রাখী তরফদার
বিয়ের পাঁচ মাস পর বাপের বাড়ি থেকে এক তরুণীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানার দক্ষিণ জগদ্দল এলাকায়। মৃতের নাম রাখী তরফদার (২১)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাখী সোনারপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। বছরখানেক আগে সোনারপুরের রাঘবপুরের বাসিন্দা রোহিত নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক হয়। গত জুলাইয়ে তাঁদের বিয়ে হয়। রাখীর পরিজনদের অভিযোগ, এর পর থেকেই পণের দাবিতে ওই তরুণীর উপরে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা হত। কয়েক বার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে তাড়িয়েও দেওয়া হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রোহিত তেমন কোনও কাজ করতেন না। অভিযোগ, সেই কারণে শ্বশুরবাড়ির তরফে বিয়ের পর থেকেই রাখীকে চাপ দেওয়া হত নগদ টাকা, মোটরবাইকের জন্য। সম্প্রতি বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্যও তাঁকে চাপ দেওয়া শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে রাখীর কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন রোহিত।
পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুরে রাখী বাপের বাড়িতে চলে আসেন। তাঁর পরিজনেরা জানিয়েছেন, দুপুরে এসে নিজের ঘরে শুয়েছিলেন রাখী। বিকেলে রোহিতের সঙ্গে ফোনে ঝগড়া হয়। এর পরে রাতে সকলের সঙ্গে খাবার খেয়ে নিজের ঘরে শুয়ে পড়েন রাখী।
পরিবার সূত্রের খবর, রাখী খুব সকালেই ঘুম থেকে উঠতেন। কিন্তু এ দিন সকাল ৮টার পরেও তিনি ঘরের দরজা না খোলায় ডাকাডাকি শুরু হয়। কোনও সাড়া না মেলায় এর পরে দরজা ভেঙে পরিজনেরা গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে রাখীর দেহ ঝুলতে দেখেন। ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে। রোহিতের মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের কারণে রাখী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে ওই সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন।
সোনারপুর থানা সূত্রের খবর, রোহিতকে আটক করা হয়েছে। এক তদন্তকারী জানান, রোহিতের বিরুদ্ধে লিখে যাওয়া রাখীর ওই সুইসাইড নোট যাচাই করছে পুলিশ। রোহিতের পরিজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রাখীর পরিবারের তরফে রোহিতের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতদেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy