প্যারাস্যুট বাহিনী, বোফর্স কামান, পিনাকা মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার যদি মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর তরফে চমক হয়, তা হলে পিছিয়ে নেই কলকাতা পুলিশও। আজ, প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডের আকাশে উড়বে পুলিশের ড্রোন। সতর্ক নজর রাখবে কুচকাওয়াজে।
রেড রোড ঘিরে এ বার যে বাড়তি সতর্কতা থাকবে, তা আঁচ করা গিয়েছিল আগেই। গত ১৩ জানুয়ারি, কুচকাওয়াজের মহড়ায় যে ভাবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বেপরোয়া গাড়ি বায়ুসেনা অফিসারকে পিষে দেয়, তাতে পুলিশের নিরাপত্তাই প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছিল। প্রজাতন্ত্র দিবস ঘিরে এখন দেশ জুড়ে জঙ্গিহানার সর্তকতা। ফলে, হৃত ‘ইমেজ’ পুনরুদ্ধারে আজ, মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের ১৮ জন ডেপুটি কমিশনারকে রাখা হয়েছে রেড রোড ও সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তায়। সঙ্গে থাকবেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারেরা এবং সাড়ে তিন হাজার পুলিশকর্মী। নজরদারি চলবে সিসিটিভিতেও। তবু নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। ঠিক হয়েছে, ড্রোন-এর মাধ্যমেও পুরো রেড রোডে নজরদারি থাকবে। লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে তার ক্যামেরা ফুটেজে চোখ রাখবেন আলাদা অফিসার।
জঙ্গিহানার সতর্কতায় কলকাতা বিমানবন্দর ঘিরে চূড়ান্ত নিরাপত্তা— বাইরের দর্শনার্থীদের ঢোকা নিষেধ, যাত্রীদের তল্লাশি হচ্ছে কয়েক বার। নিরাপত্তা বেড়েছে শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনেও। এ ধরনের ব্যবস্থা হয় অন্য বারও। রেড রোডেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকে। কিন্তু এ বার মহড়ার ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। এক লহমায় কয়েক গুণ বেড়েছে প্রজাতন্ত্র দিবসের সেনা কুচকাওয়াজে বরাদ্দ পুলিশি নিরাপত্তা, সতর্কতা ও তৎপরতা। লালবাজার সূত্রের খবর , রেড রোডে পুলিশের ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড থাকবে, যাতে কোনও গাড়ি ব্যারিকেড ভাঙতে না পারে। এ ছাড়া জংলা পোশাকে কমব্যাট ব্যাটালিয়নের কমান্ডোও মোতায়েন থাকবে। এক পুলিশকর্তা জানান, সাড়ে তিন হাজার পুলিশের পাশাপাশি রেড রোড সংলগ্ন এলাকায় থাকছে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার, ১৪টি ক্যুইক রেসপন্স টিম ও একাধিক বালির বস্তার বাঙ্কার। লালবাজার সূত্রের খবর, কুচকাওয়াজের বিশাল জায়গাটিকে ৩০টি পয়েন্টে ভাগ করে প্রতিটির দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে ইনস্পেক্টর। বেশ কয়েক জন ইনস্পেক্টরকে নিয়ে গড়া সেক্টরের ভার অতিরিক্ত কমিশনার পদমর্যাদার এক অফিসারের। সঙ্গে ১৮ জন ডিসি। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘মোটামুটি যুদ্ধ বলে মনে হতে পারে।’’