Advertisement
E-Paper

পরীক্ষায় বসতে না পেরে তুলকালাম দেশবন্ধুতে, শিক্ষককে কিল-চড়

এ মাসেই বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। গত নভেম্বরে অভিভাবক এবং শিক্ষকদের বৈঠকে কলেজের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষায় বসতে গেলে ৬০ শতাংশ উপস্থিতি প্রয়োজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৯
ধুন্ধুমার: ছাত্রীদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের ধস্তাধস্তি।

ধুন্ধুমার: ছাত্রীদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের ধস্তাধস্তি।

উপস্থিতির হার কম থাকায় ৮৯ জন ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেননি কর্তৃপক্ষ। তা নিয়েই গোলমাল হল দেশবন্ধু কলেজ ফর গার্লস-এ। বৃহস্পতিবার সেখানে চেয়ার ভাঙা, পোস্টার ছেঁড়া থেকে গণ্ডগোল গড়াল পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পর্যন্ত। এমনকী, এক শিক্ষককে কিল-চড় মারা হয় বলেও অভিযোগ।

কলেজ সূত্রের খবর, এ মাসেই বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। গত নভেম্বরে অভিভাবক এবং শিক্ষকদের বৈঠকে কলেজের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষায় বসতে গেলে ৬০ শতাংশ উপস্থিতি প্রয়োজন। কিন্তু অধিকাংশ ছাত্রীরই উপস্থিতির হার তার চেয়ে কম। ফলে, পরীক্ষায় তাঁদের বসার অনুমতি দেওয়া হবে না। এর পরে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষা অনিতা চট্টোপাধ্যায় গুপ্ত। তার পরে ওই ছাত্রীদের জন্য বিশেষ ক্লাসেরও ব্যবস্থা করা হয়।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, ৬০ শতাংশ উপস্থিতি থাকলেও তাঁদের অন্যায় ভাবে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। পড়ুয়াদের পাল্টা অভিযোগ, আলাদা পাতায় তাঁদের হাজিরা নেওয়া হত। পরে সেটা রেজিস্টারে তোলা হত না। এক ছাত্রী বলেন, ‘‘নভেম্বর মাসে আমার উপস্থিতির হার ছিল ৬৩ শতাংশ। কিন্তু তালিকা বার হতে দেখি, আমার নাম নেই। এটা কী ভাবে সম্ভব?’’

যদিও কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছেন, শুধু স্পেশাল ক্লাসগুলির হাজিরা অন্য পাতায় নেওয়া হয়েছিল। বাকি ক্ষেত্রে রেজিস্টার খাতাতেই নিয়ম মাফিক হাজিরার রেকর্ড রাখা হত। তা ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজিরা সংক্রান্ত নিয়ম আগেই জানানো হয়েছিল। তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।

পুলিশ প্রহরায় বার করে আনা হচ্ছে অধ্যক্ষা অনিতা চট্টোপাধ্যায় গুপ্তকে। বৃহস্পতিবার, দেশবন্ধু কলেজে।

পড়ুয়াদের দাবি, প্রায় এক মাস ধরে এই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করা হচ্ছিল। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কথা বলতেই রাজি হননি কর্তৃপক্ষ। তাই এ দিন দুপুর থেকে ওই জনা পঞ্চাশ ছাত্রী কলেজে জমায়েত শুরু করেন। সন্ধ্যার দিকে ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ে। কলেজ চত্বরে রাখা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় নোটিস বোর্ডে টাঙানো সমস্ত বিজ্ঞপ্তিও। কিন্তু তাতেও কর্তৃপক্ষ পিছু না হঠায় গোলমাল বাড়ে। খবর যায় পুলিশে।

এর পরে সাড়ে ছ’টা নাগাদ শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা কলেজের বাইরে বেরোতে গেলেই তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁদের নিরাপত্তা দিয়ে বাইরে বার করে আনার সময়ে ছাত্রীদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। তার জেরে কয়েক জন ছাত্রী মাটিতে পড়ে যান। বাণিজ্য বিভাগের প্রধান ওমপ্রকাশ চৌধুরীকে কিল-ঘুষি মারা হয় বলেও অভিযোগ। যদিও পড়ুয়াদের দাবি, তাঁদের টানাহেঁচড়া করা হয়েছে। এর পরে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের গাড়িতে তুলতে গেলেও শুরু হয় বিক্ষোভ। অভিযোগ, গাড়ির উপরে চড়-লাথি মারেন ছাত্রীদের একাংশ। যদিও পুলিশ সেই গাড়িটিকে নিরাপদে ঘটনাস্থল থেকে বার করে দেয়।

এর পরে সাড়ে সাতটা নাগাদ পুলিশের গাড়িতে বেরিয়ে যান অধ্যক্ষা এবং পরিচালন সমিতির কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের মনোনীত সদস্য নবনীতা চট্টোপাধ্যায়। অধ্যক্ষা অনিতাদেবী বলেন, ‘‘শিক্ষার উৎকর্ষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী চেষ্টা করছেন। তাঁরা হাজিরার বিষয়টির উপরে বারবার জোর দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়েরও এই নিয়ম রয়েছে। সেটা মানতে আমরা বাধ্য। নিয়ম মাফিক সমস্ত কিছু করা হয়েছে।’’ যদিও ছাত্রীরা পরীক্ষায় বসার দাবি জানিয়ে যেতে থাকেন।

ছবি: সুমন বল্লভ

Students agitation Deshbandhu College for Girls
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy