ওজনে কারচুপি ধরতে লোকলস্কর নিয়ে মঙ্গলবার গড়িয়াহাট মার্কেটে গিয়েছিলেন এক দল বিধায়ক। বাজার ঘুরে তাঁরা তাজ্জব! সব দোকানির কাছেই নতুন দাঁড়িপাল্লা, বাটখারা। সেগুলির মানের ছাড়পত্রও (ক্যালিব্রেশন) করানো হয়েছে সদ্যই।
এ দিকে, ক্রেতাদের থেকে ওজনে কারচুপির বহু অভিযোগ মিলেছে। কিন্তু হাতেকলমে একটিও প্রমাণ পাননি বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির ওই সদস্যেরা। যা দেখে পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহের বক্তব্য, “বাজার অভিযানের খবর ফাঁস হয়ে গিয়েছে।” যদিও ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের এক সূত্রের মতে, অভিযান নয়, স্রেফ বাজার ঘুরে দেখতে চেয়েছিল স্ট্যান্ডিং কমিটি। ঘোরার সময়ে কমিটির সদস্যেরা দাঁড়িপাল্লা, বাটখারাও দেখেছেন।
ওজন, মাপ ইত্যাদি সংক্রান্ত কারচুপি দেখার দায়িত্ব ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের অধীন লিগাল মেট্রোলজি বিভাগের। রাজ্যের বিভিন্ন বাজার, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, মলে ওজনে কারচুপি ধরার কাজে অভিযান চালায় ওই দফতর। সম্প্রতি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের কাছে একটি বাজার ঘুরে দেখতে চান সংশ্লিষ্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির কর্তারা। ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পাণ্ডে জানান, সেই মতো গড়িয়াহাট বাজারকে চিহ্নিত করা হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কল্লোল খানের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যেরা ওই বাজার পরিদর্শনে যান।
তবে স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বিধায়কের কথায়, “দোকানের কাছে যাওয়ার আগেই দেখি ওঁরা (ব্যবসায়ীরা) তৈরি। দাঁড়িপাল্লা বা বাটখারার ক্যালিব্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে বসে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না।” আসলে এই অভিযানের খবর বাজারের ব্যবসায়ীরা আগেই পেয়ে গিয়েছেন বলে মনে করছেন কমিটির একাধিক সদস্য।
এ দিন পুরসভার বাজার দফতরের এক অফিসার বলেন, “সব্জি, মাছ এবং মুদি মিলিয়ে ২৩টি দোকান ঘুরে মাত্র একটি ১০০ গ্রামের বাটখারা মিলেছে, যার ওজনে গলদ।” অভিযানে ছিলেন মেয়র পারিষদ তারকবাবুও। তিনি বলেন, “বাটখারাগুলি সদ্য কেনা, ক্যালিব্রেশনও করা হয়েছে এ মাসেই। এর থেকেই পরিষ্কার, বাজার অভিযানের খবর আগেই প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল।” তবে ভয় পেয়ে দোকানদারদের নতুন বাটখারা ব্যবহারের ঘটনাকেও তাঁদের ‘সুমতি’ বলে মনে করছেন তারকবাবুরা। তাঁদের মতে, নিয়মিত ‘রেড’ হলে ওজনের কারচুপি রোখা যে সম্ভব, তা এ দিনের ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে। এ বার থেকে পুর-বাজারে প্রতি মাসেই অভিযান হবে বলে জানান তারকবাবু।