রোগী-সুরক্ষা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি উদাসীন হন, তা হলে পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়েও কি রোগীদের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব? কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক রোগীর উধাও হওয়ার ঘটনা সেই প্রশ্নই তুলে দিল।
গত সাত দিন হল কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক রোগীর খোঁজ মিলছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য তাতে বিশেষ হেলদোল নেই, উল্টে তাঁরা কখনও মন্তব্য করেছেন, ‘‘এ রকম কতই হয়।’’ আবার কখনও বা বলেছেন, ‘‘রোগী নিজের ইচ্ছায় পালিয়েছেন!’’ ওই হাসপাতালের সুপার পীতবরণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই রকম ঘটনা সব হাসপাতালেই মাঝেমধ্যে ঘটে। প্রত্যেক রোগী কোথায় যাচ্ছেন, সে দিকে নজর রাখার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই।’’
মেডিক্যাল কলেজে শিশু চুরির ঘটনার পরে সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা কী ভাবে বাড়ানো যায়, তার রূপরেখা তৈরি করতে বুধবারই তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিটির অন্যতম সদস্য স্বাস্থ্যসচিব রাজেন্দ্র শুক্ল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কোন হাসপাতালে কী পরিকাঠামো বাড়ালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো হবে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো ব্যবস্থা হবে।’’ প্রশ্ন উঠেছে, পরিকাঠামো না হয় বাড়ল, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সচেতন ও উদ্যোগী না হলে সেই পরিকাঠামো কাজে লাগাবে কে? নজরদারিই চালাবে কে? শুধু অর্থ ব্যয়ই সার হবে।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজ ওই রোগী বছর ছেচল্লিশের পার্থ চট্টোপাধ্যায়, আনন্দপুরের বাসিন্দা। তিনি গত ৬ তারিখ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। ১০ তারিখ সকালে শৌচালয়ে যাওয়ার জন্য তিনি শয্যা থেকে উঠে যান। তার পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর।
বৃহস্পতিবারও একাধিক সরকারি হাসপাতালে ঘুরে দেখা গিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে কোথাও অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয়নি। প্রসূতি বিভাগ, শিশু বিভাগ কিংবা মেডিসিন বিভাগে পরিচয়পত্র ছাড়া যে কেউ যে কোনও ওয়ার্ডে ঢুকে যাচ্ছেন। ন্যাশনাল মেডিক্যালের সিক নিউ বর্ন ক্রিটিক্যাল কেয়ারেও অবাধে ঘোরাফেরা করছেন বহু লোক। একই ছবি এসএসকেএমের শিশু বিভাগে। তবে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো হয়েছে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও ওয়ার্ডেই এখন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ইডেন হাসপাতালের সামনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy