Advertisement
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জলাভূমি ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ

উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত বুজিয়ে ফেলা জলাভূমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

সেই জায়গা পরিদর্শনে বিশেষজ্ঞ দল। — ফাইল চিত্র।

সেই জায়গা পরিদর্শনে বিশেষজ্ঞ দল। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৩
Share: Save:

উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত বুজিয়ে ফেলা জলাভূমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। ওই জলাভূমি বেআইনি ভাবে বুজিয়ে ফেলা হয়েছে বলে কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলায় সোমবার বিচারপতি প্রতাপকুমার রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যুগ্ম রিপোর্ট মেনে ওই জলাভূমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। ওই জলাভূমির উপরে নতুন নির্মাণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।

এ ব্যাপারে পূর্ত দফতর ও দক্ষিণ দমদম পুরসভার আইনজীবীরা আদালতে জানান, এত বড় কাজ কী ভাবে করা যেতে পারে, সেটা ঠিক করার জন্য সময় প্রয়োজন। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন বলেছে, কী ভাবে এই কাজ করা হবে সে ব্যাপারে রিপোর্ট তৈরি করে পূর্ত দফতর ও পুরসভাকে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে।

এ দিন মামলার শুনানির শুরু হতেই আবেদনকারীর আইনজীবী অনিন্দ্য লাহি়ড়ি আদালতে ছবি-সহ তথ্য পেশ করে জানান, ২০১১ সালেও উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত ভিআইপি রোডের পূর্ব দিকে টানা জলাভূমি ছিল। সেই জলার পাশে বড় বড় বহুতল তৈরি হয়েছে। বহুতলের সামনের রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে জলাভূমি ভরাট করা হয়েছে। ওই এলাকায় জলাভূমি ছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছে পুরসভা ও পূর্ত দফতরও। এ দিন সেই জলাভূমির প্রসঙ্গে বিচারপতি প্রতাপকুমার রায় বলেন, ‘‘জলাভূমির গুরুত্ব কী, সেটা সকলেই জানে। জলের ধারার কোথাও বাধা পাওয়া উচিত নয়। পুরসভা কিংবা পূর্ত দফতরের জলাভূমি ফিরিয়ে দিতে আশা করি কোনও আপত্তি নেই।’’ বিচারপতির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন পূর্ত দফতরের আইনজীবী বিকাশ করগুপ্ত ও পুরসভার আইনজীবী অমলেশ রায়।

পরিবেশ আদালত যে জলাভূমি ফিরিয়ে দিতে পারে তা অবশ্য আগে থেকেই আঁচ করেছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার কর্তাদের একাংশ। ঘনিষ্ঠমহলে সে কথা জানিয়েও ছিলেন তাঁরা। তবে জলাভূমি ফিরিয়ে দিলে ওই বহুতলগুলির সঙ্গে যাতায়াতের পথ ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, সে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন ওই পুরকর্তারা। এ দিন পরিবেশ আদালতে সে প্রসঙ্গ উঠেছে। যাতায়াতের জন্য ওই জলাভূমির উপরে ছোট ছোট সেতু নির্মাণ এবং জলাভূমির তলা দিয়ে নিকাশির পাইপ বসানো যায় কি না, তা পুরসভা ও পূর্ত দফতরের কাছে জানতে চেয়েছে পরিবেশ আদালত।

ভিআইপি রোডের ধারে জলাভূমি বোজানো নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছিল বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি। সেই রিপোর্টের কথা বিধানসভায় তোলেন নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই ব্যাখ্যা ছিল, বুজিয়ে ফেলা জলাভূমির এলাকা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর খাসতালুক বলেই পরিচিত। দলের অন্দরে সব্যসাচীবাবুর সঙ্গে সুজিতবাবুর সম্পর্কও যথেষ্ট ‘মধুর’। তাই রিপোর্টের কথা সব্যসাচীবাবু জোরালো ভাবে তুলেছিলেন। যেমন পাল্টা হিসেবে সুজিতবাবু তুলেছিলেন নিউটাউনের সিন্ডিকেট-রাজের কথা। এ দিন আদালতের নির্দেশের কথা শুনে সব্যসাচীবাবুর মন্তব্য, ‘‘এটা তো হওয়ারই ছিল। আমরা কেউ আইনের উর্ধ্বে নই।’’ সুজিতবাবু অবশ্য আদালতের নির্দেশের কপি না দেখে মন্তব্য করতে চাননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Laketown Ultadanga National Green Tribunal water body VIP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy