Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
Pulse Oximeter

দেদার বিকোচ্ছে পাল্‌স অক্সিমিটার, মান নিয়ে সংশয়

অক্সিমিটারের পাশাপাশি চাহিদা থাকলেও সব ওষুধের দোকানে মিলছে না থার্মোমিটারও।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০০:৫৭
Share: Save:

জামাকাপড় শুকোতে দেওয়ার ক্লিপের মতো দেখতে ছোট যন্ত্রটা এক সময়ে ব্যবহার করতেন শুধু চিকিৎসকেরা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় সকলেই বাড়িতে কিনে রাখছেন ওই পাল্‌স অক্সিমিটার। কিন্তু প্রশ্ন হল, যন্ত্রটির গুণগত মানের দিকে কি আদৌ নজর দিচ্ছেন কেউ? কিংবা ওই যন্ত্র ব্যবহারের যে সাধারণ কিছু নিয়ম রয়েছে, তা-ও কি সকলে জানেন?

Advertisement

চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘‘যন্ত্রটা কিনে আনলাম আর আঙুলে পরে নিলাম, তা কিন্তু নয়। সামান্য হলেও পাল্‌স অক্সিমিটার ব্যবহারে কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। না হলে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক না-ও আসতে পারে।’’ পাশাপাশি, যে হারে এখন ওই যন্ত্র বাজারে বিক্রি হচ্ছে তাতে সেটির গুণগত মান কতটা বজায় থাকছে তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরাও। তাঁদের মতে, যান্ত্রিক গোলমালে অক্সিজেনের মাত্রা ভুল দেখালে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই নামী ও পরিচিত সংস্থার অক্সিমিটারই ব্যবহার করা উচিত।

কিন্তু নামী ও পরিচিত সংস্থার অক্সিমিটার তেমন মিলছে না বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের। আর ক্রেতাদের অভিযোগ, পাওয়া গেলেও তার দাম বেশি। অগত্যা অধিকাংশই কম দামের অক্সিমিটার খুঁজছেন। শহরের পাইকারি ওষুধ বাজারের দোকানিরা জানাচ্ছেন, নামী সংস্থার পাল্‌স অক্সিমিটারের জোগান কম হওয়ায় বাজারে দেদার বিকোচ্ছে চিনের তৈরি অক্সিমিটার। এক দোকানির কথায়, ‘‘চিনে তৈরি অক্সিমিটারের দাম কম। তবে বিক্রির পরে আর কোনও নিশ্চয়তা নেই।’’

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অক্সিমিটার যন্ত্রটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম। আঙুলের ডগায় ধমনীতে যে রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে, একটি আলোর রশ্মির দ্বারা তা থেকে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করে এই যন্ত্র। তাই ব্যাটারির চার্জ কমে গেলেও রিডিংয়ে ভুল হতে পারে। সাধারণত, আঙুলে দেওয়ার পরে প্রথম ২-৩ সেকেন্ড অক্সিজেনের মাত্রা ওঠানামা করে। তবে সর্বাধিক তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কত, সেটা ফুটে ওঠে স্ক্রিনে। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানান, আঙুলের চামড়ার নীচে সবথেকে বেশি রক্তনালী থাকে। তাই অক্সিজেন মাপার যন্ত্রটি আঙুলে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত যে কোনও আঙুলে পাল্‌স অক্সিমিটার দেওয়া গেলেও সব চেয়ে বেশি কার্যকর মধ্যমা।

Advertisement

অরুণাংশুবাবু আরও জানান, তর্জনীতে রক্ত সঞ্চালন হয় একটি ধমনী (রেডিয়াল আর্টারি) দিয়ে। আবার অনামিকায় অন্য ধমনী (আলনা আর্টারি) দিয়ে রক্ত সঞ্চালন হয়। কিন্তু মধ্যমায় ওই দু’টি ধমনীরই রক্ত আসে এবং সব চেয়ে বেশি সঞ্চালিত হয়। তাই কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় মধ্যমাতেই অক্সিমিটার ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। স্নায়ুরোগ চিকিৎসক পরিমল ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আঙুলে যন্ত্রটি লাগানোর পরে হাত যেন নড়াচড়া না-হয়। কব্জিও ভাঁজ হবে না। খেয়াল রাখতে হবে, অক্সিজেনের মাত্রা মাপার সময়ে কোনও ভাবে যাতে আঙুলে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত না-ঘটে। আর নেলপলিশ থাকলেও রিডিংয়ে সমস্যা হতে পারে।’’

অক্সিমিটারের পাশাপাশি চাহিদা থাকলেও সব ওষুধের দোকানে মিলছে না থার্মোমিটারও। দোকানিদের দাবি, ডিজিটাল ও পারদ— অধিকাংশ থার্মোমিটারই চিনে তৈরি হয়। সে সব আমদানি ও বিপণনের দায়িত্বে রয়েছে একটি ভারতীয় সংস্থা। বেশির ভাগ চিনে তৈরি হওয়ায় ভারতের বাজারে থার্মোমিটারের জোগান কম। আর পাওয়া গেলেও তা দামের-দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, আগে পাইকারিতে যে টাকায় ওই থার্মোমিটার মিলত, এখন তার থেকে অন্তত ১৫-২০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। আবার অধিকাংশ মানুষ পারদ থার্মোমিটার পছন্দ করলেও সব দোকানে তা পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতাদের কথায়, ‘‘থার্মোমিটার কিনতেও হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। পারদ থার্মোমিটারের বাক্সে ১০৪ টাকা দাম ছাপা রয়েছে। সেই দামেই এখন কিনতে হচ্ছে!’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.