কান ফাটানো আওয়াজে টেকাই দায়। সঙ্গে গতিও এতটাই বেপরোয়া যে, না থাকে ‘স্পিড লিমিট’ (গতির সর্বোচ্চ সীমা) মানার বালাই, না থাকে ট্র্যাফিক সিগন্যাল মানার দায়। রাত বাড়লেই বেপরোয়া গতিতে ‘ঝুঁকির দৌড়ে’ একে অপরকে টেক্কা দিতে গিয়ে কোথাও রাস্তার ধারের দোকানে গাড়ি ঢুকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। কোথাও আবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে মাঝরাস্তায়!
দিন কয়েক আগেই সল্টলেকে এমন দুর্ঘটনার পরে স্থানীয়দের দাবি ছিল, নিজেদের মধ্যে ‘রেস’ করতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়েছে একটি গাড়ি। পুলিশ অবশ্য তদন্তে জানিয়েছিল, যান্ত্রিক গোলযোগের জেরে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়ে। যদিও স্থানীয়দের দাবিই আরও জোর পায় কারণ, ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগেই অন্য দু’টি গাড়ি এসে উল্টে যাওয়া গাড়ির যাত্রীদের উদ্ধার করে নিয়ে চলে যায়। সেখানেই প্রশ্ন, এত অল্প সময়ের মধ্যে কী করে দু’টি গাড়ি পৌঁছল? জখমেরা নিশ্চয়ই পূর্বপরিচিত। না হলে পুলিশ আসার আগেই কেন গাড়ি দু’টি তাঁদের তুলে নেবে?
সল্টলেক, নিউ টাউন, কসবা, পাটুলি, আলিপুর বা ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশেরই দাবি, এমন ঘটনা নতুন নয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দামি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়া চালকদের দাপট আগে প্রায়ই চোখে পড়ত। তবে বছর দুয়েক আগে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে কলকাতার ব্যবসায়ী শিবাজী রায়ের ফেরারি গাড়ির দুর্ঘটনার পরে পরিস্থিতি কিছুটা বদলায়। সে দিন অত্যন্ত দ্রুত গতিতে থাকা শিবাজীর ফেরারি ডোমজুড়ের পাকুড়িয়া সেতুর গার্ড রেলে সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যবসায়ীর। তবে পাশের আসনে বসা তাঁর বন্ধুর মেয়ে একাধিক অস্ত্রোপচারের পরে বেঁচে ফেরেন। এর পরেই গতি নিয়ন্ত্রণে শহর জুড়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। বহু রাস্তায় নতুন করে বসানো হয় গতির ঊর্ধ্বসীমার বোর্ড। দু’বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এখন সেই সব বোর্ড কার্যত অগোচরে পড়ে থাকছে বলে অভিযোগ। গত কয়েক মাস ধরে নৈশ কার্ফু চললেও এমন চালকদের হুঁশ হয় না বলেই দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।