Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩

পড়ুয়া টানতে নতুন ভাবনা শহরের স্কুলে

যে পড়ুয়া চারা বসাবে, সেই গাছের নাম হবে তার নামেই। সে জন্য চারা ঘিরে দিয়ে লেখা হচ্ছে পড়ুয়ার নাম। পাশাপাশি সেই চারাকে গাছে পরিণত করতে পরিচর্যার দায়িত্বও থাকছে খুদেদের উপরেই।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৫৪
Share: Save:

যে পড়ুয়া চারা বসাবে, সেই গাছের নাম হবে তার নামেই। সে জন্য চারা ঘিরে দিয়ে লেখা হচ্ছে পড়ুয়ার নাম। পাশাপাশি সেই চারাকে গাছে পরিণত করতে পরিচর্যার দায়িত্বও থাকছে খুদেদের উপরেই।

Advertisement

স্কুলছুট কমাতে এবং সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়াতে এ ভাবেই তাদের দিয়ে বাগান করানোর মতো নানা সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কলকাতার কয়েকটি সরকারি, সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যম স্কুল এ ভাবে পড়ুয়া টানতে চেষ্টা চালাচ্ছে। কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠ, গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস গার্লস হাইস্কুল, বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের এই পদক্ষেপে জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরে আলোচনা শুরু হয়েছে।

কাটজুনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতার জানান, এক সময়ে স্কুলে পড়ুয়ারা ভর্তিই হতে চাইত না। গত দু’বছর ধরে পঠনপাঠন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ করে পড়ুয়াদের কাছে স্কুলের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো গিয়েছে। স্কুল চত্বরে পড়ুয়াদের চারা বসানোর পরামর্শ, তার পরিচর্যা করে ফল-ফুল ধরায় উৎসাহ পাচ্ছে পড়ুয়ারা। এতে হাতেকলমে শিক্ষার পাশাপাশি গাছের প্রতি স্নেহ তৈরি হচ্ছে। স্কুলছুট রুখতে ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানা এলাকার পিয়ালী গ্রামে গিয়ে রীতিমতো লিফলেট বিলি করে পড়ুয়াদের এই স্কুলে ভর্তি করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন শিক্ষকেরা। যার ফলে দেখা যাচ্ছে, চলতি শিক্ষাবর্ষের শেষে পড়ুয়া প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

একই ভাবে গার্ডেনরিচের নুটবিহারী দাস গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য জানান, ডিসেম্বরের প্রথমে যাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়, তাদের লম্বা ছুটি শুরু হয়। জানুয়ারিতে ফের ক্লাসে আসে তারা। দেখা গিয়েছে, লম্বা ছুটির ফলে স্কুলের সঙ্গে পড়ুয়াদের সম্পর্ক আলগা হয়ে যায়। যার ফলে বাড়ে স্কুলছুট। তাই ওই ছুটির সময়ে ছাত্রীদের দিয়ে বাগান করাতে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আঁকা, প্রতিরক্ষার পাঠ, বাগান করা, স্কুল সাজানোর মতো নানা কাজে যুক্ত করা হচ্ছে তাদের। এ ভাবেই স্কুলে আসার ঝোঁক তৈরি করা হচ্ছে পড়ুয়াদের।

Advertisement

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, ‘‘স্কুলের ভিতরে ঢুকেই যে বড় জায়গা রয়েছে, সেই পুরো বাগানের পরিচর্যা করে ছাত্রীরাই। ওরা গাছগুলির উপকারিতা ও বিস্তারিত তথ্য নিয়ে প্রোজেক্টও করেছে। ভালবাসা দিয়ে গাছগুলি প্রতিপালন করে ওরা। এতে বাড়তি উৎসাহ পায়।’’

সম্প্রতি, কলকাতায় প্রাথমিক শিক্ষকদের এক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, স্কুলছুট কমেছে। কিন্তু তা নির্মূল করতে শিক্ষকদের উদ্যোগী হতে হবে। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, সবুজসাথী প্রকল্পের পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার চেহারা আমূল বদলে যাবে বলে দাবি দফতরের এক কর্তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.