পলিমাটির হিসেব মিলছে না!
পুর নথি অনুযায়ী, গত তিন বছরে ধাপা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিকাশি দফতরের ফেলা জঞ্জালের পরিমাণ এক লক্ষ মেট্রিক টনের মতো। অথচ মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ পুরসভার গত মাসিক অধিবেশনে জানিয়েছেন, মাটির তলা থেকে তিন বছরে তিন লক্ষ মেট্রিক টন পলিমাটি (সিল্ট) তোলা হয়েছে। পুর মহলেই প্রশ্ন উঠেছে, বাকি ২ লক্ষ মেট্রিক টন পলিমাটি গেল কোথায়?
তারকবাবুর দাবি, ‘‘বড় গাড়িতে করে পলিমাটি ফেলা হয় ধাপায়। আর ছোট গাড়িতে তা ফেলা হয় রাস্তার পাশের ভ্যাটে। পরে ধাপায় যায়। যার হিসেব ধাপায় আলাদা করে থাকে না।’’ যদিও ধাপার এক অফিসারের কথায়, প্রথমত, সব জঞ্জালেরই হিসেব রাখা হয় ধাপায়। আর রাস্তার পাশে ভ্যাট তো এখন প্রায় নেই বললেই চলে। তা হলে টন টন জঞ্জাল ফেলার প্রশ্ন আসে কী করে?’’ যদিও তারকবাবুর দাবি, ‘‘যা বলেছি সেটাই ঠিক। অন্যেরা মিথ্যা হিসেব দিচ্ছেন।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের ১ থেকে ১০০ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত এলাকায় নিকাশি নালার বেশির ভাগটাই ভূগর্ভস্থ। নিকাশি দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ৮-১০ বছর আগেও বৃষ্টি হলেই শহরে জল জমত। নিকাশি নালার মুখ বন্ধ থাকায় বৃষ্টিতে সমস্যা বাড়ত। তারকবাবুর দাবি, তাঁর আমলে গত তিন বছরে ডি সিল্টিং মেশিন-সহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিকাশি নালা থেকে পলিমাটি বের করা হয়েছে। এবং তার ফলেই বৃষ্টির পরে রাস্তায় জমে থাকা জল দ্রুত নিকাশি নালার মাধ্যমে বের হচ্ছে। পুর অধিবেশনে তারকবাবু বলেছিলেন, ‘‘কলকাতা শহরে ৩ বছরে ৩ লক্ষ মেট্রিক টন সিল্ট পরিষ্কার করেছি যাতে নদর্মার পাইপগুলোর মধ্যে জলধারণ ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে কলকাতায় জল জমছে না।’’
ধাপার এক অফিসার জানান, কোন দফতর থেকে কত পরিমাণ জঞ্জাল আসে তার রেকর্ড থাকে। ওই রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, ২০১৫-১৬ সালে ৪৯ হাজার ৫০০, ২০১৬-১৭ সালে ৩২ হাজার এবং ২০১৭-১৮ সালে ২৮ হাজার মেট্রিক টন জঞ্জাল ধাপায় ফেলেছে নিকাশি দফতর। সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিক টনের মতো।
তা হলে? আপাতত, পলিমাটি ফেলার হিসেব নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে পুরমহলে।