Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ফি মকুব হওয়ায় প্রশ্ন বিসর্জনের খরচ নিয়ে

১৭টি ঘাটে বিসর্জনের জন্য কর্মীর ব্যবস্থা করা। সঙ্গে ক্রেন, বার্জ রয়েছে। ঘাট থেকে প্রতিমার কাঠামো তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য লরির ব্যবস্থাও করতে হয় পুরোদমে। 

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০১:১৪
Share: Save:

১৭টি ঘাটে বিসর্জনের জন্য কর্মীর ব্যবস্থা করা। সঙ্গে ক্রেন, বার্জ রয়েছে। ঘাট থেকে প্রতিমার কাঠামো তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য লরির ব্যবস্থাও করতে হয় পুরোদমে।আর এত কিছু করতে কলকাতা পুরসভার খরচ হয় দেড় কোটি টাকারও বেশি। এত দিন তবু পুজো অনুমোদনের ফি-বাবদ যে অর্থ পুর ভাঁড়ারে জমা হত, সেখান থেকে বিসর্জনের জন্য খরচ করা হত। কিন্তু চলতি বছরে রাজ্য সরকার পুরোপুরি সেই ফি মকুব করে দেওয়ায় পুর ভাঁড়ারে কতটা চাপ পড়বে, তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই পুর প্রশাসনের একাংশে আলোচনা শুরু হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বিসর্জনের জন্য কী ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ জমা দিতে বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। আজ, মঙ্গলবার সেই ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ জমা দেওয়ার কথা বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

শহরে বড়-মাঝারি মিলিয়ে দু’হাজারের মতো নথিভুক্ত পুজো রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তাদের একাংশ। পুজো করার জন্য কী কী নিয়ম পালন করতে হবে, পুরসভার তরফে তা নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে। ২০১০ সালে একটি ‘পুজো ম্যানুয়াল’ প্রকাশ করেছিল পুরসভা। সেখানে বলা হয়েছিল, পুজো অনুমোদনের ফি-বাবদ পুজোপিছু নেওয়া হবে আড়াই হাজার টাকা। অর্থাৎ, শুধু অনুমোদনের ফি-বাবদই পুরসভার ভাঁড়ারে আধ কোটি টাকা জমা হত। কিন্তু চলতি বছরে স্বাভাবিক ভাবেই সেই অর্থ জমা পড়বে না পুরসভায়। এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘এটা তো পুরসভার কোনও ব্যাপার নয়। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত। ফলে যা সিদ্ধান্ত, সে ভাবেই চলা হবে।’’

তবে পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিসর্জনের দিনগুলিতে ১৭টি ঘাটে কর্মী নিয়োগ করতেই খরচ হয় ৫০ লক্ষেরও বেশি। শুধুমাত্র নিমতলা ঘাটে ক্রেন ও বার্জের ব্যবস্থা করতে খরচ হয় আরও ১০ লক্ষ টাকা। লরি থাকে শ’খানেক। বড় ঘাটগুলিতে পে লোডার থাকে দশটির মতো। সব মিলিয়ে এক কোটি ৭৫ লক্ষের মতো খরচ হয় পুরসভার। তা-ও শুধু দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে। যদিও পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কালীপুজো বা জগদ্ধাত্রী পুজোতেও একই ব্যবস্থা থাকে।

সেই সঙ্গে প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, বিসর্জনের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য জাতীয় পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। গঙ্গা দূষণ ঠেকাতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে, তা নিয়ে বিস্তারিত রূপরেখা জমা দিতে বলেছে। এমনিতেই গঙ্গা দূষণ ঠেকাতে বিসর্জনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দিষ্ট বিধি-নিষেধ রয়েছে। সেগুলি যাতে মান্য করা হয়, সে ব্যাপারে কড়া নির্দেশ রয়েছে পরিবেশ আদালতের।

তবে পুজোর অনুমোদন ফি মকুব করা নিয়ে মিশ্র সুর শোনা গিয়েছে উদ্যোক্তাদের মধ্যে। একডালিয়া এভারগ্রিন পুজোর কোষাধ্যক্ষ স্বপন মহাপাত্র বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত তো ভালই। উদ্যোক্তাদের সুবিধাই হবে।’’ যদিও দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর উদ্যোক্তা সুদীপ্ত কুমারের সাফ কথা, ‘‘যে পুজোয় কয়েক লক্ষ, কোনও কোনও ক্ষেত্রে কোটি টাকাও খরচ হয়, সেখানে আড়াই হাজার টাকা দেওয়া কোনও ব্যাপার নয়। বরং সেটা বেড়ে যদি পাঁচ হাজার টাকাও হয়, তা হলেও কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তার পরিবর্তে পরিষেবা যদি ঠিক পাওয়া যায়, তাতে আপত্তি কোথায়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Durga Puja 2018 Fee Waiver Immersion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE