Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

চলছে জল ‘চুরি’, হাওড়া জুড়ে সঙ্কট

গ্রীষ্মের শুরুতেই হাওড়া জুড়ে ফিরে এসেছে জলকষ্টের চেনা ছবি। এখনই জলের চাপ কমতে শুরু করেছে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পাইপলাইনে। পুরসভার অভিযোগ, এই প্রকল্পে প্রতি দিন গড়ে ৫৪-৫৫ মিলিয়ন গ্যালন জল উৎপাদন হলেও বহুতলগুলি ও বাসিন্দাদের একাংশ পাম্প চালিয়ে সরাসরি জল টেনে নিচ্ছে। তাই এই জলকষ্ট।

দীর্ঘ-প্রতীক্ষা। — নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘ-প্রতীক্ষা। — নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২৪
Share: Save:

গ্রীষ্মের শুরুতেই হাওড়া জুড়ে ফিরে এসেছে জলকষ্টের চেনা ছবি। এখনই জলের চাপ কমতে শুরু করেছে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পাইপলাইনে। পুরসভার অভিযোগ, এই প্রকল্পে প্রতি দিন গড়ে ৫৪-৫৫ মিলিয়ন গ্যালন জল উৎপাদন হলেও বহুতলগুলি ও বাসিন্দাদের একাংশ পাম্প চালিয়ে সরাসরি জল টেনে নিচ্ছে। তাই এই জলকষ্ট।

হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় ২৪টিতেই জলের চাপ কমে গিয়েছে। সব থেকে বেশি জলকষ্ট ১, ৭, ৮, ৯, ১৫ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়াও মধ্য হাওড়ার ১৮, ২১, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩২ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, কলে জল আসার আগেই দীর্ঘ লাইন পড়ছে।

বেলগাছিয়া এলাকার আট নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গরম পড়তেই কলের জল উবে গিয়েছে। পানীয় জল কিনে বা পুরসভার পাঠানো গাড়ি থেকে জল নিতে হচ্ছে। এখনই যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে গরমের বাকি দিনগুলি কি হবে এই নিয়ে আশঙ্কায় হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা। তাঁদের প্রশ্ন, এই পুরবোর্ডের আমলেই গত গ্রীষ্মেও জলকষ্ট হয়েছিল। এত দিনেও কেন সমস্যার সুরাহা হল না?

পুরসভার জল বিভাগের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘প্রতি গরমের মতো এ বারও বহুতলগুলি থেকে এবং বাসিন্দাদের একাংশ পাম্প চালিয়ে অবৈধ ভাবে জল টেনে নিচ্ছেন। ফলে দূরবর্তী এলাকায়, জলের লাইনের শেষ প্রান্তে গিয়ে (ডেড এ্যান্ড-এ) জল পৌঁছোচ্ছে না। ফলে এই জলকষ্ট।’’

শিল্পাঞ্চল বলে পরিচিত ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার পাইপ লাইনের সঙ্গে নর্দমার জল মিশে যাওয়ায় সেই জল এখন স্নান ও পানের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। এমনকী জলে পোকা ভাসতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, মাসখানেক ধরে পুরসভার গাড়ি জল সরবরাহ করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ব্রতেন দাস বলেন, ‘‘এলাকাটি মূলত শিল্পপ্রধান। পুরসভার পুরানো পাইপে ঢালাই ঘরের অ্যাসিড মিশ্রিত জলে পাইপ ফুটো হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে।’’

জল সঙ্কট মেটাতে গত বছর মেয়র রথীন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে টাক্সফোর্স। যার সদস্যদের কাজ ছিল জলসরবরাহ ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা নজরে রাখা। তবু কেন এই সমস্যা? মেয়র বলেন, ‘‘পদ্মপুকুরে জলের উৎপাদন ঠিকই রয়েছে। গ্রীষ্মে জলের চাহিদা বাড়ে। অবৈধ ভাবে জল পাম্প দিয়ে টেনে নেওয়ার এই সঙ্কট। এই প্রবণতা রুখতে এ বার পুরসভা বাড়ি বাড়ি সার্ভে করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Crisis howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE