প্রতীকী ছবি।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা। গোপালনগর মোড়ের দোকানে চা খাচ্ছেন জেল সুপার শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষ। অনতিদূরে সুপারের বাড়ির পিছনে অন্ধকারে গাড়ির মধ্যে বসে ডিআইজি বিপ্লব দাস। রোজকার মতো আলিপুর সংশোধনাগারের সামনে থেকে তল্লাশি চালিয়ে কলকাতা পুলিশের দল বেরিয়ে গিয়েছে। তবে ডিআইজি ও সুপারের কাছে খবর, রাতের ডিউটিতে আসবেন যে চিকিৎসক তাঁর ব্যাগে ‘বহু জিনিস’ রয়েছে।
কারা দফতরের এক কর্তা জানান, রাত ১০টা ৪০ মিনিটে একটি বেসরকারি গাড়ি থেকে নামেন চিকিৎসক অমিতাভ চৌধুরী। খোলা হয় আলিপুর জেলের সদর দরজা। ডিআইজি এবং সুপার তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে ঢুকে যান। ডিআইজি গেটের ডিউটিতে থাকা কারাকর্মীকে নির্দেশ দেন, সদর দরজায় তালা দিতে। দেহ তল্লাশির পরে চিকিৎসকের ব্যাগ তল্লাশির নির্দেশ দেন ডিআইজি।
সে সময় উপস্থিত এক কারাকর্মী জানান, এর পরেই বেঁকে বসেন অমিতাভ। কেন তাঁর ব্যাগ তল্লাশি হবে জানতে চান। এমনকি সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে যাবেন বলেও জানান সুপার এবং ডিআইজি-কে। কিন্তু কারাকর্মীরা ব্যাগ খুলে দেখেন, ব্যাগের ভিতরে প্রচুর ব্লেড, মোবাইল, চার্জার, ছুরি, কাঁচি, গাঁজা, মদ এবং লক্ষাধিক টাকা। এর পরেই পুলিশ গ্রেফতার করে অমিতাভকে। সোমবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে ১৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
আলিপুর সংশোধনাগারে কর্মরত এক কর্মীর কথায়, ‘‘ধৃত চিকিৎসক আগেও ব্যাগ নিয়ে ঢুকতেন। খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক বন্দি তার ব্যাগ গেট থেকে হাসপাতালে নিয়ে যেত। সম্প্রতি ওই বন্দিকে মেদিনীপুরে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই সে প্রভাব খাটিয়ে দমদম সংশোধনাগারে চলে আসে।’’ এক কারাকর্তার কথায়, ‘‘সে দিন কেউ ব্যাগ তুলে নিয়ে যায়নি। উচ্চপদস্থ কর্তারা দরজায় থাকায় ধরা পড়েছেন ওই চিকিৎসক।’’
কারা দফতর সূত্রের খবর, আলিপুর জেলে চার জন চিকিৎসক রয়েছেন। তার মধ্যে অমিতাভবাবু-সহ তিনজনই চুক্তিতে কাজ করেন। কারা দফতরের এক শীর্ষকর্তা জানান, অমিতাভ দিনে অন্য কাজ করতেন। তাই রাতের ডিউটি নিতেন। এক কারাকর্মী জানান, গত বছর পুজোর সময়েও জেলে মদের বোতল পাওয়া যায়। বন্দিরা জানিয়েছিল, অমিতাভই তা দিয়েছেন। কিন্তু তখন ধরা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy