Advertisement
০৭ মে ২০২৪
coronavirus

নামমাত্র সরকারি পরীক্ষায় বাদ প্রকৃত আক্রান্ত

ভুক্তভোগীদের দাবি, এমনিতেই বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করানোর অনেক খরচ। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বহু জায়গায় বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করানোরও তেমন ব্যবস্থা নেই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৬
Share: Save:

রাজ্যের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে উত্তর শহরতলিতেও। কিন্তু অভিযোগ, করোনা উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। কারণ, দৈনিক নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা কোথাও ৫, তো কোথাও ২২! সরকারি হাসপাতালগুলির দেওয়া তথ্যেই উঠে আসছে এই ছবি।

ভুক্তভোগীদের দাবি, এমনিতেই বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করানোর অনেক খরচ। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বহু জায়গায় বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করানোরও তেমন ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা করাতে অসংখ্য মানুষকে ছুটতে হচ্ছে সরকারি হাসপাতালেই। অথচ বারাসত জেলা হাসপাতাল-সহ ওই জেলার বিভিন্ন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার জন্য প্রতিদিন মাত্র কয়েক জনের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরীক্ষা না করিয়ে বাড়ি ফিরছেন বেশির ভাগ মানুষ।

কোভিড-বিধি অনুযায়ী, জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি রোগীর করোনা পরীক্ষা করাতেই হবে। তার সঙ্গে রয়েছে হাসপাতালগুলিতে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে আসা মানুষের চাপ।

বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে সাত জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয় সেখানে। শুক্রবার ওই হাসপাতালে ভর্তি ও বাইরে থেকে আসা রোগী মিলিয়ে মোট সাত জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা করাতে না-পেরে ফিরে গিয়েছেন অনেক রোগীই।

একই অবস্থা বারাসত জেলা হাসপাতালের। শুক্রবার সেখানে ২২ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়। গত কয়েক দিনের মধ্যে নমুনা সংগ্রহের এই সংখ্যাই ছিল সর্বোচ্চ। তার আগে কখনও ১০, কখনও বা ১৫ জনের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বিশেষ ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করে দু’-একটি বাড়তি পরীক্ষা করাতে পারছেন। ফলে বারাসত, মধ্যমগ্রাম, দেগঙ্গা, আমডাঙা, দত্তপুকুরের মতো দূরবর্তী এলাকা থেকে এসে বহু মানুষ পরীক্ষা করাতে না-পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল জানান, যাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি রোগী যেমন আছেন, তেমনই উপসর্গ নিয়ে আসা মানুষও আছেন।

করোনা পরীক্ষার জন্য এ দিন ১০ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। পরীক্ষা করাতে না-পেরে ফিরে যান অনেকেই। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত কয়েক দিন গড়ে পাঁচ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এ দিন ছিল সর্বোচ্চ সংখ্যা।

কেন এই পরিস্থিতি? এ দিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “প্রতিদিন জেলায় মোট কত জনের নমুনা সংগ্রহ করা হবে, তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর আগে থেকে জানিয়ে দেয়। সেই মতো জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে তা ভাগ করে আগে থেকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পরেই সংগ্রহ করা নমুনা নাইসেডে পাঠানো হচ্ছে।”

উদাহরণ দিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, গোটা জেলায় যদি কোনও দিন ১০০ জনের পরীক্ষা করানোর নির্দেশ আসে তা হলে সংশ্লিষ্ট জেলা হাসপাতালগুলিকে তাদের ভিড়ের নিরিখে নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হবে। তবে এই সংখ্যা যে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম তা স্বীকার করে নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও।

চিকিৎসকদের মতে, এত কম সংখ্যক লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হলে সংক্রমণ রোধের যে কোনও প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হতে বাধ্য। বার বার লকডাউন করেও রাশ টানা যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus swab testing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE