Advertisement
E-Paper

সেতু ফেসবুক, ঘরে ফিরে এল নিখোঁজ ছেলে

ফেসবুকে অচেনা প্রোফাইল থেকে মেসেজ এসেছিল, “আই উইল কাম ব্যাক।” মেসেজটা পড়েই খটকা লাগে বাগুইআটি বাগুইপাড়ার বাসিন্দা অমরেশ চতুর্বেদীর। ছ’বছর আগে ছেলে অঙ্কিত নিখোঁজ হয়েছিল। বহু খোঁজাখুজি করেও হদিস মেলেনি। মেসেজটা দেখে তাই অমরেশবাবুর মনে হয়েছিল, এ তাঁর ছেলের পাঠানো নয় তো?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৪ ০২:১৯

ফেসবুকে অচেনা প্রোফাইল থেকে মেসেজ এসেছিল, “আই উইল কাম ব্যাক।” মেসেজটা পড়েই খটকা লাগে বাগুইআটি বাগুইপাড়ার বাসিন্দা অমরেশ চতুর্বেদীর। ছ’বছর আগে ছেলে অঙ্কিত নিখোঁজ হয়েছিল। বহু খোঁজাখুজি করেও হদিস মেলেনি। মেসেজটা দেখে তাই অমরেশবাবুর মনে হয়েছিল, এ তাঁর ছেলের পাঠানো নয় তো? ছেলে বাড়ি ফিরতে চাইছে বলেই কি ফেসবুকে মেসেজ করেছে? সঙ্গে সঙ্গে বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার সেলে বিষয়টি জানান তিনি। প্রোফাইল খতিয়ে দেখেই পুলিশ সন্ধান পেয়েছে অঙ্কিতের। মঙ্গলবার বাগুইআটি থানার পুলিশের সহযোগিতায় হারানো ছেলেকে নিয়ে পঞ্জাব থেকে ফিরেছেন অমরেশবাবু।

পেশায় আইনজীবী ও ট্যাক্স কনসালট্যান্ট অমরেশবাবু বলেন, “যে প্রোফাইল থেকে মেসেজটা আসে, তাতে নাম ছিল ‘ভালগার গামা।’ প্রোফাইল-পিকচারে বলিউডের এক নায়কের ছবি। তবে প্রোফাইলের ভিতরে ঢুকে দেখি আমার ছেলের ছবি।”

কিন্তু ‘ভালগার গামা’ প্রোফাইলের অ্যালবামে অঙ্কিতের কিছু ছবি থাকলেও কোনও ঠিকানা ছিল না। ফলে প্রোফাইলটি কোথা থেকে তৈরি হয়েছে, তার কোনও আন্দাজ পাননি অমরেশবাবু। তিনি বলেন, “ফেসবুকে আমার প্রোফাইল থাকলেও সেটা নিজে খুব একটা ব্যবহার করি না। ফলে প্রোফাইলটা ছেলেরই কি না বুঝতে পারছিলাম না। সঙ্গে সঙ্গে বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার সেলে যোগাযোগ করি।”

পুলিশ সূত্রের খবর, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাইবার সেলের তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অঙ্কিত তিনটি কম্পিউটার ও ৪টি আলাদা মোবাইল থেকে ফেসবুক ব্যবহার করেছেন। এমনকী ওই প্রোফাইলটিও অঙ্কিতের নয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ছেলেকে বাড়ি ফিরে আসতে বলে ফেসবুকে একটি মেসেজ দিয়েছিলেন অমরেশবাবু। মার্চ মাসে ফেসবুকে অঙ্কিতের জবাব আসে।

বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার সেলের তদন্তকারীরা জানান, ওই প্রোফাইলের ‘ফ্রেন্ড লিস্ট’ দেখে সেই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ‘ভালগার গামা’ প্রোফাইল কোথা থেকে তৈরি হয়েছে, জানা যায় সেটাও। তদন্তকারীরা বুঝে যান, প্রোফাইলটি তৈরি করেছেন পঞ্জাবের বি ডিভিশন থানার চিমরাং রোডের এক বাসিন্দা। এর পরেই বাগুইআটির থানার পুলিশের একটি দল অমরেশবাবুকে নিয়ে পঞ্জাবের দিকে রওনা দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, চিমরাং রোডে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন বহুজাতিক সংস্থার কর্মী অঙ্কিত। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, অঙ্কিতকে ভাল ছেলে বলেই চেনেন তাঁরা।

ছ’বছর পরে ছেলেকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত অমরেশবাবু। বলেন, “ছেলে যখন নিখোঁজ হয় তখন ও ছিল কিশোর। এখন রীতিমতো যুবক। চাকরিও করছে। ও যে কোনও অসৎ সঙ্গে পড়েনি, তাতে নিশ্চিন্ত হয়েছি।” বাবাকে ফিরে পেয়ে খুশি অঙ্কিতও। বলেন, “ছ’বছর পরে বাড়ি ফিরে এসে খুব খুশি। আমিও বাড়ি ফিরতে চাইছিলাম।” তবে কেন বাড়ির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলেন না? পুলিশ জানায়, কোনও একটা অভিমানের জায়গা থেকে সরাসরি যোগাযোগ করতে দ্বিধা বোধ করছিলেন অঙ্কিত।

তবে কেন বাড়ি থেকে ছ’বছর আগে অঙ্কিত চলে যান, তার উত্তর এখনই দিতে চাননি বাবা-ছেলে। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কারও প্ররোচনায় পা দিয়েই বাড়ি ছেড়েছিল কিশোর অঙ্কিত।

facebook baguiati amaresh chaturbedi ankit chturbedi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy