Advertisement
০৬ মে ২০২৪

ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে, সাফাই মেট্রোর

মেট্রোয় চলাফেরা যখন কার্যত আতঙ্ক, অনিয়মিত পরিষেবায় নাজেহাল আর ভিড় ঠেলার যন্ত্রণায় যখন রীতিমতো হাঁসফাঁস শহরবাসী, কর্তৃপক্ষের তখন ব্যাখ্যা, এ হল ‘বাড়তি সুবিধে!’ কারণ তাঁদের হিসেবে, ট্রেনের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে।

যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা এসপ্ল্যানেড স্টেশন। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র

যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা এসপ্ল্যানেড স্টেশন। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৪
Share: Save:

মেট্রোয় চলাফেরা যখন কার্যত আতঙ্ক, অনিয়মিত পরিষেবায় নাজেহাল আর ভিড় ঠেলার যন্ত্রণায় যখন রীতিমতো হাঁসফাঁস শহরবাসী, কর্তৃপক্ষের তখন ব্যাখ্যা, এ হল ‘বাড়তি সুবিধে!’ কারণ তাঁদের হিসেবে, ট্রেনের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে।

কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীদের সুবিধের কথা ভেবেই বাড়ানো হয়েছে ট্রেনের সংখ্যা। হয়তো তাই পরপর বেশ ক’টা ট্রেন না চালাতে পারলেও তা ঘোষণা করার প্রয়োজন পর্যন্ত বোধ করেননি তাঁরা। কেন? তারও কোনও সদুত্তর নেই তাঁদের কাছে।

কর্তৃপক্ষ শুধু জানিয়েছেন, ক’দিন হল ২৭৪টির জায়গায় ৩০০টি ট্রেন চালানো হচ্ছে সারা দিনে। তবে মেট্রো সূত্রে জানা যাচ্ছে, নতুন রেক একটিও আসেনি। হাতে পুরনো ১৮টি রেক, যার মধ্যে ৮টি আবার সেই মান্ধাতা আমলের। সে ক’টির ভরসাতেই পরিষেবা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত।

ফল যা হওয়ার, তা-ই হয়েছে। মেট্রোকর্মীদের একাংশই জানাচ্ছেন, ওই সব পুরনো রেক বারবার ঘুরপাক খেতে খেতে মাঝেমধ্যেই খারাপ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে। তাতেই ঘটছে বিপত্তি। গত ক’দিনে বেশ ঝঞ্ঝাটে পড়েছেন যাত্রীরা। মাঝেমধ্যেই তিনটি ট্রেনের সময় পেরিয়ে স্টেশনে এসেছে একটি ট্রেন। তিনটি ট্রেনের ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি করে নামা-ওঠার সময়ে আহত হয়েছেন বহু যাত্রী। শুক্রবার সকাল থেকে সমস্যা আরও বড় আকার নেয়। দু’-দু’বার আটকেই যায় ট্রেন। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

যাত্রীদের বক্তব্য, এই দুর্ভোগ কর্তৃপক্ষ নিজেই ডেকে এনেছেন। রেক যদি না-ই বাড়ল, তবে আচমকা ট্রেন বাড়ানো হল কেন? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। উত্তরে মেট্রোকর্তাদের যুক্তি, হাতে যে সংখ্যক রেক রয়েছে, তা দিয়েই সময় সারণি বদলে যাত্রীদের সুবিধে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। নতুন ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে দু’-এক দিন সামান্য গোলমাল হতে পারে।

মেট্রো সূত্রের খবর, আগামী রবিবারও মেট্রো চালু করার সময় বদলানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাধারণত রবিবার ট্রেন চালু হয় সকাল ১০টা থেকে। কিন্তু আগামী রবিবার মেট্রো চালু হবে ভোর ৬-৪৫ মিনিট থেকে। কেন এই পরিবর্তন? মেট্রোর কর্তারা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পরিষেবা চালাতে গিয়ে যে সময় সারণি পাল্টাতে হচ্ছে, এটাও তারই জের। তবে যদি ওই সময়ে যাত্রী হয়, তবেই ওই সময় মেনে মেট্রো পরিষেবা চালু করা হবে আগামী সব রবিবারে।

কিন্তু দু’-এক দিন যাত্রীরা যে অসুবিধায় পড়তে পারেন, তা আগাম জানানো হল না কেন? মেট্রোকর্তাদের কাছে এর অবশ্য কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। একটি সূত্রের খবর, মেট্রোর দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। ফলে কোথায় কী ঘটছে, অনেক সময়েই প্রশাসনিক কর্তারা তা জানতে পারেন না। এ দিনও তেমনই হয়েছে। এমনকী, ট্রেন যে অনিয়মিত চলছে, সে কথা যাত্রীরাও যাতে বুঝতে না পারেন। তাই প্ল্যাটফর্মের ডিজিটাল ঘড়িগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বহু স্টেশনে।

মেট্রোকর্মীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, বেশির ভাগ কর্তাই কয়েক দিন ধরে ব্যস্ত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত’-এর কর্মসূচি নিয়ে। মেট্রো রেলেও এখন ওই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে সাফাই অভিযান চালানো হচ্ছে। যদিও মেট্রোকর্তারা দাবি করছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই সমস্যা মিটে যাবে। আর এ দিন যা হয়েছে, সেটা যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়া আর কিছুই নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Metro Passenge Metro authority
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE