অন্য বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে নামার আগে বিমান যখন রানওয়ের ঠিক উপরে আসে, তখন রানওয়ে থেকে তার উচ্চতা থাকে ৫০ ফুট। কিন্তু যশোর রোডের দিকে প্রধান রানওয়ের উপরে ওই উচ্চতায় আসতে পারে না বিমান। এয়ার ইন্ডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন সুমন্ত রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘অত নীচ দিয়ে নামতে গেলে একটি বাধা চিমনি। দুই, নীচে একের পর এক রেস্তরাঁ এবং পাখির উপদ্রব। তাই অত নীচ দিয়ে আসা সম্ভব নয়।”
ফলে, কলকাতা বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে প্রধান রানওয়ের দিকে নামার সময়ে ১৪০০ ফুট এলাকা ছেড়ে হিসেব কষা শুরু হয়। একে বিমান পরিবহণের ভাষায় বলে ‘ডিসপ্লেসড থ্রেশহোল্ড’। ওই ১৪০০ ফুট পেরিয়ে এসে রানওয়ে শুরু হচ্ছে বলে কাল্পনিক ভাবে ধরে নেওয়া হয়। ১৪০০ ফুট পরে রানওয়ের মাথার উপরে বিমানের উচ্চতা হয় ৫০ ফুট। তখন আরও ১৩০০ ফুট ছাড়িয়ে সে টাচডাউন পয়েন্ট পায় এবং সেখান থেকে আরও এক হাজার ফুটের মধ্যে তাকে নেমে আসতে হয়। সুমন্তবাবুর কথায়, “যেহেতু কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে অনেক বড়, ওই ১৪০০ ফুট ছাড়লেও আরও ১০ হাজার ফুট পাওয়া যায়। তাই পাইলটদের বিশেষ সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এই কারণেই যখন যশোর রোডে মাটির উপর দিয়ে মেট্রো সম্প্রসারণের কথা ওঠে, তখন আপত্তি করেছিলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। একে তো চিমনি এবং গাড়ির জন্য কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় নামতে পারে না বিমান। তার উপরে মাথার উপর দিয়ে মেট্রো রেলের লাইন পাতলে বিমানের উচ্চতা আরও বাড়াতে হবে। বিমানবন্দরের পাঁচিলের গায়ে অত উঁচুতে মেট্রোর লাইন গেলে পাইলটকে নামার সময়ে আরও উপর দিয়ে উড়ে এসে নামতে হবে। ফলে ডিসপ্লেসড থ্রেশহোল্ড ১৪০০ ফুটের অনেক বেশি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে রানওয়েতে নামার জন্য জায়গা কমে যাবে। সেই কারণে আপত্তি জানিয়েছিলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। মেট্রো রেল সেই আপত্তি মেনে ওই এলাকায় মাটির নীচ দিয়েই ট্রেন চলবে বলে ঠিক করেছে।