শুধু আইফেল টাওয়ার বা লুভরের চিত্রশালার দেশ নয় সে। মহার্ঘ আঙুরের রক্ত বা মাখন-নরম হংস যকৃতেরও পীঠস্থান ফ্রান্স।
সেখানে একবারটি পা না-রাখলে না কি জীবন বৃথা মাংস বা চিজরসিকদেরও। ভোজন-রসিকদের এই আবেগ উস্কেই এ বার পর্যটকদের ডাকছে ফ্রান্স। এর জন্য কলকাতার রেস্তোরাঁর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতেও উৎসাহের অন্ত নেই।
বছর তিনেক হল, তারকা শেফ আলা দুকাসের পরিকল্পনায় শুরু হয় ফরাসি স্বাদকথা উদ্যাপন। ২১ মার্চ এখন ফরাসি স্বাদ দিবস বলে চিহ্নিত। পাঁচ মহাদেশের ২০০০ শেফের আয়োজনে নানা রেস্তোরাঁয় সে দিন বসছে, ফুল কোর্স ফরাসি নৈশভোজের আসর। উৎসবের নাম ‘গুড ফ্রান্স’। কলকাতার ১০টি তারকা হোটেলের রেস্তোরাঁ সেই উৎসবে সামিল।
এই ভোজ-আসরে ডাক পাঠাতে শহরের ফরাসি সংস্কৃতি কেন্দ্র আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্যু বেঙ্গাল-এর মাধ্যমে জমে উঠেছে অনলাইন ক্যুইজের আসর। ফ্রান্সের সুখাদ্য বা সুরা বিষয়ে টুকিটাকি জবাব দিতে পারলে ‘গুড ফ্রান্স’-এর ডিনারে দু’জনের জন্য বিপুল ছাড় মিলতে পারে। আর গোটা দেশের ক্যুইজের বিজয়ীর জন্য থাকছে, নিখরচায় ফ্রান্স সফরের হাতছানি। ‘গুড ফ্রান্স ২০১৭’ বলে নেটে খুঁজলেই বিশদে জানা যাবে।
কলকাতায় ফ্রান্সের কনসাল জেনারেল দামিয়াঁ সিয়দের কথায়, ‘‘আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের সদস্যরাও ডিনারে ছা়ড় পেতে পারেন। ফরাসি সিনেমা, গানবাজনা থেকে খাঁটি ফরাসি খানার স্বাদও আমরা পৌঁছে দিতে চাই।’’
ফরাসি বিদেশমন্ত্রকের নীতি অনুয়ায়ী, এ সব প্রকল্পই আদতে ফরাসিমুলুকে যেতে অনেককে উৎসাহিত করবে। ফ্রান্সের দাবি, পর্যটন রাজস্বের নিরিখে গোটা দুনিয়ায় এখন তারা তিন নম্বরে। ২০২০-র মধ্যে ১০০ কোটি অতিথির শৃঙ্গ ছোঁয়াই তাদের লক্ষ্য। ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রী জঁ-মার্ক এ্যয়রো তাই কখনও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বাস দিচ্ছেন, কখনও বা নানা উৎকর্ষ মেলে ধরছেন। এই প্রচারের অনেকটা জুড়েই ফ্রান্সের অশন-সংস্কৃতি। ফ্রান্সে দুনিয়ার সেরা ১০০০ রেস্তোরাঁর তালিকা পেশ করা হচ্ছে কিংবা দুনিয়া জুড়ে ফরাসি স্বাদ-উৎসবের তোড়জোড়।
দেশে-দেশে সংস্কৃতির ফারাকে ফরাসি ভোজের মেনুও অবশ্য পাল্টাচ্ছে। যেমন, কলকাতার কিছু চমৎকার শাকাহারী স্যালাডের সঙ্গে আমিষে ভেটকি-স্যামন মেছো পদের পাল্লা ভারী। ডেজার্ট বৈচিত্র্যও জমাটি। ওবেরয় গ্র্যান্ড, তাজের চেম্বার্সের মতো সাবেক খাদ্যতীর্থের সঙ্গে ফরাসি মেনুতে লড়ছে পার্কের দ্য ব্রিজ, হায়াতের লা কুচিনা, আইটিসি সোনার, নয়া সাজের গ্রেট ইস্টার্ন, নোভোটেল, সুইসোতেল, গেটওয়ে, ম্যারিয়টরা।
শুধুই ছবির দেশ, কবিতার দেশ নয়। সুরা ও স্বাদের দেশও তো ফ্রান্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy