প্রতীকী ছবি।
সোনারপুরে অ্যাপ ক্যাবচালক খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে ফোনের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হল পাঁচ জনকে। শনিবার ভোরে নদিয়ার কল্যাণী থেকে ধরা হয় চক্রের অন্যতম সদস্যকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের তিন জন বাংলাদেশি এবং দু’জন নাবালক, সোনারপুরের বাসিন্দা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এর পিছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের হাত।
ধৃত তিন বাংলাদেশির নাম চয়ন বিশ্বাস, দীপঙ্কর দত্ত এবং আতা এ রাব্বি। অন্য দুই নাবালক সোনারপুরেরই একটি স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র। চয়নের বাড়ি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে, বর্তমানে নদিয়ার কল্যাণীতে থাকে। দীপঙ্কর এবং আতার বাড়ি বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জে। এই দু’জনে সোনারপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ৮ মে শিয়ালদহ এলাকার একটি অ্যাপ ক্যাবের কিয়স্ক থেকে পরিচয়হীন সিম ব্যবহার করে ধৃত পাঁচ জন সাত আসনের একটি গাড়ি বুক করে। সাধন হালদার (২৫) নামে ওই চালকের গাড়িতে উঠেই পাঁচ জন নিজেদের মোবাইল বন্ধ করে দেয়। পাটুলিতে গাড়ি ঢুকতেই যে সিম থেকে ক্যাব বুক হয়েছিল, সেটিও বন্ধ করা হয়। গাড়ি সোনারপুরের খেয়াদহে পৌঁছলে প্রথমে তারা নামে। কিছু সময় পরে চয়ন চালকের পাশে বসে। মাঝের আসনে দীপঙ্কর এবং আতা, পিছনে বসে দুই নাবালক। অতর্কিতে ক্যাব চালকের পিছন থেকে দীপঙ্কর গলা টিপে ধরে। ক্রমাগত কিল, ঘুষিতে সাধন কাহিল হলে তাঁকে গলা টিপে খুন করা হয়। এর পরে দেহটি খালে ফেলে তারা গাড়ি নিয়ে রওনা দেয়। তখন চালকের আসনে বসে সাধন।
যে সিম থেকে গাড়িটি বুক করা হয়েছিল গাড়ির ক্রেতা খুঁজতে সেটি বানতলার কাছ থেকে চালু করা হয়। এর পরেই তারা ডানকুনির উদ্দেশে রওনা দেয়। সেখানে গিয়ে ক্রেতার দেখা না পেয়ে পরিচিত এক জনের গ্যারাজে গাড়ি রেখে স্টেশনে যায়। পাঁচ জনকে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরতে দেখে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের রাজমিস্ত্রির পরিচয় দিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ দিকে, ৯ তারিখ বুধবার, খাল থেকে উদ্ধার হয় ক্যাবচালকের দেহ। আগের রাতে তাঁর পরিবারের করা নিখোঁজ ডায়েরির ভিত্তিতে পরিচয় জানা যায়। শুরু হয় তদন্ত। ক্যাবের শেষ বুকিং-এর সূত্র ধরে পরিচয়হীন সিমটি ট্র্যাক করা হয়। দেখা যায়, ওই সিম থেকে অন্য একটি নম্বরে ফোন করা হয়েছে। তদন্তে জানা যায় অন্য নম্বরটি আসলে এক নাবালকের। এর পরেই ১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার তাকে তুলে আনে পুলিশ। তাকে জেরা করতেই বেরিয়ে আসে অন্য নাম। শুক্রবার রাতে আটক চার জনকে নিয়ে চয়নের খোঁজে যায় পুলিশ। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় চয়নকে। খোঁজ মেলে চুরি যাওয়া ক্যাবটির। উদ্ধার হয়েছে কয়েক হাজার টাকা, পাঁচটি মোবাইলও।
বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘একটি আন্তর্জাতিক গাড়ি পাচার চক্রের কয়েক জনকে ধরা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে অন্যদের খোঁজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy