Advertisement
E-Paper

জলের দামে ‘পুকুর চুরি’ রুখতে নয়া উদ্যোগ

বাজার থেকে যে বোতলবন্দি জল কেনা হয়, তার দামের কোনও মাপকাঠি নেই। ক্রেতাদের ‘ঠকিয়ে’ বিপুল মুনাফা করে পানীয় জল প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি।

স্যমন্তক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৮ ০১:৪৩

কথায় বলে, জলেই গেল টাকা। কিন্তু, তা যে আক্ষরিক অর্থেই ঘটছে! একটি বেসরকারি সংগঠন সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, বাজার থেকে যে বোতলবন্দি জল কেনা হয়, তার দামের কোনও মাপকাঠি নেই। ক্রেতাদের ‘ঠকিয়ে’ বিপুল মুনাফা করে পানীয় জল প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি।

কী ভাবে? ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য, আইনজীবী অরিন্দম দাসের বক্তব্য, নামী সংস্থার ২০ লিটারের জলের জার ৮০ টাকায় পাওয়া যায়। অর্থাৎ, লিটার প্রতি চার টাকা। সেই জলই যখন এক লিটারের বোতলে ভরে বিক্রি করা হয়, তখন তার দাম ২০ টাকা। অর্থাৎ, পাঁচ গুণ বেশি। আবার সেই জলই যখন বিমানবন্দর কিংবা মাল্টিপ্লেক্সে বিক্রি হয়, তখন তার দাম হয়ে যায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এ সব জায়গায় কখনও কখনও ৫০০ মিলিলিটারের বোতলও ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়।

এ বিষয়ে ক্রেতা-সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন। ভবিষ্যতে তাঁরাও মামলা করার কথা ভাবছেন। জল নিয়ে এমন ঘটনা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়।

দামের এই বিপুল তারতম্য কেন? অনুসন্ধান করতে গিয়ে অরিন্দমবাবুরা দেখেন, দামের এর কোনও নির্দিষ্ট যুক্তি নেই। সংস্থাগুলি ইচ্ছেমতো দাম হাঁকছে। পরিসংখ্যান বলছে, চার-পাঁচ বছর আগেও বোতলবন্দি পানীয় জলের বাৎসরিক ব্যবসা ছিল চার হাজার কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জলের সংস্থাকে আইনি চিঠি পাঠিয়েছে ওই সংগঠন। অরিন্দমবাবুর দাবি, কোনও সংস্থাই তার উত্তর পাঠায়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েকটি মন্ত্রকেও একই চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। কয়েকটি মন্ত্রক থেকে ইতিমধ্যেই ইতিবাচক উত্তর পেয়েছেন। গরমের ছুটির পরে সুপ্রিম কোর্টে ন্যায্য মূল্যে জলের দাবিতে একটি জনস্বার্থ মামলা করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি নামী পানীয় জল প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও উত্তর দিতে চায়নি। দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলের সহ-সভাপতি মনমোহন বাগরি বলেন, ‘‘এটা একেবারেই জল সংস্থাগুলির নিজস্ব বিষয়। তারাই এমআরপি-তে নেওয়া দামের ক্ষেত্রেও তারতম্য ঘটাচ্ছে, ফলে আমাদের কিছু করার নেই।’’

পশ্চিমবঙ্গ ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ‘ম্যাক্সিমাম রিটেল প্রাইস’ (এমআরপি) ঠিক করে সংস্থাই। বহু সময়েই তারা জলের কম্পোজিশন সামান্য বদলে দাম বাড়িয়ে দেয়। ‘সিলেক্টেড চ্যানেলগুলিতে’ সেই জল বিক্রি করা হয়। এই ‘সিলেক্টেড চ্যানেল’ শব্দটিতেই আপত্তি অরিন্দমবাবুর। তাঁর বক্তব্য, সিলেক্টেড চ্যানেলের নামে তথাকথিত অভিজাত জায়গাগুলিতে বেশি দামে একই জল বিক্রি করা হচ্ছে। রাজ্যগুলি জলের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিলেই তারা আর এই কাজটি করতে পারবে না। ইতিমধ্যেই দেশের কোনও কোনও রাজ্য এবং রেল এই ব্যবস্থা করেছে। রেলে কোনও সংস্থাই ১৫ টাকার বেশি দামে জল বিক্রি করতে পারে না।

Price Bottled Water Drinking Water Packaged Water Water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy