Advertisement
০৬ মে ২০২৪
ওয়েলেসলি পার্ক

লকার থেকে গয়না ‘উধাও’ ঘিরে রহস্য

ব্যাঙ্কের লকার থেকে উধাও সোনার গয়না! সোমবার পার্ক স্ট্রিট থানায় এমনই অভিযোগ করেছেন মহম্মদ জাহাঙ্গীর। ওয়েলেসলি পার্কের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর পেশায় ফল ও জুতোর ব্যবসায়ী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৭:২৪
Share: Save:

ব্যাঙ্কের লকার থেকে উধাও সোনার গয়না! সোমবার পার্ক স্ট্রিট থানায় এমনই অভিযোগ করেছেন মহম্মদ জাহাঙ্গীর। ওয়েলেসলি পার্কের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর পেশায় ফল ও জুতোর ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, গত চার বছর ধরে তিনি এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওয়েলেসলি পার্কের শাখায় দু’টি লকারে সোনার গয়না রাখছিলেন। শেষ বার রেখেছিলেন গত এপ্রিলে। তাঁর দাবি, এ ভাবে ওই দু’টি লকারে প্রায় দুই কিলোগ্রাম সোনার গয়না রাখা হয়েছিল। কিন্তু ৭ জুন লকার খুলে তিনি দেখেন, উধাও হয়ে গিয়েছে সমস্ত সোনার গয়না!

তার পরেই ১৯ জুন রাতে তিনি পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেন। ব্যাঙ্কের তরফে বলা হয়েছে, লকারগুলিতে যে ধরনের নিরাপত্তা থাকে সেখান থেকে এই রকম ঘটনা হওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ প্রতিটি ব্যাঙ্কেই লকার খুলতে দু’টি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি থাকে ব্যাঙ্কের কাছে। অন্যটি গ্রাহকের কাছে। প্রথমে ব্যাঙ্কের চাবি লকারে ঢুকিয়ে ঘোরাতে হয়। তার পরে গ্রাহকের কাছে থাকা চাবি দিয়ে লকার খোলা হয়। ফলে কোনও এক জনের পক্ষে তা খোলা অসম্ভব। জাহাঙ্গীরের চাবি তাঁর সঙ্গেই রয়েছে। তাই ব্যাঙ্কের দাবি, ওই চাবি ছাড়া লকার খোলা অসম্ভব।

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কী করে খোলা হল লকার? এমনকী, ঘটনার ১২ দিন পরে কেন জাহাঙ্গীর পুলিশের কাছে গেলেন?

জাহাঙ্গীর জানান, সাড়ে চার বছর আগেও এক বার ওই লকার থেকে তাঁর সোনার গয়না চুরি হয়েছিল। কিন্তু সে বার তিনি পুলিশকে কিছু জানাননি। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাঙ্কের লকার থেকেই যে সে বার গয়না উধাও হয়েছে, সে রকম কোনও প্রমাণ আমার কাছে ছিল না। তাই পুলিশে অভিযোগ করিনি।’’

কিন্তু এ বারেও কি কোনও প্রমাণ রয়েছে? তাঁর দাবি, ‘‘এ বারেও তা নেই। আগের বার লকারের থেকে কিছু গয়না পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু এ বারে গোটা লকারই খালি। ফলে এ বার আমি নিশ্চিত যে, ব্যাঙ্ক থেকেই গয়না চুরি গিয়েছে।’’ জাহাঙ্গীর জানান, যত বার তিনি ব্যাঙ্কে গয়না রেখেছেন, তত বারই তাঁর সঙ্গে এক কর্মচারীকে নিয়ে গিয়েছেন। ৭ জুন সেই কর্মচারীকে নিয়েই গয়না রাখতে যান। তিনি বলেন, ‘‘দেখি, দু’টি লকারে আমার নিজের যে তালা ঝোলানো ছিল তা নেই। তখনই সন্দেহ হয় অঘটন কিছু ঘটেছে। একটি লকার খুলে দেখি সমস্ত গয়না উধাও।’’ তার পরে দ্বিতীয় লকার খোলার সময়ে ব্যাঙ্কের এক কর্মচারীকে ডেকে নেওয়া হয়। ব্যাঙ্ককর্মীর সামনেই লকার খুললে সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তাঁর।

ব্যাঙ্কের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ঝুলিয়ে রাখা তালা ভেঙে লকার থেকে গয়না চুরি করার কোনও সম্ভাবনা নেই। লকারের বাইরে ঝোলানো তালা দেওয়া বা না দেওয়ার উপরে লকারের নিরাপত্তা নির্ভর করে না। কারণ লকারের ভিতরে

যে ‘লকসিস্টেম’ রয়েছে সেটাই প্রধান। যা খুলতে হলে লকার ব্যবহারকারী ও ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের দু’জনেরই সাহায্যের প্রয়োজন। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক নিজস্ব তদন্ত শুরু করেছে।

আর এই ঘটনার তদন্তে নেমে কার্যত হোঁচট খেতে হচ্ছে পুলিশকে। কারণ নিয়ম অনুয়ায়ী কোনও ব্যক্তি লকারে কী রাখছেন তার বিবরণ ব্যাঙ্কের কাছে থাকে না। ফলে জাহাঙ্গীর যতটা গয়না চুরি গিয়েছে বলে দাবি করছেন, তার কোনও প্রামাণ্য নথি পাওয়াও মুশকিল বলে মনে করছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

locker Jewelry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE