কেষ্টপুর খালের ধারে এ ভাবেই জমে আবর্জনা। — নিজস্ব চিত্র
একই পুর নিগম। ব্যবধান বলতে শুধু দুই পাড়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়া খাল। সেই খালের এক পাড় প্রশাসনের অবহেলায় কার্যত নরক। অথচ সৌন্দর্যায়নের কাজ হচ্ছে অন্য দিকে।
রাজারহাট-গোপালপুর এবং সল্টলেক মিলে তৈরি বিধাননগর পুর নিগম। রাজারহাট-গোপালপুর এলাকারই কেষ্টপুর খালের ধারে বহু পুরনো জায়গা রবীন্দ্রপল্লি। কেষ্টপুর খালের পাড় ধরে যে রাস্তা গিয়েছে, তার নাম বর্ণপরিচয় সরণি। সেখানে ৭ নম্বর এলাকায় খালের পাড় বর্তমানে জঞ্জাল ফেলার জায়গায় পরিণত হয়েছে। সাধারণ নাগরিকেরা তো বটেই। অভিযোগ, সকালে বিধাননগর পুর নিগমের সাফাইকর্মীরাও সেখানে আবর্জনা ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন। যা নিয়মিত ভাবে পুর নিগমের গাড়ি তুলছে না বলেই অভিযোগ।
খালের পাড় হলেও ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচলের ব্যস্ততা থাকে। কেষ্টপুর মিশন বাজার থেকে কেষ্টপুর ভিআইপি রোডের অটো ওই রাস্তা ধরে চলাচল করে। নিউ টাউন ও সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের কর্মীরা অনেকেই রবীন্দ্রপল্লিতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকেন। ফলত ওই রাস্তাটিই তাঁদের যাতায়াতের অন্যতম পথ। তুলনামূলক ভাবে খালি থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা সকাল-বিকেল খালের পাড়ে হাঁটতে বেরোন।
এই অবস্থায় তাঁদের অভিযোগ, ‘‘আবর্জনার দুর্গন্ধে নাকে চাপা দিয়ে ওই রাস্তায় হাঁটতে হচ্ছে। এমনকী হাওয়ায় দুর্গন্ধ গিয়ে ঢুকছে বাড়ির ভিতরেও। প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’
স্থানীয় মানুষের দাবি, দু’টি পুরসভা মিলে পুর নিগম তৈরি হলেও এখনও কেষ্টপুর, রবীন্দ্রপল্লির মতো জায়গার গুরুত্ব প্রশাসনের কাছে পুরনো রাজারহাটের মতোই। ঘটনার স্বপক্ষে তাঁদের যুক্তি, খালের অন্য পাড়ে বৈশাখী এলাকায় যখন পার্কের সৌন্দর্যায়ন চলছে, তখন রবীন্দ্রপল্লির ওই আবর্জনার সমস্যা বিধাননগর পুর নিগমের নজরে আসছে না। হেলদোল নেই সেচ দফতরেরও।
স্থানীয় মানুষ জানান, বর্ণপরিচয় সরণিটি ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে ভাগাভাগি করে রয়েছে। আবর্জনা থেকে যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তা স্বীকারও করেছেন দুই ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর অনুপম মণ্ডল ও বিকাশ নস্কর। তবে সমস্যার দায় নিতে রাজি নন কেউই। অনুপমবাবুর কথায়, ‘‘জায়গাটি আমার ওয়ার্ডে পড়ে না। তবে নিশ্চয় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’ বিকাশ পাল্টা বলছেন,‘‘ জায়গাটি আমার ওয়ার্ডে পড়ে না। অনুপমের জায়গা। তবে আমরা পুর নিগমকে সমস্যার কথা জানাব।’’
এ নিয়ে পুর নিগমের মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল ও নিকাশি) দেবাশিস জানাকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয় ৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। পুর নিগমকেও বলা হয়েছে। একটু সময় লাগছে। জঞ্জাল যাতে ওই জায়গায় পড়ে না থাকে, দ্রুত তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy