আচমকাই ভোলবদল আবহাওয়ায়!
বুধবার দুপুরে গরমে হাসফাঁস করেছিল মহানগর। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সেখানে মেঘলা আবহাওয়া, হিম-হিম ভাব। দুপুর গড়াতে রোদ উঠেছিল বটে, কিন্তু সে তেজ ছিল না। ফাগুনে এ দিন উত্তুরে হাওয়াও মিলছিল।
মাঘ শেষে বসন্ত আসার কথা। কিন্তু বসন্তের বদলে গত ক’দিনে যেন গরম এসে পড়েছিল। এ দিনের আবহাওয়া দেখে অনেকে বলছেন, হঠাৎ যেন ‘ব্যাক গিয়ারে’ চলতে শুরু করেছে ক্যালেন্ডার। কিন্তু কেন এমন হাওয়া বদল?
আবহবিদেরা জানান, এর পিছনে রয়েছে বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে থাকা একটি অক্ষরেখা। তার জেরে সাগর থেকে হু-হু করে জোলো
হাওয়া ঢুকছিল দক্ষিণবঙ্গে। সেই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়েই মেঘলা আকাশ তৈরি করেছিল। তবে অক্ষরেখা এ দিন থেকেই সরতে শুরু করেছে বলে জানাচ্ছেন আবহবিজ্ঞানীদের অনেকে। এ সব শুনেই ফের প্রমাদ গুণতে শুরু করেছেন অনেকে। বলছেন, তা হলে কি ফের হাওয়া গরম হবে কলকাতার?
আবহবিদেরা কিন্তু তেমনটা বলছেন না। তাঁদের মতে, অক্ষরেখা সরে যাওয়ার ফলে বাতাসে জোলো হাওয়া কমবে। যেটুকু উত্তুরে হাওয়া বয়ে আসছে, তাতে রাতের তাপমাত্রা নামবে। এক প্রবীণ আবহবিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা, আকাশ মেঘলা হলে দিনের বেলা রোদ মেলে না। ফলে তাপমাত্রা কম থাকে। কিন্তু রাতে মাটির তাপ বিকিরিত হয়ে আকাশে ফিরে যেতে পারে না। ফলে ভ্যাপসা গরম লাগে, তাপমাত্রাও বেশি থাকে। এ দিন ভোরেই যেমন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৭ ডিগ্রি বেশি। অক্ষরেখা সরে যাওয়ার ফলে মেঘ কেটে যাবে। তার ফলে এক ধাক্কায় রাতের তাপমাত্রা অনেকটাই নামবে। আজ, শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নেমে যেতে পারে।
এ বছর শীত মেলেনি বললেই চলে। মাঘ পেরোতে না-পেরোতেই কলকাতায় হাজির হয়েছিল গরম। বসন্তের বদলে অকাল গ্রীষ্মের আগমনে হতাশ হয়েছিলেন অনেকেই। মার্চের গোড়াতেই এ বার মাটি তেতেপুড়ে উঠবে কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছিল জল্পনা। কিন্তু আবহাওয়ার ভেল্কিতে সেই জল্পনায় কার্যত জল পড়ে গিয়েছে। কিন্তু এ-ও প্রশ্ন উঠেছে, এই বসন্ত থাকবে ক’দিন?
আবহাওয়ার ভেল্কিবাজি দেখে নিশ্চিত হতে পারছেন না কেউই। তবুও আবহবিদদের ধারণা, ফেব্রুয়ারির রাতগুলি হয়তো আর ততটা গরম হবে না।
স্বস্তি বলতে আপাতত সেটুকুই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy