ঢাক-ঢোল পিটিয়ে শুরু হয়েছিল কর্মসূচি। মোড়ে মোড়ে পড়েছিল পোস্টার। তার মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে প্লাস্টিক মুক্ত হয়ে উঠছিল কেষ্টপুর অঞ্চল। কিন্তু মাসখানেক যেতে না যেতেই বিধাননগর পুরসভার কেষ্টপুর অঞ্চলে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় বড়সড় খামতি দেখা দিতে শুরু করেছে। ফলে আবার ফিরে আসছে প্লাস্টিক।
পুরসভা পোস্টার দেওয়ার পরে সব দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের বলা হয়েছিল, বাড়ি থেকে ব্যাগ না আনলে যেন ক্রেতাদের জিনিস দেওয়া না হয়। বিক্রেতারাও কাগজের ব্যাগ রাখতে শুরু করেছিলেন। কেউ খালি হাতে এলে এক বা দু’টাকা বেশি নিয়ে সেই কাগজের ব্যাগে জিনিস দেওয়ায়ও শুরু হয়েছিল বেশ কয়েকটি দোকানে। বিধাননগর পুরসভার এই প্লাস্টিক-বিধি সাধারণ বাসিন্দাদের বড় অংশের সমর্থনও পেয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, পুর প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাবে কেষ্টপুরে সেই উদ্যোগে এখন ভাটার টান।
কেষ্টপুর মেন রোডের উপরে ব্যস্ত ঘোষপাড়া মোড়। মুখেই বেশ কিছু আনাজের দোকান। এ ছাড়াও রয়েছে ডিমের দোকান, আলু বিক্রির দোকান। আছে মুদিখানাও। কয়েক মাস আগে এখানেই বড় করে প্লাস্টিক-বিধি সংক্রান্ত হোর্ডিং পড়েছিল। তাতে স্পষ্ট করে বলা ছিল, ৪০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না। সেই মতো ব্যবস্থা নিয়েছিলেন বিক্রেতারা। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই ফিরে এসেছে পুরনো ছবি। একই ছবি কেষ্টপুর মিশন বাজারেও। শুধু এই দু’টি জায়গাই নয়, বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত কেষ্টপুরের বহু জায়গাতেও ফিরে এসেছে ৪০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক।
কেন এমন হল? বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, তাঁরা প্লাস্টিক-বিধি মেনে চলার পক্ষে। পুরসভার উদ্যোগকে স্বাগতও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, পুরসভা সে ভাবে বিষয়টি নিয়ে জোর না দেওয়ায় বিভিন্ন বাজার-দোকানে ৪০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিকেই জিনিস বিক্রি করা হচ্ছে।
যদিও বিষ এখনও সর্বত্র ছড়ায়নি। অনেক জায়গাতেই দেখা গিয়েছে সচেতনতার ছবি। যেমন কেষ্টপুর মেন রোড ও ভিআইপি রোডের মো়ড়ে কয়েকটি মাছের দোকান রয়েছে। সেখানে কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশমতো প্যাকেটেই জিনিস দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের। রবীন্দ্রপল্লি বাজারেও কম-বেশি মানা হচ্ছে প্লাস্টিক বিধি। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা জানালেন, স্থানীয় কাউন্সিলরেরা সক্রিয় থাকায় এই অঞ্চলে প্লাস্টিক-বিধি মেনেই চলছেন তাঁরা। তবে তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধ না হলে সমস্যা মিটবে না।
এ ব্যাপারে বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রকিমা বিবি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। ৪০ মাইক্রনের কম প্লাস্টিক বর্জনের উপরে জোর দেওয়া হবে। কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে।’’ বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘লাগাতার প্রচারের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোই এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায়। আমরা সেই কাজেই সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy