কেউ বলছেন তাঁকে ভুল বুঝিয়ে ডেকে আনা হয়েছে। কেউ বলছেন তিনি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী, তাই কোনও কাগজে সই করবেন না। তবে ছাড়ার পাত্র নন তদন্তকারীরাও। তাঁদের সাফ কথা, কারখানা চত্বরে দাঁড়িয়ে সই না করলে ভবানী ভবনে সই করতে ডাকা হবে। সেই ধমকেই চিঁড়ে ভিজল। সিআইডি-র সদর দফতরের নাম শুনেই পরিদর্শন সংক্রান্ত নথিতে সই করতে বাধ্য হলেন জেসপের প্রতিনিধিরা।
সোমবার সকালে সিআইডি, রেল, ভেল (ভারত হেভি ইলেকট্রিকল্যাল লিমিটেড) এবং জেসপের প্রতিনিধিরা যৌথ ভাবে জেসপ পরিদর্শনে যান। এর আগে গত ডিসেম্বরেই সব পক্ষকে জেসপ পরিদর্শন করে তালিকা দিতে বলা হয়। আদালত জানাতে চায় সেখানে কাদের, কত টাকার সম্পত্তি, কী অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই মতো গত ১৬ ডিসেম্বর সব পক্ষ কারখানায় গেলেও উপস্থিত ছিলেন না জেসপের তরফে কেউই।
এ দিন অবশ্য জেসপের দুই প্রাক্তন কর্তা হেমেন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কমলকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়কে কারখানায় ডেকে পাঠিয়েছিল সিআইডি। নোটিস দিয়ে ডেকে আনা হয় সৌমিত্র ঘোষ নামে আর এক জনকেও। যিনি নিজেকে জেসপের কর্মী নন বলেই সিআইডির কাছে দাবি করেছেন। ওই তিন জনকে সঙ্গে নিয়েই সিআইডি, রেল ও ভেল-এর প্রতিনিধিরা কারখানা পরিদর্শন করেন। রেল ও ভেল-এর প্রতিনিধিরা জেসপের প্রতিনিধি হয়ে আসা লোকজনকে দেখিয়ে দেন, কারখানায় পড়ে থাকা বহু যন্ত্রাংশই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে।
হেমেনবাবু ও কমলকৃষ্ণবাবু সিআইডি-র কাছে দাবি করেন, তাঁরা তিন বছর আগে অবসর নিয়েছেন। অন্য দিকে সৌমিত্রবাবু সিআইডিকে জানান, তিনি জেসপে কোনও দিনই চাকরি করেননি। সিআইডি-র কর্তারা অবশ্য ওই তিন জনের দাবি মানতে চাননি।
এ দিকে সোমবারই জেসপ মালিক পবন রুইয়াকে ব্যারাকপুর এসিজেএম আদালতে হাজির করে সিআইডি। কামানো দাড়ি, কপালে তিলক, ধোপদুরস্ত পোশাকেই আদালতে আসেন রুইয়া। প্রথমে তাঁর আইনজীবী রঞ্জন দাস জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল নিজেই এসিজেএম ময়ুখ মুখোপাধ্যায়ের সামনে নিজের জন্য সওয়াল করবেন। কিন্তু পরে রঞ্জনবাবু জানান, তাঁর মক্কেলের কথা বলার মতো শারীরিক সুস্থতায় নেই। যদিও সরকারি কৌঁশলি পল্লব চৌধুরী পাল্টা দাবি করেন, ‘‘এ সবই তথ্য ধামা চাপা দেওয়ার নাটক।’’ এ দিন এসিজেএমের এজলাসে দমকলের দায়ের করা আগুন লাগানোর মামলা ও সিআই়ডি-র দায়ের করা চুরি ও তথ্য লোপাটের মামলাটির শুনানি ছিল। দমকলের দায়ের করা মামলাটিতে রুইয়াকে দু’দিনের পুলিশি হেফাজত ও দ্বিতীয় মামলাটিতে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।