সর্বক্ষণের প্রহরা আছে। আছে সিসিটিভি। বিশেষ গেটে টিকিট ‘পাঞ্চ’ করলে তবেই ঢোকা যায় প্ল্যাটফর্মে। অথচ, সব পেরিয়েই মেট্রোয় চড়ে বসছেন ‘বিনা টিকিটের’ যাত্রী!
মেট্রোকর্মীদের অনেকের মতে, সোমবারের এই ঘটনাতেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনির আসল চেহারাটা। আর যাত্রীদের প্রশ্ন, এর পরে যে অনায়াসে দুষ্কৃতীরাও মেট্রোর সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়বে না, তার গ্যারান্টি দেবে কে?
চলতি সপ্তাহটিকে ‘হামসফর সপ্তাহ’ হিসেবে পালন করছে রেল। তার অঙ্গ হিসেবেই এ দিন কিছুক্ষণের জন্য বিশেষ টিকিট পরীক্ষার অভিযান চালিয়েছিলেন মেট্রোকর্তারা। তাতেই ধরা পড়েছেন ১৮ জন। আর অর্ধেক ভাড়া দিয়ে কম যাত্রাপথের টিকিট কেটে বেশি দূরত্ব যেতে গিয়ে ধরা পড়েছেন আরও ২৭ জন। সব মিলিয়ে জরিমানাও আদায় হয়েছে বেশ কয়েক হাজার টাকা।
রোজকার টিকিটের জন্য বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি টোকেন, মাসিক টিকিটের জন্য বিশেষ স্মার্ট কার্ড এবং টিকিট পরীক্ষার জন্য অটোমেটিক স্মার্ট গেট। সবই এখন রয়েছে মেট্রোর হাতে। তবু কী করে এমন ঘটল মেট্রোয়? সদুত্তর নেই কর্তাদের কাছেই। তাঁদের বক্তব্য, ‘ধরা পড়া যাত্রীরা জানিয়েছেন, তাঁরা টাকা খরচ করে কয়েন টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু আসতে আসতে তা কোথাও পড়ে গিয়েছে।’ কিন্তু এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে মেট্রোর অন্দরেই।
কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষ তো আর রোজ টিকিট পরীক্ষার অভিযান চালান না! টিকিট পরীক্ষা হয় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে। মেট্রোকর্তাদেরই একাংশের বক্তব্য, এক দিনে কয়েক ঘণ্টায় যদি ১৮ জন ধরা পড়েন, তা হলে রোজ টিকিট পরীক্ষার অভিযান হলে মাসে কয়েক হাজার বিনা টিকিটের যাত্রী ধরা পড়তে পারেন। এই ঘটনার পরে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নয়া প্রযুক্তির স্মার্ট গেট লাগানোর প্রয়োজন কতটা ছিল, তা-ও ভাবাচ্ছে তাঁদের।
কিন্তু বিনা টিকিটে যাত্রীরা ঢুকছেন কী ভাবে?
যাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, আগে যখন স্টিলের ঘূর্ণায়মান রড দেওয়া টিকিট পরীক্ষার মেশিন ছিল, তখনও দেখা যেত, কোনও বৈধ যাত্রী টিকিট পাঞ্চ করে ঢোকার সময়ে পিছনে পিছনে আর এক জন দ্রুত ওই স্টিলের রডটি চেপে ধরে প্রায় একসঙ্গে ঢুকে যেতেন। অভিযোগ, এখন স্মার্টগেটেও একই ঘটনা ঘটছে। অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, এক জন যাত্রী ঢোকার সময়ে একই ভাবে পিছনে আর এক জনও ঢুকে পড়ছেন ভিতরে। মাঝেমধ্যে প্রশ্ন করলে বলছেন, তাঁরা নাকি মেট্রো কর্মী। কিন্তু কোনও নিরাপত্তা কর্মীরই সে সব চোখে পডছে না।
যাত্রীদের এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান মেট্রোকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy