কলকাতার উপরেই নির্ভরশীল। তাই টালা-পলতা জলাধার থেকে রবিবার জল সরবরাহ বন্ধ থাকায় জলসঙ্কটে ভুগলেন সল্টলেকবাসী। তাঁদের অভিযোগ, জল বন্ধ থাকার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। তবু কেন আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হল না?
যদিও মহকুমাশাসক পবন কাডিয়ান ওই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘বিকেল থেকে জল চালু হয়েছে। তার আগে কিছুটা সমস্যা হলেও সেটাকে সঙ্কট বলা যায় না। কারণ তার মধ্যেও জল সরবরাহ করা হয়েছে।’’ বাসিন্দারা অবশ্য প্রশাসনের এই দাবি মানতে নারাজ। বিদ্যাসাগর আবাসনের বাসিন্দা তপনজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিনভর জল ছিল না। বিকেলে পুরসভা একটিমাত্র ট্যাঙ্কার পাঠায়। স্বভাবতই তাতে পুরো আবাসনে জলের চাহিদা মেটেনি।’’ বহু জায়গায় বাসিন্দাদের জল কিনতে হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রে খবর, সল্টলেকে দৈনিক ১০ মিলিয়ন গ্যালন জলের চাহিদা। তার মধ্যে টালা-পলতা থেকে দৈনন্দিন প্রায় সাড়ে ৭ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ হয়। বাকি আড়াই মিলিয়ন গ্যালন জল মাটির নীচ থেকে তোলা হয়।
এ দিন টালা-পলতা থেকে জলের সরবরাহ বন্ধ থাকায় সমস্যা বাড়ে। তার উপরে ভূগর্ভস্থ জল তুলেও সমস্যা মেটানো যায়নি বলে প্রশাসনের একাংশের দাবি। তবে বিভিন্ন জায়গায় জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হয়েছিল বলেও দাবি করেছে প্রশাসন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেক জুড়ে ৪২টি গভীর নলকূপ রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে একটা বড় অংশই খারাপ হয়ে রয়েছে। ফলে চালু থাকা গভীর নলকূপগুলি থেকে চাহিদার অর্ধেক জলও তোলা যায়নি। প্রাক্তন কাউন্সিলরদের একাংশের আরও অভিযোগ, পুরসভায় জল সরবরাহের কাজ করার জন্য কয়েকটি দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। সেই কারণেই এই সমস্যা বাড়ছে।
জলসঙ্কট নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের একটি সংগঠনের অন্যতম কর্তা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে যা হয়, তাই হয়েছে। আশা করব, পুর-নিগমের নির্বাচনের পরে নতুন বোর্ড সল্টলেকবাসীদের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।’’
প্রাক্তন সল্টলেক পুরবোর্ডের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের রাধানাথ চাঁদ বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে সল্টলেকে জল সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থায় জোর দেয়নি তৃণমূল পুরবোর্ড। পুরোটাই কলকাতার উপরে নির্ভরশীল। তারই ফল ভুগতে হচ্ছে সল্টলেকের বাসিন্দাদের।’’
সল্টলেকে বিজেপি-র এক নেতা অশোক সরকারের অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকার টাকা পাঠালেও কাজ করেনি প্রাক্তন তৃণমূল পুরবোর্ড। উল্টে কোটি কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে। জল সরবরাহও তার অন্যতম।’’
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, জলের সমস্যা তো নতুন নয়। কিন্তু এত দিনেও কেন জল সরবরাহে সল্টলেকে নিজস্ব কোনও ব্যবস্থা করা গেল না?
সামনেই পুরনির্বাচন। তাই প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি সল্টলেকে তৃণমূলের কোনও নেতা-নেত্রীই। যদিও এ দিনের জল সমস্যার জন্য প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শাসক দলের একাংশ।
প্রাক্তন তৃণমূল পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাসক দলের শীর্ষকর্তাদের একাংশের অবশ্য দাবি, বিকল্প জল সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। নিউ টাউনে সেই জল প্রকল্পের কাজ চলছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে সল্টলেকে জলের সমস্যা মিটে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy