Advertisement
E-Paper

প্লাস্টিকের ছাউনি ফিরল ফুটপাতে

ফুটপাতের চায়ের দোকানের ছাউনি থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেছিলেন হকারেরা। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখে দ্রুত তাঁরা আয়ত্তে আনেন সেই ধোঁয়া।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০১:১২
প্রত্যাবর্তন: (১) গড়িয়াহাটের ফুটপাতে প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে পসরা নিয়ে বসেছেন হকারেরা। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যাবর্তন: (১) গড়িয়াহাটের ফুটপাতে প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে পসরা নিয়ে বসেছেন হকারেরা। নিজস্ব চিত্র

ফুটপাতের চায়ের দোকানের ছাউনি থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেছিলেন হকারেরা। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখে দ্রুত তাঁরা আয়ত্তে আনেন সেই ধোঁয়া। কিন্তু শুক্রবার রাতে গড়িয়াহাট পুর বাজারের লাগোয়া ওই ধোঁয়ার উৎপত্তি কোথায় ছিল? স্থানীয় হকারেরা জানাচ্ছেন, প্লাস্টিকের ছাউনির কাছে একটি বাল্‌ব জ্বলছিল। কোনও ভাবে তা থেকে প্লাস্টিক উত্তপ্ত হয়ে আগুন লেগে যায়। আগুন নেভানো হলেও ওই ঘটনায় আতঙ্ক তাড়া করছে ব্যবসায়ীদের। কারণ, চলতি বছর ২০ জানুয়ারির মধ্য রাতের সেই পোড়া-স্মৃতি, যা ফিরে এসেছিল তাঁদের মনে। সেই ঘটনার পরেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হুঁশিয়ারি ছিল, ফুটপাতে প্লাস্টিকের ছাউনি ব্যবহার করা যাবে না। পুরসভা সূত্রের খবর, এর পরে গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট, হাতিবাগানে প্লাস্টিক সরাতে দু’-তিন বার অভিযান চালায় পুরসভা।

কিন্তু তার পরেও ফুটপাত থেকে প্লাস্টিকের ছাউনি যে সরেনি, তা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ ঘুরে দেখা গেল।

গড়িয়াহাটের ফুটপাত জুড়ে থরে থরে জিনিস নিয়ে চলছে ব্যবসা। নীল, হলুদ, ফুলছাপ প্লাস্টিকের চাঁদোয়ার নীচে পরপর দোকানগুলি যেন এক সূত্রে ধরে রাখা আছে। সেখানেই ব্যবসা করেন বাঘা যতীনের বাসিন্দা জলি পাল। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ফের প্লাস্টিকের ছাউনি কেন ব্যবহার করছেন? জলি বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য প্লাস্টিক লাগিয়েছি। সরিয়ে নেব।’’ ফুটপাতের অন্য হকারেরাও একই দোহাই দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙিয়ে রোদ-ধুলো থেকে বাঁচার তত্ত্ব খাড়া করছেন।

একই সুর গড়িয়াহাট ইন্দিরা হকার্স ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক মনোরঞ্জন ধরের কথায়। তাঁর দাবি, ‘‘মেয়র জানিয়েছিলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের দ্রুত চাকা লাগানো গাড়ি বিতরণ করা হবে। প্রায় দু’মাস পরে যাও বা দেওয়া শুরু হয়েছিল স্টলে চাকা না থাকায় তা আটকে গেল। স্টল পেলে প্লাস্টিক ব্যবহার করব না।’’ আপাতত এই অজুহাতে শহরের ফুটপাতে প্লাস্টিক আছে বহাল তবিয়তে।

উত্তরের হাতিবাগান বাজার। বিধান সরণির দু’পাশের ফুটপাত কাপড়, চট আর বস্তায় ঢেকে গিয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গড়িয়াহাটে আগুন লাগার পরে পুরসভা থেকে প্লাস্টিক সরিয়ে নিলেও ফুটপাতে কিন্তু কাপড়, চট রয়েই গিয়েছে। কোনও ভাবে বাজারে আগুন লাগলে ওই সব দাহ্যবস্তুর থেকে তা যে ভয়াবহ আকার নেবে সেটা মানছেন ব্যবসায়ীরাও। হাতিবাগান মার্কেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রঞ্জন রায়ের অভিযোগ, ‘‘এখানে ফুটপাতের এক পাশে যে ভাবে কাপড়, চট ঝুলছে তা আরও বিপজ্জনক।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘বিষয়টি জানি না। পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি।’’

মেয়র বলেন, ‘‘অত্যন্ত দাহ্য বস্তু এই প্লাস্টিক। এর কারণে দ্রুত আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’ কিন্তু নিষেধ এবং প্লাস্টিক সরানোর অভিযানের পরেও কেন বাজারগুলিতে প্লাস্টিক-রাজ চলছে? এ জন্য পুলিশি অসহযোগিতাকে দায়ী করছেন মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশকে বলেছি। কিন্তু সক্রিয় সহযোগিতা পাচ্ছি না।’’ যদিও কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (১) জাভেদ শামিম বলেন, ‘‘হকারদের প্লাস্টিক ছাউনি সরানোর বিষয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে কথা বলুন।’’ লালবাজারের অন্য এক কর্তার দাবি, ‘‘হকারদের প্লাস্টিক ছাউনি সরানোর বিষয়টা কলকাতা পুরসভারই দেখার কথা। পুলিশের নয়।’’

Hawkers Plastic Shade Gariahat Fire
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy