প্রতীকী ছবি।
বেহালা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করল রাজ্য স্কুলশিক্ষা দফতর।
অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরে স্কুলে রয়ে গিয়েছে অসম্পূর্ণ পরিচালন সমিতি। স্কুলে ভর্তির জন্য কয়েক হাজার টাকা নেওয়া এবং শৌচাগার খাতে বরাদ্দ অর্থ খরচ নিয়ে অস্বচ্ছতারও অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। খোদ শিক্ষামন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের একটি স্কুলে কী ভাবে এই অব্যবস্থা চলছে তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। বেহালা হাই স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই তড়িঘড়ি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করল স্কুলশিক্ষা দফতর। দফতরের এক কর্তা জানান, তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে। তার পরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ওই স্কুল সম্পর্কিত যাবতীয় অভিযোগই উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও পরিচালন সমিতিতে দু’জন শিক্ষানুরাগী থাকা বাধ্যতামূলক। স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে দু’জন শিক্ষানুরাগীকে মনোনীতও করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, এক জন স্বেচ্ছায় সমিতিতে আসেননি। অন্য জনকে কমিটির কোনও বৈঠকেই ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকী কমিটিতে যোগ দিতে তাঁকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সমিতির সম্পাদক তথা প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেরার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: তর্ক থাক, বঙ্গে পৃথক পথ খুঁজছে সিপিএম
শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্কুলে ভর্তির সময়ে অতিরিক্ত টাকা (২৮০-র বেশি) নেওয়ার কথা নয়। সেখানে কয়েক হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে এই স্কুলে। পরিচালন সমিতিকে অসম্পূর্ণ রেখে কী ভাবে বরাদ্দ অর্থ খরচ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন করতেই বিড়ম্বনায় পড়ে যায় স্কুল। কর্তৃপক্ষের সাফাই, পরিচালন সমিতি অসম্পূর্ণ হলেও বরাদ্দ অর্থ খরচ করার কোনও আইনি বাধা নেই। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আইনি বাধা না থাকলেও নীতিগত বাধা আছে অবশ্যই।’’ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কয়েক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে বলে স্কুলশিক্ষা দফতরে অভিযোগও জমা পড়েছে।
মূলত স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমে গিয়েছে বলে জানান বিকাশ ভবনের এক কর্তা। তিনি জানান, কয়েক বছর আগে ওই স্কুলেরই এক শিক্ষিকাকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে। সে সময় মহিলা কমিশন পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায়। প্রধান শিক্ষককে শাস্তির বিধান দেওয়া হলেও তা কার্যকর করা হয়নি। এ বার তদন্ত কমিটি ফের তা খতিয়ে দেখবে বলে সূত্রের খবর।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেবাশিসবাবু। তিনি জানান, সম্প্রতি স্কুলশিক্ষা দফতর স্কুলে ভর্তির সময়ে যে টাকার কথা উল্লেখ করেছে সেটা সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই স্কুল সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত তাই সে নিয়ম এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। অসম্পূর্ণ পরিচালন সমিতির বিষয়ে তিনি জানান, যে শিক্ষানুরাগীকে মনোনীত করা হয়েছিল তাঁকে আসতে বাধা দেওয়া হয়নি। তিনি নিজেই আসেননি। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ হয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের অনুমোদন নিয়েই। প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘সব অভিযোগ মিথ্যে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই অভিযোগ আনা হচ্ছে। তদন্ত হলেই সব কিছু পরিষ্কার হবে।’’ যদিও স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেই কেন এত অভিযোগ উঠছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষামন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy