Advertisement
০৩ মে ২০২৪

পুরসভার গেটে কংগ্রেসের বিক্ষোভে লাঠি

সারদা, রোজভ্যালির মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার লাইসেন্স কেন নবীকরণ করে চলেছে পুর-প্রশাসন, তা নিয়ে সোমবার মেয়রের কাছে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন শ’খানেক কংগ্রেস সমর্থক। মেয়রকে ঘেরাও করার পরিকল্পনাও ছিল।

পুরভবনের গেটে পুলিশের লাঠির সামনে প্রকাশ উপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

পুরভবনের গেটে পুলিশের লাঠির সামনে প্রকাশ উপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:৩২
Share: Save:

মাসখানেকেই পাল্টে গেল ছবিটা।

সারদা, রোজভ্যালির মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার লাইসেন্স কেন নবীকরণ করে চলেছে পুর-প্রশাসন, তা নিয়ে সোমবার মেয়রের কাছে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন শ’খানেক কংগ্রেস সমর্থক। মেয়রকে ঘেরাও করার পরিকল্পনাও ছিল। তবে পুরসভার লাইসেন্স দফতরের বাইরে রাস্তাতেই তাঁদের রুখে দিল পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হন কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়-সহ আরও কয়েক জন। ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েক জনও জখম হন বলে দাবি এক পুলিশকর্তার।

মাসখানেক আগে এমনই এক বিক্ষোভের জেরে খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গাড়িও ঢুকতে পারেনি পুরসভায়। পুরভবনের বাইরে গাড়ি রেখে হেঁটেই দফতরে ঢুকতে হয়েছিল তাঁকে। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে লালবাজারের পদস্থ কর্তাদের ডেকে কর্তব্যরত পুলিশের সমালোচনা করেছিলেন মেয়র। তার পরেই পুলিশ সিদ্ধান্ত নেয়, পুরভবনের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভকারীদের ঘেঁষতে দেওয়া হবে না।

পুরসভার এক আমলার কথায়, এ বার আর ঝুঁকি নেয়নি পুর-প্রশাসন। এ দিন বিক্ষোভ রুখতে আগেভাগেই বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তার নজরদারির জন্য ওই এলাকায় হাজির ছিলেন খোদ কলকাতা পুলিশের ডি সি (সেন্ট্রাল) অখিলেশ চতুর্বেদী। সঙ্গে বাহিনীতে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পর্যায়ের দুই অফিসার-সহ জনা পঞ্চাশেক সশস্ত্র পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ৩৩ জন কংগ্রেসকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুরসভা সূত্রের খবর, দুপুর আড়াইটের একটু আগেই কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের মিছিলটি স্লোগান দিতে দিতে পুরভবনের প্রধান ফটকের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ আগেই পুরো জায়গাটি লোহার ব্যারিকেডে ঘিরে রেখেছিল। সমর্থকেরা তা সরিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করতেই পুলিশ লাঠি চালায়। তুমুল ধাক্কাধাক্কি চলে দু’পক্ষে।

কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশবাবুর অভিযোগ, ‘‘মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করতে গিয়েছিলাম। তাই লাঠি দিয়ে মারা হলো। পুলিশকে লেলিয়ে দেওয়া হল। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার পায়ে লাঠি মেরেছে পুলিশ।’’ তবে এ ভাবে তাঁদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলে জানান তিনি। যা শুনে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পাগলের প্রলাপ শোনার সময় নেই আমার। আরও অনেক কাজ রয়েছে।’’

প্রকাশবাবুর তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র-ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কাউন্সিলর জানিয়েছেন, টাকা জমা দিলে পুরসভার স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই লাইসেন্স নবীকরণ হয়ে যায়। আর টাকা জমা পড়লে পুরসভা লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করতে পারে না, যদি না পুলিশ বা আদালত থেকে কোনও নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশ আসে। কে অভিযুক্ত, কে নয় তা যাচাই করার ভার পুর-প্রশাসনের নয়। পুর প্রশাসনকে আইন মেনেই চলতে হয় বলে দাবি করেন ওই কাউন্সিলর।

প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য জানান, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ, মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আগামী কাল, বুধবার পুরসভার অধিবেশনেও প্রশ্ন তোলা হবে বলে জানান প্রকাশবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkata news congress congress agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE