Advertisement
E-Paper

পথে চাই নিরাপত্তা, দাবি দুই স্কুলের

শনিবারের ওই দুর্ঘটনার পরে শ্রী শম্ভু সদন বিদ্যালয় নামে পাশের স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেল, পথ-নিরাপত্তা নিয়ে ছাত্রদের সতর্ক করছেন শিক্ষকেরা। স্কুল শুরুর সময়ে প্রার্থনার পরেও ওই কর্মসূচি চলছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৭
আহত অঞ্জলি মাহাতো। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র

আহত অঞ্জলি মাহাতো। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র

আগেও একাধিক বার উঠেছে। শনিবার সাতসকালে পথ দুর্ঘটনায় এক ছাত্রীর মৃত্যুর পরে ফের প্রশ্ন উঠে গেল তারাতলা এলাকার পথ-নিরাপত্তা নিয়ে।

তারাতলা রোডের অনেকটা অংশ জুড়ে এখন রাস্তার কাজ চলছে। ফলে যাতায়াতের পরিসর কমেছে খানিকটা। ওই এলাকায় আনুমানিক পাঁচশো মিটারের ব্যবধানে দু’টি স্কুল রয়েছে। তারই একটির অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত পথ দুর্ঘটনায় মৃত সুহানি গুপ্ত। ওই স্কুলের সামনের ফুটপাত এখন কার্যত অবরুদ্ধ। অন্য স্কুলটির সামনে আলাদা করে কোনও ফুটপাতই নেই। ট্র্যাফিক সিগন্যাল তো দূর, স্কুল শুরু বা ছুটির সময়ে এক জন ট্র্যাফিক পুলিশও সেখানে থাকেন না বলে অভিযোগ দু’টি স্কুলেরই।

সুহানি যে স্কুলে পড়ত, সেই টাঁকশাল বিদ্যাপীঠে পড়ুয়াদের মোট সংখ্যা তিন হাজারের কাছাকাছি। প্রাথমিক শাখায় সংখ্যাটা প্রায় ৫০০। মেয়েদের শাখার প্রধান শিক্ষিকা বন্দনা মিশ্রের কথায়, ‘‘তারাতলা থানায় বারবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। এক বার চিঠি দেওয়ার পরে চার-পাঁচ দিনের জন্য ট্র্যাফিক পুলিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরে তাঁদের আর দেখা যায় না। কোনও ট্র্যাফিক সিগন্যাল নেই স্কুলের সামনে। আগেও এই স্কুলের দুই ছাত্রী দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল। থানায় বলে তো কোনও লাভ হয়নি! আগামী সপ্তাহে লালবাজারে যাব! দেখা যাক, কী হয়!’’

বিদ্যাপীঠের দিবা শাখার প্রধান শিক্ষক অরুণ ঝা বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসাতে হয়েছে। ফুটপাত অবরুদ্ধ। হাঁটাচলার জায়গা নেই। তার উপরে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। পুলিশকে বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।’’

সতর্কবার্তা: দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই একটি স্কুলে পথ নিরাপত্তার পাঠ দিচ্ছেন শিক্ষকেরা।

শনিবারের ওই দুর্ঘটনার পরে শ্রী শম্ভু সদন বিদ্যালয় নামে পাশের স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেল, পথ-নিরাপত্তা নিয়ে ছাত্রদের সতর্ক করছেন শিক্ষকেরা। স্কুল শুরুর সময়ে প্রার্থনার পরেও ওই কর্মসূচি চলছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নরেন্দ্রমোহন সিংহ বললেন, ‘‘আমাদের ছাত্র-সংখ্যা প্রায় ৬০০। স্কুলের সামনে সিগন্যাল বা ট্র্যাফিক পুলিশ থাকা উচিত। ফুটপাতও নেই। বেশির ভাগ ছাত্রই সাইকেলে যাতায়াত করে। তাদের নিরাপত্তার দিকটা তো দেখা উচিত। পুলিশকে বারবার বলেও কাজ হয়নি। তাই নিজেরাই ছাত্রদের সতর্ক করার চেষ্টা করছি।’’

তবে কলকাতা পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই রাস্তা তো বন্দরের। আমরা ওখানে ফুটপাত করব কী ভাবে?’’ প্রশ্ন উঠেছে, টাঁকশাল বিদ্যাপীঠের সামনে ফুটপাত থাকলেও তা তো অবরুদ্ধ! স্কুল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে অভিযোগও করছেন। সে ক্ষেত্রে কিছুই কি করণীয় নেই? পুরসভার সংশ্লিষ্ট ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার খান বলেন, ‘‘এই ঘটনার পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ওই এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথা বলে গার্ডরেল বসানো হবে। যাতে পথচারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন।’’ কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার অবশ্য বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে আমরা ওই এলাকায় সমীক্ষা করে এসেছি। বন্দর কর্তৃপক্ষকে বর্ষার মরসুম আসার আগেই রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করে ফেলতে বলা হয়েছে।’’

এ দিনের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে সুমিতবাবুর দাবি, শম্ভু সদনের সামনে ট্র্যাফিক সিগন্যালে নিয়মিত পুলিশ থাকে। তবে এ দিন ঘটনাটি ঘটেছে ট্র্যাফিক সিগন্যাল থেকে কিছুটা দূরে। সিসিটিভি-তে দেখা গিয়েছে, দুই ছাত্রী রাস্তার বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে পাশাপাশি সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ পিছন থেকে বিশাল ক্রেন চলে এসে হর্ন বাজায়। তাতেই হতচকিত হয়ে পড়ে যায় এক ছাত্রী। ক্রেনের পিছনের চাকা তাকে পিষে দেয়।

Accident Anjali Mahato সুহানি গুপ্ত তারাতলা Road Safety
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy