয়ান জানান, পুরো বিষয়টি না জেনে নির্বাচন কমিশন কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না।
সল্টলেকের নাগরিকদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ির দোতলা বাড়িয়ে তিন তলা করার অনুমতি চেয়েছেন রাজ্য সরকারের কাছে। বুধবার সল্টলেকে দলের নির্বাচনী কর্মিসভায় রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘বাড়ির তল বৃদ্ধির প্রস্তাব ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছে বিদায়ী পুরবোর্ড। সরকার বিষয়টি বিবেচনা করছে। কিন্তু যেহেতু নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে, তাই কিছু ঘোষণা করছি না।’’
উল্লেখ্য, সল্টলেকে বিভিন্ন আবাসিক বাড়ির দোতলাকে তিনতলা করার পরিকল্পনা ২০০৯ সালে সিপিএম পরিচালিত বিধাননগর পুরবোর্ডই করেছিল। তখন বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল। সঙ্গে যোগ দিয়েছিল সল্টলেকের নাগরিকদের সংগঠন বিধাননগর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনও।
এর পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেও এ দিনের সভায় কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, এত দিন বামেরা সল্টলেকে জল সমস্যার সমাধানই করেনি। গত ৫ বছরে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হয়েছে। আগামী দিনে জলের অভাব থাকবে না। কলকাতা কিংবা টালা-পলতা থেকে এত জল দেওয়া হবে যে সল্টলেকের বাসিন্দাদের গভীর নলকূপ বসাতে হবে না। এই প্রসঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ কথা বলায় যদি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয়, তার পরোয়া করি না। সল্টলেকবাসীকে আমি জল দেব।’’
বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী তথা রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তর অভিযোগ, ওই ভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৃণমূল নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছে। তিনি বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে ঘোষণা তো দূর, কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়াও যায় না।’’ অসীমবাবুর দাবি, ‘‘গঙ্গা থেকে সল্টলেকে জল আনার ব্যবস্থা বাম আমলেই হয়েছিল। তার পরে ওঁরা সময় পেয়েছিলেন। এতদিনে মনে পড়ল!’’
পুরমন্ত্রী অবশ্য নিজের বক্তব্যে বিধিভঙ্গ দেখেননি। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু ঘোষণা করিনি। প্রতিশ্রুতিও দিইনি। সরকারের কাছে যা প্রস্তাব আছে, সেগুলিই বলেছি।’’
বিধাননগর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অবশ্য রাজ্য সরকারের প্রস্তাবকে ইতিবাচক মনে করছে। তবে তাদের প্রস্তাব, তল বৃদ্ধির অনুমতি দিলে নিকাশি ব্যবস্থার সুরক্ষাও সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘এক সময়ে সিপিএম সরকারও ওই প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু নিকাশি ও পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই সরকার কিছু ভাবলেও নাগরিকদের মতামত তাঁদের নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy