ধর্মঘটের ছবি। বুধবার, সেক্টর ফাইভে। —নিজস্ব চিত্র।
আর পাঁচটা অফিসপাড়ার মতোই ধর্মঘটের চেনা চেহারায় ফিরে গেল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক সেক্টর ফাইভ।
বুধবার ১১টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটের দিনে শহরের সুনসান চেহারার সঙ্গে সেক্টর ফাইভের ছবির পার্থক্য নেই। বাম আমল থেকেই তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা শুরু হয়। বর্তমান সরকারের আমলেও তা বদলায়নি। ফলে বছর পাঁচেক ধরেই ধর্মঘটেও রোজকার মতো কর্মব্যস্ত ছবি দেখা যাচ্ছিল সেক্টর ফাইভ ও রাজারহাটের তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে।
এ বার তার বিচ্যুতি ঘটল।
এ দিন সেক্টর ফাইভের রাস্তা ছিল ফাঁকা। সরকারি–বেসরকারি বাস প্রায় ছিল না। গুটিকয়েক বাসে যাত্রীও কম। বন্ধ ছিল অধিকাংশ রেস্তোঁরা। দু’-একটি কফিশপ ও ধাবা ছাড়া প্রায় সব দোকানের ঝাঁপ বন্ধ। রাস্তার পাশের খাবার বা চায়ের দোকানও ঝাঁপ খোলেনি। শাসক দলের পতাকা লাগানো কিছু দোকান খোলা থাকলেও খদ্দের ছিল হাতেগোনা। সাধারণ দিনে এ সব দোকানে উপচে পড়ে ভিড়। অন্য দিন রাস্তার ধারে গাড়ি রাখার জায়গা মেলে না। এ দিন সমস্ত রাস্তার দু’ধার ফাঁকা।
অফিসগুলোর ভিতরে না ঢুকলে বোঝার উপায় নেই, গোটা তালুকে আদৌ কেউ আছেন। তবে কর্মী অন্য দিনের তুলনায় কম। অধিকাংশ অফিসের গড় হাজিরা ৫০ শতাংশের বেশি নয়। যে সব অফিসে বাড়ি থেকে কাজ করার সুবিধা রয়েছে, সেখানে হাজিরা আরও কম। তবে কল সেন্টারে হাজিরা ছিল ৭০ শতাংশের বেশি।
উইপ্রো, টিসিএস, কগনিজেন্ট ও আইবিএম-এর মতো সংস্থাগুলিতে নিত্যদিনের মতোই কাজ হয়েছে বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যে সব প্রকল্পের সময় বেঁধে দেওয়া নেই, সেখানে কর্মীরা আসেননি। পরিবর্তে শনিবার, ছুটির দিনে তাঁরা কাজ করবেন। এসডিএফ বিল্ডিং-সহ সেক্টর ফাইভের ছোট ও মাঝারি অফিসেও উপস্থিতির হার ছিল একই রকম কম।
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান নিরুপম চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, ধর্মঘটের দিনে কাজ ব্যাহত হয়নি। বড়, মাঝারি ও ছোট সংস্থা, সব জায়গাতেই অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছন্দে কাজ চলেছে বলে তাঁর দাবি। তবে একইসঙ্গে তিনি জানান, যে সব কর্মী ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁরা অনেকেই আসতে পারেননি। ফলে আশানুরূপ হাজিরা দেখা যায়নি।
অন্য দিকে, দোকানপাট বন্ধ থাকলেও কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্মীরা বাধার মুখে পড়েননি বলে দাবি করেছেন সেক্টর ফাইভ স্টেকহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কল্যাণ কর। তিনি জানান, এ দিন অধিকাংশ কর্মী সকাল সকাল পৌঁছে যান। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গণ্ডগোলের আশঙ্কায় দোকান বন্ধ রাখা হয়েছিল। কর্মী ছাড়াও এই তালুকে বিভিন্ন কাজে যাঁরা আসেন, যাতায়াতের দুর্ভোগের ভয়ে এ দিন তাঁরাও এ তল্লাটে আসেননি। তাই গোটা তালুকই ছিল সুনসান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy