নিয়মভঙ্গ: এ ভাবেই তৈরি হচ্ছে লোহার কাঠামো।—নিজস্ব চিত্র।
গড়িয়াহাট মোড়ের বিপণি কেন্দ্র থেকে আগুন ছড়িয়ে মাস চারেক আগে পুড়ে গিয়েছিল ফুটপাতের একাধিক দোকান। ওই আগুন লাগার পরেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, কলকাতা শহরে ফুটপাতের উপরে দোকানের স্থায়ী কাঠামো রাখা যাবে না। এমনকি প্লাস্টিক জাতীয় দাহ্য বস্তু দিয়ে দোকান ঘেরাও যাবে না।
কিন্তু ঘোষণার তিন মাস কাটতেই লর্ডস মোড়ে স্থায়ী পরিকাঠামো করে দোকান তৈরি শুরু করে দিয়েছিলেন সেখানকার হকারেরা। শুধু তাই নয়, এই দোকানগুলিই দিন পনেরো আগে আগুন লেগে পুড়ে গিয়েছিল। সেই সব পোড়া আবর্জনা সরিয়ে লোহার পিলার লাগিয়ে স্থায়ী দোকান তৈরি করলেন সেই দোকানদারেরা।
যদিও স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্তের দাবি, দোকানগুলির কোনওটিই পুরো ফুটপাত জুড়ে ছিল না। দীর্ঘ ৫০-৬০ বছর ধরে ফুটপাতের একাংশে ছিল সেগুলি। ফলে ওই দোকানগুলির হকারেরা জবরদখল করে আছেন, এমনটা বলা যাবে না।
১৪ এপ্রিল ভোরে যাদবপুর থানার অন্তর্গত প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডের উল্টো দিকে লর্ডস বাজার সংলগ্ন দোকানগুলিতে আচমকা আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে সিইএসসি এবং দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রায় দশটি ইঞ্জিন কয়েক ঘণ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। দমকল ও পুলিশ জানায়, ওই দিনের আগুনে রাস্তার ধারের বেশ কয়েকটি গুমটি দোকান পুড়ে গিয়েছে। দোকানগুলিতে মূলত তোশক তৈরির দোকান ছিল। ঘটনার দিনই বরো চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, দোকানগুলি দীর্ঘ বছর ধরে থাকলেও সেগুলি বেআইনি। কারও কোনও ট্রেড লাইসেন্স বা কিছু নেই। লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও এ বার পোড়া আবর্জনা সরিয়ে সেখানেই লোহার পিলার বসিয়ে স্থায়ী দোকান করছেন দোকানদারেরা!
কী ভাবে ফুটপাতে স্থায়ী কাঠামো করছেন হকারেরা? তাঁদের দাবি, ‘‘এক-দু’বছরের দোকান নয়। ৪০-৫০ বছরের পুরনো দোকান। এখান থেকেই তাঁদের রুজি রোজগার। ফলে ওখানে দোকান তাঁরা করবেনই।’’
এ বিষয়ে স্থানীয় ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রতন দে-র দাবি, ‘‘ফুটপাতে স্থায়ী দোকান তৈরি হচ্ছে বলে কিছুই জানি না।’’ তপনবাবু জানাচ্ছেন, বিষয়টি জানা নেই তাঁরও। আগুন লাগার দিনে তাঁর বক্তব্য থেকে সম্পূর্ণ ঘুরে তপনবাবু বলেন, ‘‘আমি কখনই বলিনি জবরদখল করে ওই দোকানগুলি তৈরি হয়েছে।’’
তাহলে কী দোকানগুলির বৈধ লাইসেন্স রয়েছে? তপনবাবুর বক্তব্য, ‘‘তা নেই। তবে এত বছর ধরে ওখানে ওঁরা দোকান করে টাকা রোজগার করছেন। ওঁদের উচ্ছেদ করা আমাদের দলের নীতি বিরুদ্ধ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওঁদের উচ্ছেদ করতে পারা যাবে না। তবে ওঁরা স্থায়ী পরিকাঠামো করছেন কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
যদিও অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে পুরসভার তরফ থেকে কী পদক্ষেপ করা হবে, সে বিষয়ে কোনও উত্তর দেননি বরো চেয়ারম্যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy