বছরখানেক আগেও কলকাতায় মাসে গড়ে একটি স্পোর্টস কার বিক্রি হত। এখন দু’টি, কখনও সখনও তিনটিও বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কোথায় চলবে সেই সব গাড়ি? কত গতিতে? রবিবার ডোমজুড়ে ফেরারির দুর্ঘটনা তুলে দিয়েছে এমনই কিছু প্রশ্ন।
অ্যাম্বাসাডরের আঁতুড়ঘর পশ্চিমবঙ্গে মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, অডি-র মতো বিলাসবহুল গাড়ির পাশাপাশি পোর্শে, ফেরারি, ল্যাম্বরগিনির মতো স্পোর্টস কার-ও ঠাঁই পাচ্ছে বিত্তবানদের গ্যারাজে। মাঝেমধ্যেই শহর বা শহরতলিতে যাদের দেখা যায় বিদ্যুৎগতিতে ছুটে যেতে। এই ধরনের গাড়ি বিলাসবহুল জীবনেরও প্রতীক। গ্যারাজে ফেরারি বা ল্যাম্বরগিনি থাকা মানে গৃহকর্তার পক্ষে তা শ্লাঘার বিষয়।
ছুটির দিনে বা গভীর রাতে এই ধরনের গাড়ি নিয়ে হাইওয়েতে নেমে পড়েন অনেকেই। যদিও তাঁদের সকলের ওই গাড়ি চালানোর মতো প্রশিক্ষণ থাকে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রবিবারের দুর্ঘটনা গতির কারণেই ঘটেছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন এ রাজ্যের বিভিন্ন মোটর র্যালিস্টও। তবে এ ধরনের দ্রুত গতির গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখার কথা বলছেন সুজিত রায়, ভরত পারেখ, দেবর্ষিসাধন বসুর মতো দীর্ঘ দিন গাড়ির র্যালিতে যুক্ত ব্যক্তিরা।
তাঁদের বক্তব্য, এ দেশের হাইওয়ে সব সময়ে জোরে গাড়ি চালানোর জন্য নিরাপদ নয়। কারণ, বিদেশের মতো ভারতের অধিকাংশ জায়গাতেই জাতীয় সড়কের দু’ধারে ‘ফেন্সিং’ বা বেড়া নেই। ফলে রাস্তায় হঠাৎ সাইকেল, স্থানীয় লোকজন বা গাড়ি ঢুকে পড়ে। লেন ভেঙে এক দিক থেকে অন্য দিকে গাড়ি ঢুকে আসায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। তাই প্রশাসনের উচিত এ সবের সুরাহা করা।
দেবর্ষিবাবুর পরামর্শ, গতির নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি, রাস্তার অবস্থা ও গাড়ি নিয়ন্ত্রণে রেখে চালাতে নিজের দক্ষতার কথাও মাথায় রাখতে হবে চালককে। তাঁদের মতে, গাড়ি চালানোর সময়ে খালি চোখে যতটা দূর পর্যন্ত দেখা যায়, ততটা ফাঁকা না থাকলে বেশি গতি তোলা উচিত নয়।
বেঙ্গল মোটর স্পোর্টস ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজিতবাবুর মতে, গাড়ি চালানোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ঠিক সময়ে গাড়ি থামানো। দ্রুত গতির স্পোর্টস কারের ক্ষেত্রে তা আরও জরুরি। ১৯৮৫ সালে কর্নাটক ও হিমালয়ান র্যালিতে স্পোর্টস কারে ভরতবাবুর সঙ্গী সুজিতবাবু জানাচ্ছেন, বম্বে রোড বা সল্টলেকে রাস্তা ফাঁকা থাকলে বা রাতের দিকে অনুশীলন করতেন তাঁরা। ভরতবাবুর অবশ্য দাবি, সজ্জন ও দক্ষ চালক শিবাজীবাবু অহেতুক জোরে গাড়ি চালাতেন না। ওই দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অন্য গাড়ির ভূমিকা ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার।
স্পোর্টস কারের জন্য চেন্নাইয়ে এবং গ্রেটার নয়ডায় ‘রেসিং সার্কিট’ চালু হয়েছে। সেখানে প্রতিযোগিতা হয়। অনেকের মতে, এমন পরিকাঠামো আরও গড়া প্রয়োজন। যাতে এই ধরনের গাড়ি সেখানে চলতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy