রুদ্ধ পথ। বৃহস্পতিবার, মৌলালিতে। — নিজস্ব চিত্র
কর্মসংস্থানের দাবিতে মিছিল স্তব্ধ করে দিল কর্মব্যস্ত শহরকে।
রাজপথের পুরোটা জুড়ে শ্লথ গতির মিছিল যদি এক পাশ ছেড়ে দিয়ে যেত, যান চলাচল কিছুটা হলেও স্বাভাবিক রাখা যেত? তৃণমূলের ২১ জুলাই মিছিলেও তো সে ভাবেই পথ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রশ্নের জবাবে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার যুক্তি, এ দিন মিছিলে যত লোক হবে বলে পুলিশের কাছে খবর ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি লোক এসেছিল। তাই, সেই মিছিল নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পুলিশের এই যুক্তি প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে, আগাম খবর পেতে কি তা হলে ব্যর্থ প্রশাসন? সদুত্তর নেই।
বৃহস্পতিবার কলেজ স্ট্রিট থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত বিভিন্ন বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের ওই মিছিল তো ছিলই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল মৌলালি মোড়ে অন্য একটি সংগঠনের পথ অবরোধ। এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল উত্তর ও মধ্য কলকাতা। ভুগতে হয়েছে দক্ষিণ কলকাতাকেও। সব মিলিয়ে ফের এক কর্মব্যস্ততার দিনে প্রায় ঘণ্টা তিনেক থমকে যায় শহর।
পুলিশ জানিয়েছে, মিছিলের জেরে থমকে গিয়েছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এস এন ব্যানার্জি রোড, বিধান সরণি। সঙ্গী ছিল বড়বাজারে পুজোর কেনাকাটার ভিড়। মিছিলের জেরে ধর্মতলার দক্ষিণে জওহরলাল নেহরু রোড এবং পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলও স্তব্ধ হয়ে পড়ে। গাড়ির ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সকেও।
পুলিশ জানিয়েছে, মিছিল কলেজ স্ট্রিট ছাড়ার পরপরই ফের বিকেলের দিকে ‘ফোরাম অব আরটিআই অ্যান্ড অ্যান্টি করাপশন’ নামে আরও এক সংগঠনের রাস্তা অবরোধে ফের অচল হয়ে পড়ে মৌলালি ও সংলগ্ন এলাকা। সিআইটি রোড, এজেসি বসু রোড, লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোডের গাড়িগুলি আটকে প়়ড়ে।
প্রশ্ন উঠেছে, রাস্তা জুড়ে এ ভাবে মিছিল চলার অনুমতি পুলিশ দিল কেন? রাস্তার এক পাশ দিয়ে মিছিল গেলে তো যান চলাচল কিছুটা গতি পায়। যেমন হয়েছে ২১শে জুলাইয়ের মতো বড় ব়়ড় মিছিলের ক্ষেত্রেও।
মিছিলে পুরোভাগে থাকা এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘আমরা পুলিশকে জানিয়েই মিছিল করেছিলাম। যানজট সামলানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা পুলিশেরই নেওয়া উচিত ছিল।’’
পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, বড়জোর হাজারখানেক লোক হতে পারে এই মিছিলে। কিন্তু পুলিশেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ দিন মিছিলে লোক হয়েছিল প্রায় ছ’হাজার। কলকাতার ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমারের অবশ্য দাবি, ‘‘যে কোনও মিছিল সামলানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকে। এ দিনের মিছিলেও যান চলাচলে খুব একটা সমস্যা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy