Advertisement
০৩ মে ২০২৪

এখনও অনিশ্চিত বাগড়ির মজুত ওষুধের ভবিষ্যৎ

ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, বাগড়ি মার্কেটের আগুন নিভে গিয়েছে প্রায় দেড় মাস। ওই মার্কেটে প্রায় ১৫০ ওষুধের দোকান রয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে আগুনে প্রায় অর্ধেক দোকানের ওষুধ পুড়ে ছাই হয়েছে গিয়েছে।

বাগড়ি মার্কেট।—ফাইল চিত্র

বাগড়ি মার্কেট।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:১৩
Share: Save:

আগুনে পুড়ে গিয়েছে বাগড়ি মার্কেটের প্রায় ১০০ কোটি টাকার ওষুধ। তালাবন্ধ বাকি অর্ধেক ওষুধের দোকানে আরও ১০০ কোটি টাকার মজুত ওষুধের ভবিষ্যৎ নিয়েও এ বার প্রশ্ন উঠছে। কারণ রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে ওই ওষুধ এখনও পরীক্ষাই করা হয়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, বাগড়ি মার্কেটের আগুন নিভে গিয়েছে প্রায় দেড় মাস। ওই মার্কেটে প্রায় ১৫০ ওষুধের দোকান রয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে আগুনে প্রায় অর্ধেক দোকানের ওষুধ পুড়ে ছাই হয়েছে গিয়েছে। কিন্তু বাকি দোকানগুলিতে আগুনের আঁচ পড়েনি বলে তাঁদের দাবি। কিন্তু ওই ঘটনার পরে বাগড়ি মার্কেটের সব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় মাস দেড়েক পরেও রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে ওই ওষুধের কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অগ্নিকাণ্ডের পর ড্রাগ কন্ট্রোলের একটি দল শুধু পরিদর্শন করেছেন।

বাগড়ি মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের কথায়, ড্রাগ কন্ট্রোলের বিধি অনুযায়ী ওই সব দোকানের মজুত ওষুধ কোনও ভাবেই অন্যত্র দোকান খুলে বিক্রি করা যাবে না। নিয়ম অনুযায়ী ওই সব বন্ধ দোকানের ওষুধের নমুনা পরীক্ষার পরে সঠিক গুণমানের প্রমাণ পাওয়ার পরই তা বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে কোনও দোকান থেকে মজুত ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। অথচ ওই সব ওষুধ দীর্ঘদিন বন্ধ দোকানে পড়ে থাকলে সময়সীমা পেরিয়ে গিয়ে কার্যকারিতা হারাবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী সমররঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমার দোকানে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকার ওষুধ মজুত রয়েছে। কিন্তু দোকান বন্ধ। ড্রাগ কন্ট্রোলের অফিসাররা একাধিক বার ওই জায়গা পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু বন্ধ দোকানের ওষুধের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ আর এক ব্যবসায়ী অনুপম রায় বলেন, ‘‘আমার দোকানও তালা বন্ধ। প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ওষুধ মজুত রয়েছে। এখন ওই ওষুধের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা কিছুই জানি না।’’

রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, বাজার বন্ধ থাকায় নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি। ডিরেক্টর স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের অফিসারদের দল ওই মার্কেটের বন্ধ ও পুড়ে যাওয়া দোকানগুলির অবস্থা পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু মার্কেট বন্ধ থাকায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।’’ কিন্তু কবে ওই ওষুধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? সেই বিষয়ে স্পষ্ট কোনও জবাব দেননি স্বপনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘নানা বিষয়ের উপর তা নির্ভর করছে। বেশ কয়েক দিন পুজোর ছুটি ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ডিসট্রিবিউটরস অ্যাসোসিয়েশন-র সর্বভারতীয় সভাপতি জয়দীপ সরকার বলেন, ‘‘শুধু বন্ধ দোকানের একশো কোটি টাকার ওষুধের ভবিষ্যতই নয়। ওই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রায় হাজার দেড়েক

কর্মচারী ও তাঁদের পরিজনদের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রুজি-রুটির প্রশ্ন রয়েছে।’’ বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দ্রেশ সাংভি বলেন, ‘‘আমরা সব দফতরের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছি। ওই বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ীরা যাতে কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেই বিষয়ে আমরা নজর রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Futur Medicine Bagri Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE