ট্রলির চাকাতেই লুকোনো ছিল সোনা। নিজস্ব চিত্র
খবর বেশ কিছু দিন ধরেই আসছিল। দেহ ও ব্যাগ তল্লাশিতে বার বার ধরা পড়ে যাওয়ায়, নতুন পন্থা নিয়েছেন বিদেশ থেকে লুকিয়ে সোনা নিয়ে আসা বিমানযাত্রীরা। বিমান থেকে কলকাতায় নামার পরে যে ট্রলিতে চাপিয়ে বড় ব্যাগ নিয়ে বাইরে বেরোন যাত্রী, সেই ট্রলিতে আটকে নেওয়া হচ্ছে সোনা। সন্দেহজনক যাত্রীকে আটকে শুল্ক অফিসারেরা দেহ বা মালপত্র তল্লাশি করলেও সাধারণত সেই ট্রলি-র দিকে নজর থাকে না কারও। সেই সুযোগে ট্রলিতে আটকে সোনা নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন পাচারকারী।
খবর থাকলেও ধরা যাচ্ছিল না কিছুতেই। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শনিবার সকালে ভুটান এয়ারলাইন্সের বিমান ব্যাঙ্কক থেকে নামার পরে যাত্রীরা সব একে একে বিমানবন্দরের শুল্ক বিভাগ পেরিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। শুল্ক বিভাগের গায়েই ‘ডিউটি ফ্রি শপ’। সেখানে কম দামে বিদেশি মদ, সিগারেট, চকলেট, পারফিউম-সহ অন্য সামগ্রী পাওয়া যায়। তারই সামনে রাস্তার মাঝখানে একটি ট্রলি পড়ে ছিল। ট্রলিতে কোনও মালপত্র ছিল না। যাতায়াতের পথে ও ভাবে ট্রলিটি পড়ে থাকতে দেখে এক শুল্ক অফিসার সেটিকে ঠেলে পাশে সরিয়ে দিতে গিয়ে দেখেন ট্রলির চাকার পাশে কিছু একটা চকচক করছে।
ট্রলির চাকার পাশে একটি লোহার রড রয়েছে, সেটি ফাঁপা। ফাঁপা দিকটি নীচের দিকে। সেই রডের ভিতরে দু’টি সোনার টুকরো ঢোকানো। মুখটি একটি থার্মোকল দিয়ে কর্কের মতো করে আটকানো। এক শুল্ক অফিসারের কথায়, ‘‘আমাদের সন্দেহ যে ঠিক, তা হাতেনাতে প্রমাণ হয়ে গেল।’’ মাস দুয়েক আগে এমন খবর পেয়ে মাঝেমধ্যেই সন্দেহজনক যাত্রীর ট্রলিও পরীক্ষা করছিলেন শুল্ক অফিসারেরা। অফিসারদের বক্তব্য, শনিবার সকালেও কয়েকটি ট্রলি পরীক্ষা করা হয়েছিল। এক অফিসারের কথায়, ‘‘সম্ভবত যে যাত্রী ট্রলির চাকার পাশের রডের ভিতরে সোনা নিয়ে আসছিলেন, তিনি দূর থেকে আমাদের ট্রলি পরীক্ষা করতে দেখে ভয় পেয়ে যান। ট্রলি ডিউটি ফ্রি শপ-এর সামনে ফেলে মালপত্র হাতে নিয়ে বেরিয়ে যান।’’
শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পরিত্যক্ত ট্রলি থেকে যে দু’টি সোনার টুকরো পাওয়া গিয়েছে, তার মোট ওজন প্রায় ৩২৪ গ্রাম। বাজারদর প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। শুল্ক অফিসারেরা জানিয়েছেন, সোনা মূলত পাচার হচ্ছে ব্যাঙ্কক থেকে। তাই, ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় আসা প্রতিটি বিমানের যাত্রীদের প্রতি বিশেষ নজরদারি থাকছে। এমনকী, ব্যাঙ্কক থেকে শহরে নামার পরে কখনও কখনও খালি বিমানও তল্লাশি করা হচ্ছে। সম্প্রতি এমনই এক খালি বিমানের আসনের পিছন থেকে দেড় কোটি টাকার সোনা পেয়েছেন অফিসারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy