Advertisement
০২ মে ২০২৪
Firhad Hakim

বর্ষাতি-পোশাক বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন মেয়র

মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) সন্দীপন সাহা জানান, সজল যে দরপত্রের কথা বলছেন, তা ঠিক নয়। অন্য খাত থেকে স্কুলপড়ুয়াদের জন্য সামগ্রী কেনার ঘটনায় অডিট, ভিজিল্যান্স তদন্ত করছে।

An image of Firhad Hakim

মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:০৮
Share: Save:

দরপত্র ছাড়াই কলকাতা পুর স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকার বর্ষাতি ও স্কুলপোশাক কেনার গরমিলের বিষয়টি আগেই পুরসভার অডিটে ধরা পড়েছিল। শনিবার বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুরসভার মাসিক অধিবেশনে এই দাবি করে বলেন, ‘‘‘কোনও সংবাদমাধ্যম বা বিরোধী দলের কথা মতো নয়, শিক্ষা দফতরের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ আসার পরেই আমি বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। একইসঙ্গে পুরসভার ভিজিল্যান্সে অভিযোগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আধিকারিকদের শো কজ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর নীতি মেনে আমরা কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না।’’

দরপত্র ছাড়াই পড়ুয়াদের জন্য বিপুল টাকার পোশাক ও বর্ষাতি কেনার বিষয় নিয়ে জানতে চেয়ে পুর শিক্ষা দফতরের কাছে আগেই চিঠি দেন রেসিডেন্ট অডিট অফিসার। তা নিয়ে গত মাসে পুরসভার মাসিক অধিবেশনে প্রস্তাব রেখেছিলেন সজল। কিন্তু ওই অধিবেশনে মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অনুপস্থিত থাকায় চেয়ারপার্সন মালা রায় জানান, পরবর্তী মাসিক অধিবেশনে ফের প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হবে। শনিবার ফের সেই প্রস্তাব তুলে সজল অভিযোগ করেন, ‘‘দরপত্র ছাড়াই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্কুলপড়ুয়াদের জন্য যে পদ্ধতিতে বর্ষাতি ও স্কুলপোশাক কেনা হয়েছিল, তা পুরসভার গরিমা নষ্ট করে। এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পুরসভার সমস্ত পুরপ্রতিনিধিদের অবগত করা হোক এই অধিবেশনে।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি গিয়েছে। তিন জন নীচের তলার আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও যে মেয়র পারিষদ সই করেছেন, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?’’

এ দিন শিক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে সজলের প্রস্তাবটি অধিবেশনের শেষ প্রস্তাব ছিল। তার প্রায় ৩০ মিনিট আগে তৃণমূল ও বিজেপি পুরপ্রতিনিধিদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় অধিবেশন প্রায় ১৫ মিনিট স্থগিত ছিল। অভিযোগ, সজল কিছু বলতে উঠলে তাঁকে হাত দিয়ে ঠেলে দেন তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি অসীম বসু। অসীমও সজলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন, তাঁকে চোর বলেছেন সজল। অধিবেশনের শেষে প্রস্তাবটি বলার পরেই সজল চেয়ারপার্সনকে জানান, তাঁর প্রতি আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ করে তিনি এবং আরও দু’জন বিজেপি পুরপ্রতিনিধি অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে চলে যাবেন। চেয়ারপার্সন তাঁদের উত্তর শুনে যেতে বললেও তাঁরা শোনেননি।

মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) সন্দীপন সাহা উত্তরে জানান, সজল যে দরপত্রের কথা বলছেন, তা ঠিক নয়। অন্য খাত থেকে স্কুলপড়ুয়াদের জন্য সামগ্রী কেনার ঘটনায় অডিট, ভিজিল্যান্স তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পুরবোর্ড কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। এই ঘটনায় কোনও আধিকারিক, কর্মী দোষী সাব্যস্ত হলে পুরসভা কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’ মেয়র ফিরহাদ বলেন, ‘‘যাঁরা অধিবেশন কক্ষ গরম করার জন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, তাঁদের তীব্র ধিক্কার জানাই। মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) কোনও দোষ না করায় কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব? আমি তো আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE